আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
ঈদুল আযহার সাধারণ তাকবীর সম্পর্কে জানতে চাই। প্রত্যেক নামাযের শেষে যে তাকবীর দেয়া হয় সেটা কি সাধারণ তাকবীরের মধ্যে পড়বে; নাকি নয়? এই তাকবীর দেয়া কি সুন্নত; নাকি মুস্তাহাব; নাকি বিদাত?
আলহামদু লিল্লাহ।.
ঈদুল আযহার তাকবীর যিলহজ্জ মাসের শুরু থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত দেয়া শরয়ি বিধি। যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে। এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহ্র নাম স্মরণ করতে পারে”[সূরা হজ্জ, আয়াত: ২৮] ‘নির্দিষ্ট দিনগুলো’ হচ্ছে- যিলহজ্জের দশদিন। এবং যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা বলেন: : “আর নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনে আল্লাহকে স্মরণ কর...”[সূরা বাকারা, আয়াত: ২০৩] এগুলো হচ্ছে- তাশরিকের দিন। এবং যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে- পানাহার ও আল্লাহ্কে স্মরণ করার দিন।”[সহিহ মুসলিম। আর ইমাম বুখারী তাঁর সহিহ গ্রন্থে ইবনে উমর (রাঃ) ও আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে সনদবিহীন (মুয়াল্লাক) আমল উল্লেখ করেছেন যে, “তাঁরা দুইজন যিলহজ্জের দশদিন বাজারে গিয়ে তাকবীর দিতেন। তাদের তাকবীর ধরে লোকেরাও তাকবীর দিত”। উমর বিন খাত্তাব (রাঃ) ও তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ্ মীনার দিনগুলোতে মসজিদে ও তাবুতে তাকবীর দিতেন। তাঁরা উচ্চস্বরে তাকবীর দিতেন। এতে করে তাকবীরের শব্দে মীনা প্রকম্পিত হয়ে উঠত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও একদল সাহাবীর আমল বর্ণিত আছে যে, তাঁরা আরাফার দিন ফজরের নামাযের পর থেকে ১৩ ই যিলহজ্জ আসরের নামায পর্যন্ত পাঁচওয়াক্ত নামাযের শেষে তাকবীর দিতেন। এটি হাজি-নন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পক্ষান্তরে, হাজীসাহেব ইহরাম করার পর থেকে ঈদের দিন জমরাতে আকাবাতে কংকর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত তালবিয়া পড়ায় মশগুল থাকবেন। এরপর তাকবীর দেয়ায় মশগুল হবেন। উল্লেখিত জমরাতে প্রথম কংকরটি নিক্ষেপ করার সময় থেকে তিনি তাকবীর দেয়া শুরু করবেন। যদি তাকবীর বলার সাথে তালবিয়াও বলেন তাতে কোন অসুবিধা নেই। যেহেতু আনাস (রাঃ) এর উক্তি হচ্ছে: “আরাফার দিন কেউ তালবিয়া দিত; আর কেউ তাকবীর দিত; কাউকে বারণ করা হত না”।[সহিহ বুখারী] তবে, উল্লেখিত দিনগুলোতে মুহরিম ব্যক্তির জন্য তালবিয়া পড়া উত্তম। আর হালাল ব্যক্তির জন্য তাকবীর বলা উত্তম।
এ আলোচনার ভিত্তিতে জানা যায় যে, আলেমদের বিশুদ্ধ মতানুযায়ী সাধারণ তাকবীর ও বিশেষ তাকবীর যিলহজ্জের পাঁচদিন একত্রিত হয়ে যায়। এ পাঁচদিন হল: আরাফার দিন, ঈদের দিন ও তাশরিকের তিনদিন। আর যিলহজ্জের ৮ তারিখ থেকে ১ তারিখ পর্যন্ত সময়ে যে তাকবীর দেয়া হয় সেটা ইতিপূর্বে উল্লেখিত আয়াত ও আছার এর ভিত্তিতে সাধারণ তাকবীর; বিশেষ তাকবীর নয়। মুসনাদে আহমাদ গ্রন্থে ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “আল্লাহর কাছে এ দশদিনের চেয়ে অধিক মহান ও আমল করার জন্য অধিক প্রিয় আর কোন দিন নেই। সুতরাং তোমরা এ দিনগুলোতে বেশি বেশি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার ও আলহামদুলিল্লাহ পড়” কিংবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে বলেছেন।