আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
অনেক মানুষ বলে থাকেন: ইয়া মুহাম্মদ! শাফায়াত (চাই)। এ কথাটি কি শির্ক?
আলহামদু লিল্লাহ।.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে কিংবা অন্য কোন মৃতব্যক্তির কাছ থেকে শাফায়াত (সুপারিশ) তলব করা আলেমদের নিকট বড় শির্ক। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মারা যাওয়ার পরে তিনি এমন কিছুর মালিকানা রাখেন না। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “বলুন, সকল শাফায়াতের মালিক আল্লাহ্”।[সূরা যুমার, ৩৯: ৪৪]
সুতরাং শাফায়াতের মালিক আল্লাহ্ সুবহানাহু তাআলা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা অন্য কোন মৃতব্যক্তি মৃত্যুর পর শাফায়াতের ক্ষেত্রে কিংবা কোন দোয়ার ক্ষেত্রে কিংবা অন্য কোন বিষয়ে কোনরূপ হস্তক্ষেপের মালিক নন। কোন মানুষ যখন মারা যায় তখন তার আমল স্থগিত হয়ে যায়; কেবল তিনটি আমল ব্যতীত: সাদাকায়ে জারিয়া, এমন ইলম যা দ্বারা অন্যেরা উপকৃত হয় এবং এমন সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে। কেবল হাদিসে এতটুকু এসেছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে তাঁর উপর পেশকৃত দরুদ ও সালাম উপস্থাপন করা হয়। এ জন্য তিনি বলেছেন: “তোমরা আমার প্রতি দরুদ পড়। কেননা তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরুদ পাঠ আমাকে পৌঁছানো হয়।”
পক্ষান্তরে, যে হাদিসে এসেছে: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে (উম্মতের) আমলগুলো উপস্থাপন করা হয়। যে আমলগুলো তিনি ভালো পান সেগুলোর জন্য আল্লাহ্র প্রশংসা করেন। আর যে আমলগুলো মন্দ পান সেগুলোর ব্যাপারে তিনি আমাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেন” সে হাদিসটি দুর্বল; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহিহ সাব্যস্ত নয়। আর যদি সহিহ হত তবুও এ হাদিসে এমন কোন দলিল নাই যে, আমরা তাঁর থেকে শাফায়াত তলব করব।
সারকথা হল: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা অন্য কোন মৃতব্যক্তির কাছ থেকে শাফায়াত তলব করা নাজায়েয। শরয়ি কায়েদার আলোকে এটি বড় শির্ক। কেননা তা হচ্ছে মৃতব্যক্তির কাছ থেকে এমন কিছু তলব করা যা তার ক্ষমতায় নেই। অনুরূপভাবে তাঁর কাছে যদি রোগীর আরোগ্যদান তলব করা হয়, শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয়দান তলব করা হয় কিংবা বিপদগ্রস্তদের বিপদদূরীকরণ তলব করা হয় বা এ জাতীয় অন্য কিছু তলব করা হয়; এই সবগুলো বড় শির্কের প্রকার। এগুলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে তলব করা কিংবা আব্দুল কাদের জিলানীর কাছে তলব করা কিংবা অন্য কোন পীরের কাছে তলব করার কিংবা বাদাওয়ীর কাছে তলব করা কিংবা হুসাইন (রাঃ) এর তলব করার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। মৃতব্যক্তির কাছ থেকে তলব করা নাজায়েয এবং এটি শির্কের একটি প্রকার।
মৃতব্যক্তি মুসলিম হলে তার জন্য আল্লাহ্র রহমত চাইতে হবে, তার জন্য আল্লাহ্র ক্ষমা ও রহমতের দোয়া করতে হবে। আর কোন মুসলিম যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সালাম দিবে তখন তাঁর প্রতি দরুদ পড়বে ও তাঁর জন্য দোয়া করবে। পক্ষান্তরে, তাঁর থেকে সাহায্য চাওয়া কিংবা শাফায়াত চাওয়া কিংবা শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয় চাওয়া; এর কোনটি জায়েয নয়। এগুলো জাহেলী কর্ম ও মুশরিকদের কর্ম। একজন মুসলিমের কর্তব্য এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা ও সাবধান হওয়া।”[সমাপ্ত]
মাননীয় শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহঃ)।
ফাতাওয়া নুরুন আলাদ দারব (১/৩৯২)