আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
আমি আপনাদের ওয়েব সাইটে ‘মুসাফিরের নামায’ এবং ‘কোন দিকে ফিরে নামায আদায় করব’ সে সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তরগুলো পড়েছি। কিন্তু আমরা যখন সফর অবস্থায় থাকি এবং কিবলার দিক জানার জন্য কোন উপায়ন্তর না পাই, যেমনটি ঘটে আমেরিকাতে; এখানে কিবলার দিক জিজ্ঞেস করার জন্য কোন মুসলমান পাওয়া খুবই দুস্কর হয়ে যায়। আমি কম্পাস ব্যবহার করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু, তাতে সফল হইনি। এরপরও চেষ্টা করে যাচ্ছি। এমতাবস্থায়, ওয়াক্ত ছুটে যাওয়ার আশংকায় যে কোন দিকে ফিরে নামায আদায় করা জায়েয হবে কি এবং অন্য সময় পুনরায় নামাযটা আদায় করে নিব? আমরা জানি যে, আল্লাহ তাআলা গোটা পৃথিবীকে সেজদাস্থল বানিয়েছেন?
আলহামদু লিল্লাহ।.
নামাযে কিবলামুখী হওয়া নামায শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত— এ ব্যাপারে আলেমদের মাঝে কোন মতভেদ নেই। সক্ষমতা থাকার পরেও এ শর্ত পূর্ণ না করলে নামায বাতিল হয়ে যাবে। এমন কিছু অবস্থা আছে যে অবস্থাগুলোতে কিবলামুখী হওয়ার শর্ত বাদ পড়ে যায়; সে অবস্থাগুলো ইতিপূর্বে 65853 নং প্রশ্নোত্তরে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদি কোন মুসলমান এমন কোন স্থানে থাকেন যে স্থান থেকে তিনি কিবলার দিক জানতে না পারেন তাহলে তিনি তাঁর প্রবল ধারণায় যে দিককে কিবলা মনে হয় সেদিকে ফিরে নামায আদায় করবেন। সেক্ষেত্রে উক্ত নামাযটি পুনরায় আদায় করা তার উপর আবশ্যক হবে না। বরং তার নামায শুদ্ধ; তাকে কোন কিছু করতে হবে না।
এর সপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায় জাবের (রাঃ) এর বর্ণিত হাদিসে, তিনি বলেন: “আমরা এক যুদ্ধাভিযানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। সেদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। আমরা কিবলা জানার চেষ্টা করলাম; কিন্তু নিজেরাই একমত হতে পারলাম না। তাই আমাদের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তি আলাদা আলাদা নামায আদায় করল। আমাদের প্রত্যেকে তার সামনে একটি দাগ দিয়ে রাখল যেন পরবর্তীতে জায়গাগুলো চেনা যায়। যখন ভোর হল তখন আমরা সে দাগ দেখে বুঝতে পারলাম যে, আমরা কিবলার দিকে নয় অন্য দিকে ফিরে নামায আদায় করেছি। ফলে এ বিষয়টা আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি আমাদেরকে পুনরায় নামায আদায় করার নির্দেশ দেননি। বরং বললেন: তোমাদের নামায আদায় হয়েছে।[সুনানে দারাকুতনী, মুসতাদরাক হাকেম, সুনানে বাইহাকী; আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ গ্রন্থে (২৯১) অন্যান্য হাদিসের আলোকে এ হাদিসকে ‘হাসান’ ঘোষণা করেছেন]
যে ব্যক্তি কিবলা জানার চেষ্টা-প্রচেষ্টা করার পরেও কিবলা ভুল করে নামায আদায় করেছেন সে ব্যক্তি সম্পর্কে শাইখ বিন বায (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন: যদি কোন মুসলিম সফর অবস্থায় থাকেন কিংবা এমন কোন দেশে থাকেন যেখানে কিবলার দিক জানানোর মত কাউকে না পান তাহলে তার নামায শুদ্ধ; যদি তিনি নিজে কিবলা জানার আপ্রাণ চেষ্টা করে নিজে নিজে একটা সিদ্ধান্ত নেন; পরবর্তীতে জানা যায় যে, তিনি কিবলা ভুল করেছেন।
আর যদি তিনি মুসলমান দেশে থাকেন তাহলে তার নামায সহিহ হবে না। কেননা, তার পক্ষে কিবলা সম্পর্কে কাউকে জিজ্ঞেস করা সম্ভব। অনুরূপভাবে মসজিদের কাঠামো দেখার মাধ্যমেও কিবলা জানা সম্ভব।[মাজমুউল ফাতাওয়া (১০/৪২০) থেকে সমাপ্ত]
কিবলা জানার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। যখন কোন মুসলমান সফরে বের হয় এবং সে জানে যে, অচিরেই সে এমন কোন স্থানে উপনীত হবে যেখানে কিবলা জানার সমস্যায় পড়বে, সেখানে জিজ্ঞেস করার জন্য কোন মুসলমানকে পাবে না সেক্ষেত্রে কিবলা জানার পদ্ধতি শিখে নেয়া তাগিদপূর্ণ হয়ে যায়। এখন কম্পাসের মাধ্যমে কিংবা কিছু ঘড়ির মাধ্যমে —যেগুলোতে বিশেষ কিছু প্রোগ্রাম আছে— কিবলার দিক জানা সহজ। এছাড়া সূর্যের মাধ্যমে, চন্দ্রের মাধ্যমেও কিবলা নির্ণয় করা যেতে পারে। মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে সেসব পদ্ধতি শিখে নেয়া যাতে করে তার নামায সহিহ হয়।
আল্লাহই ভাল জানেন।