Islam QA ওয়েবসাইটের জন্য দান করুন

আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্‌ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।

যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কুরআনে কোন একটি হরফ বৃদ্ধি করল অথবা কমিয়ে ফেলল সে কুফরি করল

31-12-2022

প্রশ্ন 214273

প্রশ্ন: পরীক্ষার প্রশ্নে ছাত্রকে যখন কোন একটি আয়াতে কারীমা দিয়ে দলিল পেশ করতে বলা হয় তখন যে ছাত্র আয়াতে কারীমাটির কোন একটি হরফ বা শব্দ ভুলে গেছে সে ঐ হরফ বা শব্দটির স্থানে নিজের মনমত একটি শব্দ লিখে আসে। কারণ সে পরীক্ষায় পাস করতে চায়; ফেল করার ভয়ে সে এটা করে। কিন্তু সে স্বীকার করে- সে যা করেছে সেটা বিকৃতি। এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য- কার্যতঃ কুরআন বিকৃতি নয়। কিন্তু পরীক্ষায় ফেল করার ভয়ে সে ভুলে-যাওয়া শব্দটির স্থানে অন্য একটি শব্দ লিখেছে। এটা কি কুরআন বিকৃতির মধ্যে পড়বে; যে কারণে এই ছাত্র ইসলামের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যাবে।

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

(158204) নং প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছে- যে ব্যক্তি নামাযের মধ্যে কোন সূরা পড়তে গিয়ে ভুল করেছে অথবা কোন একটা অংশ ভুলে গেছে সে ব্যক্তি ভুলে-যাওয়া অংশটি মনে করার এবং শুধরে নেয়ার চেষ্টা করবে। যদি তার পক্ষে কোনভাবে সেটা সম্ভবপর না হয় তাহলে সে পরের আয়াত পড়বে অথবা সে সূরা বাদ দিয়ে অন্য কোন সূরা পড়বে। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে যদি কুরআনে কোন কিছু বৃদ্ধি করে -নামাযের মধ্যে হোক অথবা নামাযের বাইরে হোক- এটা মারাত্মক গুনাহ। আলেমগণ উল্লেখ করেছেন- যে ব্যক্তি কুরআনের মধ্যে কোন একটি হরফ হ্রাস করল অথবা এক হরফের জায়গায় অন্য হরফ স্থাপন করল অথবা কোন একটা হরফ বাড়িয়ে দিল সে কুফরি করল। কাযী ইয়ায (রহঃ) বলেন:

মুসলিম উম্মাহ এ ব্যাপারে ইজমা করেছেন যে, কুরআন হচ্ছে- আল্লাহর বাণী ও নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি আল্লাহর নাযিলকৃত ওহি; যা পৃথিবীর সর্ব অঞ্চলে তেলাওয়াতকৃত, মুসলমানদের স্বহস্তে লিপিবদ্ধ, মুসহাফের দুই মলাটের মধ্যে সন্নিবেশিত, যার শুরু হয়েছে-الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ العالمين দিয়ে এবং শেষ হয়েছে- قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ দিয়ে। কুরআনের মধ্যে যা কিছু আছে সবই সত্য। যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে এর একটি হরফ কমাবে অথবা একটি হরফের স্থানে অন্য একটি হরফ দিয়ে পরিবর্তন করবে অথবা এমন কিছু বৃদ্ধি করবে যা মুসলমানদের ইজমা (ঐকমত্য) প্রতিষ্ঠিত মুসহাফে ছিল না এবং যেটার ব্যাপারে ইজমা রয়েছে যে- তা কুরআন নয়; যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত এসব করবে সে কাফের।[আল-শিফা (২/৩০৪-৩০৫), আরো দেখুন: ইবনে আমিরুল হাজ্জ এর আল-তাকরির ওয়াল তাহবির (২/২১৫)]

আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যাতে বলা হয়েছে (৩৫/২১৪)- কুরআন হচ্ছে- আল্লাহর বাণী, মোজেযা (চ্যালেঞ্জ), যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি নাযিলকৃত, যা মুতাওয়াতির সূত্রে আমাদের নিকট পৌঁছেছে, যার মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করা হারাম; চাই সে ভুলের কারণে অর্থ পরিবর্তিত হোক অথবা না হোক। যেহেতু কুরআনের শব্দগুলো তাওকিফিয়্যা (আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত) এবং তা আমাদের নিকট মুতাওয়াতির সূত্রে পৌঁছেছে। অতএব, এর কোন একটি শব্দের হরকত পরিবর্তন করার মাধ্যমে অথবা এক হরফের পরিবর্তে অন্য হরফ বসানোর মাধ্যমে এতে পরিবর্তন করা নাজায়েয।[উদ্ধৃতি সমাপ্ত] এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, যদি সেই ছাত্র জানে যে, এটি কুরআন নয় অথবা আয়াতের অংশ নয় তাহলে তা লেখা তার জন্য নাজায়েজ। পরীক্ষার্থীর উচিত আয়াতটি মনে করার চেষ্টা করা। যদি সে মনে করতে না পারে তাহলে ঐ স্থানটি ফাঁকা রেখে দেওয়া। সে চাইলে উত্তরপত্রে লিখে দিতে পারে যে, আয়াতটির এ অংশ সে ভুলে গেছে এবং যে ব্যাপারে সে নিশ্চিত নয় এমন কিছু লেখাকে সে অপছন্দ করেছে ।

আল্লাহই ভাল জানেন।

আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান কুরআন ও কুরআনের জ্ঞানসমূহ কুরআন তেলাওয়াতের শিষ্টাচার
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইটে দেখান