Islam QA ওয়েবসাইটের জন্য দান করুন

আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্‌ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।

ফযিলতপূর্ণ রমযান মাসে পড়ার জন্য বিশেষ কোন যিকির বর্ণিত হয়নি

14-05-2018

প্রশ্ন 221247

আমি খেয়াল করলাম আমাদের এলাকার ইমাম প্রত্যেক নামাযের শেষে: ‘আশহাদু আন লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌’, ‘আসতাগফিরুল্লাহ্‌’, ‘নাসআলুকাল জান্নাহ’, ‘নাউযুবিকা মিনান্‌ নার’ তিনবার করে পড়েন। এটি কী সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি? আমরাও কি এভাবে পড়তে পারি? এছাড়াও আর কি কি দোয়া আছে? আমি সেগুলো জানতে চাই; যেন এখন থেকে আমি সেগুলো পড়তে পারি।

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ্‌ তে রমযান সংক্রান্ত বিশেষ কোন যিকির-দোয়া উদ্ধৃত হয়নি। শুধু শেষ দশকে লাইলাতুল ক্বদর অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! আপনার কি অভিমত, যদি আমি জানতে পারি কোন রাতটি লাইলাতুল ক্বদরের রাত তখন আমি কি (দোয়া) বলব? তিনি বললেন: তুমি বলবে, ‘আল্লাহুম্মা! ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি’ (অর্থ, হে আল্লাহ্‌! আপনি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করাটা পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।)[হাদিসটি ইমাম তিরমিযি (৩৫১৩) বর্ণনা করেন এবং তিনি বলেন: হাদিসটি সহিহ ও হাসান]

আরও জানতে দেখুন: 36832

এছাড়া শুধু রমযান মাস কেন্দ্রিক নির্দিষ্ট সংখ্যাবিশিষ্ট, নির্দিষ্ট সওয়াববিশিষ্ট বিশেষ কোন যিকির উদ্ধৃত হয়নি। বরং মুসলমানের জন্য মুস্তাহাব হচ্ছে, সর্বাবস্থায় আল্লাহ্‌কে স্মরণ করা, যেভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিকির ও দোয়ার মাঝে সমন্বয় করতেন; যাতে করে এ মাসটির দিবারাতকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন। বিশেষতঃ দোয়া কবুল হওয়ার সময়গুলোকে যেমন- শেষ রাত, জুমার দিন আসরের নামাযের পর ইত্যাদি। এ সময় আল্লাহ্‌র কাছে একনিষ্ঠ হয়ে জান্নাত চাইবে এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে।

ইমাম শাতেবি (রহঃ) বলেন:

অতএব, বিদাত হচ্ছে- দ্বীনি বিষয়ে এমন একটি নব উদ্ভাবিত পন্থা যেটা শরয়ি পন্থার সাথে সাদৃশ্য রাখে, এ পথে চলার উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্‌র বন্দেগীর ক্ষেত্রে অতিরঞ্জন...। এর মধ্যে রয়েছে- নির্দিষ্ট কিছু ধরণ ও পদ্ধতি মেনে চলা। যেমন, সম্মিলিতভাবে একই সুরে যিকির করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিবসকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করা এবং এ ধরণের অন্য আরও যা কিছু রয়েছে। এছাড়াও বিশেষ কিছু সময়ে বিশেষ কিছু ইবাদত পালন করা; যে ইবাদতগুলোর জন্য এ সময় নির্ধারণ শরয়ি দলিল-প্রমাণে পাওয়া যায়নি।[আল-ইতিসাম (১/৩৭-৩৯) থেকে সমাপ্ত]

এ প্রসঙ্গে একটি বিষয়ে আমরা সাবধান করতে চাই। সেটা হচ্ছে, অনেক ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেইজে রমযানের প্রতিদিনের জন্য বিশেষ দোয়া ও যিকির প্রচার করা হয়। এগুলো মানুষের আবিষ্কৃত। কেউ হয়তো নিজস্ব পছন্দ হিসেবে এগুলো প্রচার করেছিলেন। কিন্তু, অনেক মানুষ এগুলোকে এ মোবারক মাস উপলক্ষে শরিয়ত প্রদত্ত ইবাদত বলে ধারণা করছে।

প্রকৃতপক্ষে এগুলো সুন্নাহ্‌ সাপেক্ষ নয়। ইবাদতের ক্ষেত্রে নবীর আদর্শ নয়।

তাই একজন মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে- সকাল-সন্ধ্যার দোয়াসমূহ, নামায শেষান্তের দোয়াসমূহ, বিভিন্ন শরয়ি উপলক্ষগুলো কেন্দ্রিক দোয়াসমূহ পড়তে সচেষ্ট থাকা। কুরআন তেলাওয়াত, অধ্যয়ন ও অর্থ হৃদয়াঙ্গম করতে নিবিষ্ট হওয়া। যে ব্যক্তি প্রতিদান খুঁজে বেড়ায় ও সওয়াব পেতে চায় সেটা পাওয়ার জন্য এ দোয়াগুলো যথেষ্ট।

আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

শরিয়ত অনুমোদিত দুআ
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইটে দেখান