আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
খালা ও ভগ্নিপুত্রের মাঝে সম্পর্কের ধরন কেমন হওয়া চাই? ভগ্নিপুত্র কি খালার সাথে মুসাফাহা করতে পারে? ইসলামে খালার মর্যাদা ও অধিকার কি? খালা কি তার ভগ্নিপুত্রদের সামনে মুখ খুলে আসতে পারেন? আশা করি বিস্তারিত জানাবেন।
আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
ইসলামে খালার উচ্চ মর্যাদা রয়েছে। খালা মায়ের সমান। সুনানে আবু দাউদ (২২৭৮) এ আলী (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “খালা হচ্ছে মায়ের সমান”[আলবানি হাদিসটি সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
এ হাদিসের মর্মার্থ সম্পর্কে বলা হয়: খালা প্রতিপালনের ক্ষেত্রে মায়ের সমান অধিকার রাখেন। কারণ হাদিসটি সে প্রসঙ্গে উদ্ধৃত হয়েছে।[ফাতহুল বারী ৭/৫০৬]
কারো কারো মতে, প্রতিপালন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে খালা মায়ের সমান।
ইমাম যাহাবী “আল-কাবায়ের” গ্রন্থে বলেন: অর্থাৎ সদ্ব্যবহার, সম্মান করা ও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে। সমাপ্ত
আরও দেখুন শাইখ উছাইমীনের “শারহু বুলুগুল মারাম” (৫/২০৩)
সুনানে তিরমিযিতে দ্বিতীয় অর্থটির সপক্ষে ইবনে উমর (রাঃ) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে যে, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল: আমি একটি মহাপাপ করেছি। আমার জন্যে কি তওবা করার সুযোগ আছে? তিনি বললেন: “তোমার কি মা আছে?” সে বলল: না। তিনি বললেন: তোমার কি খালা আছে? সে বলল: হ্যাঁ আছে। তিনি বললেন: তাহলে তাঁর সাথে সদাচরণ কর।[সহিহুত তারগীব গ্রন্থে (২৫০৪) আলবানি হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
এ হাদিসটি প্রমাণ করে যে, খালার সাথে সদাচরণ করা ও ভাল ব্যবহার করা নেক আমল ও গুনাহ মোছনের মাধ্যম।
সুনানে আবু দাউদ (৪৯৭০) গ্রন্থে আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম, আমার সকল বান্ধবীর কুনিয়ত বা উপনাম রয়েছে। তিনি বললেন: তাহলে তুমি তোমার ছেলে আব্দুল্লাহর নামে কুনিয়ত গ্রহণ কর। অর্থাৎ বোনের ছেলে আব্দুল্লাহ। এরপর তিনি ‘উম্মে আব্দুল্লাহ’ বা ‘আব্দুল্লাহর মা’ নামে কুনিয়ত গ্রহণ করেন।
আব্দুল্লাহ হচ্ছেন- আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের। তিনি আয়েশা (রাঃ) এর বোন আসমা (রাঃ) এর ছেলে। এ হাদিসে পূর্বোক্ত হাদিসে উল্লেখিত বিধানকে পাকাপোক্ত করা হয়েছে যে, খালা মায়ের সমান।
তাই মুসলমানের কর্তব্য খালার সাথে সদ্ব্যবহার করা, ভাল আচরণ করা ঠিক যেভাবে তার মায়ের সাথে আচরণ করে থাকে। আরও জানতে 148430 নং প্রশ্নোত্তর দেখুন।
দুই:
প্রত্যেক ব্যক্তির খালা তার নিজের ও তার সন্তানসন্ততি সবার খালা, অনুরূপভাবে তার ফুফু তার নিজের ও তার সন্তানসন্ততি সবার ফুফু। তাই বাপের ফুফু আপনারও ফুফু। বাপের খালা আপনারও খালা। একই কথা মায়ের ফুফু ও মায়ের খালার ক্ষেত্রে। আরও জানতে 34791 নং প্রশ্নোত্তর দেখুন।
তিন:
কোন ব্যক্তির খালা তার মোহরেম। অতএব, খালার সাথে মুসাহাফা করা, খালার সাথে নির্জনে থাকা, একত্রে সফর করা জায়েয। খালার জন্য বোনপুতের সামনে মুখ খোলা রাখা জায়েয। যেভাবে মা ছেলেদের সামনে মুখ খোলা রাখেন। মুসলিম নারীর জন্য মোহরেম পুরুষদের সামনে কিংবা নারীদের সামনে প্রচলিত অভ্যাস ও শিষ্টাচার বজায় রেখে চেহারা, মাথা, গর্দান, হাত ও হাঁটুর কিছু অংশ খোলা রাখা জায়েয আছে।
কিন্তু এদের সামনে খাটো, ফিনফিনে স্বচ্ছ কিংবা আঁট-সাঁট পোশাক পরা জায়েয নেই।
আরও জানতে দেখুন 82994 নং ও 43480 নং প্রশ্নোত্তর।
আল্লাহই ভাল জানেন।