আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস “তুমি আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনবে, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনবে, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনবে, তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনবে, শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনবে এবং ভাল-মন্দের তাকদীরের প্রতি ঈমান আনবে”-এ কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনাকে ফেরেশতাদের প্রতি ঈমানের পর এবং রাসূলগণের প্রতি ঈমানের আগে উল্লেখ করা হল কেন?
আলহামদু লিল্লাহ।.
নিশ্চয় বান্দার প্রতি ঈমানের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যা ওয়াজিব সেটা হল: আল্লাহ্ তাআলার প্রতি ঈমান আনা। এর কারণ হল যতক্ষণ পর্যন্ত না এটা সাব্যস্ত না হয় যে, এ মহাবিশ্বের একজন উপাস্য আছেন ততক্ষণ পর্যন্ত তো রাসূলগণের সত্যতা জানা সম্ভবপর নয়। তাই আল্লাহ্র মারিফত বা তাঁকে জানা হচ্ছে মূল। এ কারণে আল্লাহ্ তাআলা ঈমানের এ স্তরকে অন্যগুলোর আগে উল্লেখ করেছেন।
তারপর বহু দলিলে আল্লাহ্ তাআলার প্রতি ঈমানের বিষয়টি উল্লেখ করার পর তাঁর মর্যাদাবান ফেরেশতাদের প্রতি ঈমানের উল্লেখ করা হয়েছে। এর গূঢ় রহস্য হল: আল্লাহ্ তাআলা ফেরেশতাদের মাধ্যমে তাঁর নবীগণের নিকট ওহী প্রেরণ করেন। তিনি বলেন: “তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাদের কাছে চান, তাঁর এই নির্দেশের ওহী নিয়ে ফেরেশতা পাঠান যে, তোমরা (মানুষকে) সতর্ক করে দিয়ে বলবে, “আমি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই, অতএব আমাকে ভয় করো।”[সূরা নাহল, আয়াত: ২] তিনি আরও বলেন: “বিশ্বস্ত আত্মা (জিবরাইল) তা নিয়ে নাযিল হয়েছে আপনার আত্মার ওপর; যাতে করে আপনি সতর্ককারী হতে পারেন।”[সূরা শূআরা, আয়াত: ১৯৩-১৯৪]
যখন এটি সাব্যস্ত হল যে, আল্লাহ্র ওহী (প্রত্যাদেশ) ফেরেশতার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছেছে; তখন ফেরেশতারাই হল আল্লাহ্ ও মানুষের মাঝে মাধ্যম। এ কারণে ফেরেশতাদের প্রতি ঈমানকে দ্বিতীয় স্তরে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঠিক একই গূঢ় রহস্যের কারণে আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন: “আল্লাহ্ সাক্ষ্য দেন যে, নিশ্চয় তিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। আর ফেরেশ্তাগণ এবং জ্ঞানীগণও; আল্লাহ্ ন্যায়নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।”[সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮]
তৃতীয় স্তর হচ্ছে: কিতাবসমূহ। কিতাব হচ্ছে সেই ওহী বা প্রত্যাদেশ যা ফেরেশতা আল্লাহ্র কাছ থেকে গ্রহণ করে মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে দিতেন। তাই কিতাবসমূহের আগে ফেরেশতা উল্লেখযোগ্য এবং এ কারণেই কিতাবসমূহকে পরে উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থ স্তর হচ্ছে: রাসূলগণ। তাঁরা হচ্ছেন যারা ফেরেশতাদের কাছ থেকে ওহীর নূর গ্রহণ করেছেন। এ কারণে রাসূলদেরকে চতুর্থস্তরে উল্লেখ করা হয়েছে। ইমাম রাযী তাঁর তাফসিরে (৭/১০৮) এ কারণ উল্লেখ করেছেন। [দেখুন: বায়যাবীর উপর লিখিত যাদাহ-এর হাশিয়া (পার্শ্বটীকা) (২/৬৯৪)]
ত্বীবী বলেন: ফেরেশতাকে কিতাব ও রাসূলদের আগে উল্লেখ করা হয়েছে বাস্তবতার সাথে মিল রেখে। যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা ফেরেশতাকে কিতাব দিয়ে রাসূলের কাছে পাঠিয়েছেন।[শারহুল মিশকাত (২/৪২৫) থেকে সমাপ্ত]
তবে উল্লেখিত বিষয়টি অতিরিক্ত ও সূক্ষ্ম জ্ঞানশ্রেণীয়; জ্ঞানের কোন মৌলিক বিষয় নয়; যার উপর কোন আকিদা বা হুকুম নির্ভর করে।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।