আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
আমাদের ফ্যামিলিতে ছেলেদের সংখ্যা ৯ জন। আমরা প্রত্যেকে বিবাহিত ও আমাদের ফ্যামিলি আছে। আমাদের পিতা মারা গেছেন; মা অশীতিপর বৃদ্ধা। আমরা পালাক্রমে মায়ের সেবা করি। প্রতিদিন কোন এক ছেলের উপর তাঁর সেবা করার দায়িত্ব থাকে— এ যুক্তি থেকে যে, এটি ছেলেদের দায়িত্ব; মেয়েদের দায়িত্ব নয়। পক্ষান্তরে নারীর উপর তার স্বামী-সন্তানের অধিকার পিতামাতার অধিকারের চেয়ে অধিক তাগিদপূর্ণ ওয়াজিব যেমনটি শরিয়ত নির্ধারণ করেছে এবং তাকে এই মর্মে কোন কোন আলেম ফতোয়া দিয়েছেন। আমাদের বোন যা বলছে সেটা কি সঠিক? পবিত্র শরিয়তে যা এসেছে সেটা কি এ রকম? উল্লেখ্য, সে চাকুরী করে এবং দিনের বেশিরভাগ সময় বাসার বাইরে থাকে। মাঝে মাঝে কয়েক দিনের জন্য সফরে যায়। সে ক্ষেত্রে সে তার স্বামী-সন্তানদের সেবা করার কারণ দেখিয়ে অপারগতা পেশ করে না।
আলহামদু লিল্লাহ।.
যদি পিতামাতার সেবা প্রয়োজন হয় তাহলে সেটা সকল সন্তানের উপর ওয়াজিব; তারা ছেলে হোক কিংবা মেয়ে হোক। হয়তো তারা নিজেরা সেবা করবে কিংবা কোন লোককে পারিশ্রমিক দিয়ে সেবা করাবে।
সাফারিনী ‘গিযাউল আলবাব’ গ্রন্থে (১/৩৯০) বলেন: “তাদের অধিকারের মধ্যে রয়েছে: যদি তাদের উভয়ের সেবা প্রয়োজন হয় তাদের সেবা করা কিংবা তাদের একজনের প্রয়োজন হলে তার সেবা করা।”[সমাপ্ত]
‘আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা’-তে (১৯/৩৯) এসেছে: “সন্তান কর্তৃক পিতামাতার সেবা করা কিংবা পিতা কর্তৃক সন্তানকে কাজে লাগানো কোন মতানৈক্য ছাড়া জায়েয। বরং তা শরিয়ত কর্তৃক আদেশকৃত সদাচরণের অন্তর্ভুক্ত। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে সন্তানের উপর পিতামাতার সেবা করা কিংবা অন্যকে দিয়ে সেবা করানো ওয়াজিব হয়ে যায়। এ কারণে সন্তানের জন্য এ সেবার বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা নাজায়েয। কেননা এটি তার উপর প্রাপ্য অধিকার। যে ব্যক্তি কারো প্রাপ্য অধিকার তাকে প্রদান করে তার জন্য এর বিনিময়ে পারিশ্রমিক নেয়া জায়েয নয়।”[সমাপ্ত]
সুতরাং এই সেবা করা আপনাদের সকলের উপর ওয়াজিব। কিন্তু, কোন নারীকে যদি তার স্বামী মায়ের খেদমত করতে বাধা দেয় সেক্ষেত্রে স্বামীর অধিকার অগ্রগণ্য। কিন্তু সে নারী নিজে সেবা করার বদলে একজন সেবিকা রেখে দিবেন কিংবা অন্যদের সাথে যৌথভাবে সেবিকার বেতন দিবেন; যদি তার সম্পদ থাকে। আর যদি তার স্বামী তাকে মায়ের সেবা করতে বাধা না দেয় সেক্ষেত্রে ভাইদের সাথে মায়ের সেবা করা তার উপর ওয়াজিব।
কোন ব্যক্তিত্ববান স্বামীর জন্য স্ত্রীকে মায়ের সেবা করতে বাধা দেয়া অনুচিত। বিশেষতঃ তার স্ত্রীকে যদি সপ্তাহে একদিন বা দুইদিনের বেশি সেবা করতে না হয়।
তাছাড়া মায়ের যদি এমন কোন খেদমত প্রয়োজন হয় যে খেদমত করার জন্য নারীদের প্রয়োজন সেক্ষেত্রে মেয়েরাই এর উপযুক্ত। অন্য মানুষের চেয়ে তারা এই দায়িত্ব নেয়া অধিক যুক্তিযুক্ত। বিশেষতঃ কোন কাজের মহিলা রাখা যদি সম্ভবপর না হয় কিংবা মা যদি অপর কোন মানুষ তার গোপনীয় কিছু দেখাকে অপছন্দ করেন।
তাই আপনাদের উচিত আপনাদের বোনকে নসিহত করা, তার কাছে মায়ের সাথে সদাচরণ করার গুরুত্ব তুলে ধরা, মায়ের অবাধ্য হওয়ার জঘন্যতা বর্ণনা করা এবং মায়ের সেবার ক্ষেত্রে ছেলের চেয়ে মেয়েই অধিক উপযুক্ত তা পরিস্কার করা। কেননা বয়স্ক মানুষের খেদমত করতে গেলে লজ্জাস্থান চোখে পড়তে পারে। আর কোন নারীর লজ্জাস্থান তার মেয়ে দেখাটা কোন ছেলে দেখার চেয়ে হালকা।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।