আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
মসজিদে কুরআন শিক্ষার হালকাগুলোতে (আসরগুলোতে) আমরা বাচ্চাদের জন্য কিছু হাদিস ব্যাখ্যা করি; যেমন- “তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে নিজে কুরআন শেখে ও অন্যকে শেখায়” ও অন্য কিছু হাদিস। আমরা হাদিসের টেক্স প্রিন্ট করি। এরপর বাচ্চাদেরকে রঙ করতে বলি। এটা কি জায়েয? নাকি এতে করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের অসম্মান হয়?
আলহামদু লিল্লাহ।.
মুসলিমের ওপর ফরজ হচ্ছে আল্লাহ্র দ্বীনকে ও দ্বীনের নিদর্শনগুলোকে সম্মান করা। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “এটাই (করণীয়)। আর যারা আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের সম্মান করবে, নিঃসন্দেহে সেটা হবে (তাদের) অন্তরের তাকওয়ার পরিচায়ক।”[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ৩২]
এই সম্মানের মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্মান করা ও তাঁর সুন্নাহকে সম্মান করাও অন্তর্ভুক্ত।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন:
“যে ব্যক্তি উপাসনায় আল্লাহ্র এককত্বে বিশ্বাস করে এবং তাঁর বান্দা ও রাসূলের রিসালাতে বিশ্বাস করে; এরপর এই বিশ্বাসের অনুবর্তী হিসেবে যা আবশ্যকীয় তথা সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করে না; যা অন্তরে থাকলেও এর প্রভাব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর ফুটে ওঠে; বরং কথা বা কাজের মাধ্যমে অবজ্ঞা, নির্বোধ জ্ঞানকরণ ও তাচ্ছিল্য ফুটে ওঠে: এমন বিশ্বাস থাকা না-থাকার মতোই। বরং এটি তার সেই বিশ্বাস নষ্ট হওয়াকে আবশ্যককারী এবং এ বিশ্বাসের যে উপকার ও কল্যাণ সেটাকে দূরকারী। কেননা ঈমানী বিশ্বাসগুলো অন্তরগুলোকে পরিশুদ্ধ ও সংশোধন করে। যখন এ বিশ্বাসগুলো আত্মার পরিশুদ্ধি এবং সংশোধনকে আবশ্যক করে না তখন বুঝতে হবে যে, এটি অন্তরে স্থান করে নিতে পারেনি।”[আস্-সারেম আল-মাসলুল (৩/৭০০)]
আমাদের কাছে যা অগ্রগণ্য প্রতীয়মান হয় সেটা হল: হাদিসে রাসূল বাচ্চাদের জন্য ব্যাখ্যা করা, সেটাকে প্রিন্ট করা এবং বাচ্চাদেরকে মুখস্ত করতে ও রঙ করতে দেয়া— এটি সুন্নাহর প্রতি সম্মান প্রদর্শনকে নাকচ করে না। কারণ উদ্দেশ্য হচ্ছে বাচ্চাদেরকে হাদিস মুখস্ত করানো। এ উদ্দেশ্যকে বাচ্চাদের নিকট পছন্দনীয় এক প্রকারের বৈধ বিনোদনের মাধ্যমে সহজীকরণ করা হয়েছে। আর সেটা হচ্ছে রঙ করা ও আঁকাআঁকি করা কিংবা এ জাতীয় অন্য কোন শিক্ষা-মাধ্যম যা শরিয়তসিদ্ধ মহান উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়ক।
উপরোক্ত আলোচনার আলোকে প্রশ্নে যে পদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে আমাদের কাছে এতে কোন অসুবিধা প্রতীয়মান হয় না।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।