আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
স্বামী তার স্ত্রী ও সন্তানদের ওপর কর্তৃত্বশীল। স্বামীর ইলম ও দ্বীনদারি কোন স্তরের হওয়া আবশ্যক? উদাহরণস্বরূপ যদি স্ত্রী বা সন্তানেরা শরিয়তে নিষিদ্ধ কোন কাজ করে স্বামী কি আমানত নষ্ট করা ও নিষিদ্ধ কাজটি করার আগে তাদেরকে উপদেশ না দেয়ার জন্য গুনাহগার হবে ও আল্লাহ্র শাস্তির উপযুক্ত হবে?
আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
নেককার স্বামীর বৈশিষ্ট্য জানার জন্য 5202 নং ও 6942 নং প্রশ্নোত্তর দেখুন।
দুই:
“পুরুষ তার পরিবারের কর্তা ও তার অধীনস্তদের ওপর কর্তৃত্বশীল”। যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহিহ হাদিসে সাব্যস্ত হয়েছে। পুরুষ ব্যক্তি তার স্ত্রী ও সন্তানদের শিক্ষা ও প্রতিপালনের দায়িত্বশীল। যে ব্যক্তি এতে কসুর করায় তার স্ত্রী কিংবা সন্তানেরা কোন পাপে লিপ্ত হয় সে ব্যক্তি গুনাহগার হবেন। কারণ সে ব্যক্তি তাদের শিক্ষা না পাওয়া ও প্রতিপালন না পাওয়ার কারণ। আর যদি সে ব্যক্তি কসুরকারী না হন, কিন্তু তার পরিবারের কোন সদস্য পাপে লিপ্ত হয়; তাহলে সে ব্যক্তি গুনাহগার হবে না। কিন্তু তারা পাপে লিপ্ত হওয়ার পরও তার উপর কর্তব্য তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়া, উপদেশ দেয়া; যাতে করে তারা শরিয়ত গর্হিত যে কাজে লিপ্ত হয়েছে সেটি বর্জন করে।
শাইখ সালেহ আল-ফাওযান (রহঃ) বলেন:
সন্তানদেরকে শিক্ষাদান শুরু হবে তারা বুঝবান বয়সে পৌঁছা থেকে। তখনই তাদের তা’লীম (শিক্ষা) ও তারবিয়ত (প্রতিপালন) শুরু হবে। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “সাত বছর বয়সে সন্তানদেরকে নামাযের আদেশ দাও, দশ বছর বয়সে নামাযের জন্য প্রহার কর এবং তাদের মাঝে বিছানা আলাদা করে দাও।”[সুনানে আবু দাউদ, হাদিসটি সহিহ]
অতএব কোন বাচ্চা যখন বুঝদার হওয়ার বয়সে পৌঁছবে তখন তার পিতাকে নির্দেশ দেয়া হবে যাতে করে তাকে তালীম দেয় ও ভাল তারবিয়ত দেয়— কুরআন শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে, সাধ্যানুযায়ী কিছু হাদিস শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে, শিশুর বয়সের উপযুক্ত ইসলামী বিধিবিধান শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে, তাকে ওযু শিখানো, নামায শিখানো, ঘুমের যিকির আযকার শিখানো, ঘুম থেকে ওঠার যিকির-আযকার শিখানো, পানাহারের যিকির-আযকার শিখানোর মাধ্যমে। কারণ বাচ্চা যখন বুঝদার হওয়ার বয়সে পৌঁছে তখন তাকে যা নির্দেশ দেয়া হয় ও যা থেকে নিষেধ করা হয় সে তা বুঝতে পারে। অনুরূপভাবে তাকে অনুপযুক্ত বিষয়াবলী থেকে বারণ করা হবে। তার কাছে তুলে ধরা হবে যে, এসব কাজ করা নাজায়েয; যেমন- মিথ্যা কথা বলা, চোগলখুরী করা ইত্যাদি। এভাবে তাকে ছোটবেলা থেকে ভাল গুণ অর্জন ও মন্দ গুণ বর্জনের উপর প্রতিপালন করা হবে। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিছু মানুষ তাদের সন্তানদের সাথে এটি করার ক্ষেত্রে গাফেল। অনেক মানুষ তাদের সন্তানদের বিষয়কে গুরুত্ব দেয় না। তাদেরকে সঠিক দিক নির্দেশনা দেয় না। তাদেরকে অবহেলার উপর ছেড়ে দেয়। নামাযের নির্দেশ দেয় না। ভাল কাজের দিক নির্দেশনা দেয় না। বরঞ্চ তারা অজ্ঞতার ওপর ও অসুন্দর চরিত্রের ওপর বড় হয়। খারাপ ছেলেদের সাথে মিশে। রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ায়। লেখাপড়ার প্রতি গুরুত্ব দেয় না। এভাবে অনেক খারাপ চরিত্রের ওপর অনেক মুসলিম যুবক বেড়ে উঠছে তাদের পিতাদের অবহেলার কারণে। অথচ তারা তাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ্র কাছে জিজ্ঞাসার মুখোমুখী হবে। কেননা আল্লাহ্ তাদেরকে সন্তানদের দায়িত্ব দিয়েছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “সাত বছর বয়সে সন্তানদেরকে নামাযের আদেশ দাও, দশ বছর বয়সে নামাযের জন্য প্রহার কর এবং তাদের মাঝে বিছানা আলাদা করে দাও।” এটি নির্দেশ ও দায়িত্বারোপ। তাই যে ব্যক্তি তার সন্তানদেরকে নামাযের নির্দেশ দেয় না সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশের লঙ্ঘন করে এবং হারাম কাজ করে, তার উপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা আবশ্যক করেছিলেন সেটা বর্জন করে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল। প্রত্যেককে তার অধীনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম] কিছু দুঃখজনক হলো কিছু পিতা দুনিয়াবী কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত। তারা তাদের সন্তানদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করে না। তাদেরকে সামান্য সময়ও দেয় না। তার সকল সময় দুনিয়ার কাজের জন্য। মুসলিম দেশগুলোতে এটি বিপদজনক বিষয়। এ কারণে তাদের সন্তানেরা খারাপভাবে বড় হচ্ছে। তারা তাদের দ্বীন ও দুনিয়ার কোন কল্যাণ করছে না। ولا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم (সুমহান ও সুউচ্চ আল্লাহ্র সাহায্য ছাড়া কোন উপায় ও শক্তি নেই)।
[আল-মুনতাক্বা মিন ফাতাওয়াশ শাইখ আল-ফাওযান (৫/২৯৭, ২৯৮; প্রশ্ন নং ৪২১)]
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।