বৃহস্পতিবার 27 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 28 নভেম্বর 2024
বাংলা

চোখের পাপড়ি কার্ল করা ও মাশকারা করার বিধান

প্রশ্ন

কয়েক মাসের জন্য চোখের পাপড়ি কার্ল করা ও মাশকারা করার বিধান কী?

আলহামদু লিল্লাহ।.

ইসলামে রূপচর্চার মূল বিধান হচ্ছে বৈধতা।

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন, “বলুন, আল্লাহ্‌ নিজের বান্দাদের জন্য যেসব সজ্জা ও বিশুদ্ধ জীবিকা সৃষ্টি করেছেন তা কে হারাম করেছে? বলুন, পার্থিব জীবনে, বিশেষ করে কেয়ামতের দিনে এ সব তাদের জন্য যারা ঈমান আনে। এভাবে আমরা জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আয়াতসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করি।”[সূরা আরাফ, আয়াত: ৩২]

বিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে সাজ-সজ্জা একটি উপকারী অভ্যাস। কেননা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মজবুতিতে এটি ভূমিকা রাখে। যে কোন উপকারী অভ্যাসের মূল বিধান হচ্ছে- বৈধতা।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন:

“বান্দার যাবতীয় কথা ও কাজ দুই শ্রেণীর:

- ইবাদতশ্রেণীর; এগুলোর মাধ্যমে ব্যক্তির দ্বীনদারি ঠিক থাকে।

- অভ্যাসশ্রেণীর; দুনিয়ার জিন্দেগীতে এগুলোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

ইসলামি শরিয়তের যাবতীয় মূলনীতি আয়ত্ব করার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, যে ইবাদতগুলো আল্লাহ্ বান্দার উপর ফরজ করেছেন কিংবা যে ইবাদতগুলো পালন করা পছন্দ করেন সেগুলো শরিয়তের দলিল ছাড়া সাব্যস্ত হয় না।

আর অভ্যাসগুলো: সেগুলো হচ্ছে দুনিয়ার জীবনে মানুষ যেগুলো করে অভ্যস্থ, যেগুলো করা তাদের প্রয়োজন, সে সবের বিধান হচ্ছে বৈধতা। সেগুলোর মধ্যে আল্লাহ্‌ যেসবকে নিষেধ করেছেন সেগুলো ছাড়া অন্যকিছুকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা যাবে না।

অভ্যাস জাতীয় বিষয়ের ক্ষেত্রে মূলনীতি হচ্ছে সেটার বৈধতা। সুতরাং আল্লাহ্‌ যা হারাম করেছেন সেটা ছাড়া অন্য কিছু হারাম ঘোষণা দেয়া যাবে না। অন্যথায় আমরা আল্লাহ্‌র সে বাণীর অধীনে পড়ে যাব: “বলুন, তোমরা আমাকে জানাও, আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন তারপর তোমরা তার কিছু হালাল ও কিছু হারাম করেছ, বলুন, আল্লাহ্‌ কি তোমাদেরকে এটার অনুমতি দিয়েছেন, নাকি তোমরা আল্লাহ্‌র উপর মিথ্যা রটনা করছ?”[সূরা ইউনুস, আয়াত: ৫৯]

এ কারণে আল্লাহ্‌ মুশরিকদের নিন্দা করেছেন যারা আল্লাহ্‌ যা অনুমোদন করেননি দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু বিধান জারী করেছে এবং আল্লাহ্‌ যা হারাম করেননি এমন কিছুকে যারা হারাম করেছে...। এটি একটি সুমহান ও উপকারী সূত্র।[মাজমুউল ফাতাওয়া (২৯/১৬-১৮)]

চোখের পাপড়ি কার্ল করা ও মাশকারা করা: আমরা এমন কোন শরয়ি দলিল জানি না যাতে এগুলো করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং পূর্বের আলোচনার আলোকে এগুলো করা বৈধ; এটাই মূল বিধান।

তবে, কোন নারীর জন্য বেগানা পুরুষকে সৌন্দর্য্য প্রদর্শন করা থেকে সাবধান থাকা আবশ্যকীয়; কেননা এটি নাজায়েয।

আরও জানতে দেখুন: 113725 নং প্রশ্নোত্তর।

আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব