আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
নগদ অর্থের যাকাত ফরজ হয় দুইটি কারণে
১. নগদ অর্থ নিসাব পরিমাণ হওয়া।
২. নিসাব পরিমাণ অর্থের বছর ফুর্তি হওয়া।
অতএব, সঞ্চিত অর্থ যদি নিসাবের চেয়ে কম হয় তাহলে যাকাত ফরজ হবে না। যদি সঞ্চিত অর্থ নিসাব পরিমাণ হয় এবং নিসাব পরিমাণ অর্থের এক বছর ফুর্তি হয় অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ এক চন্দ্র বছর (হিজরী সাল) অতিবাহিত হয় তখন যাকাত ফরজ হবে। নিসাবের পরিমাণ হচ্ছে- ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ ও ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্য। মোট অর্থের ৪০ ভাগের এক ভাগ (২.৫%) যাকাত দেয়া ফরজ। দুই:
যদি কারো কাছে নিসাব পরিমাণ অর্থ থাকে; ধরে নিই সেটা ১০০০; আর বছর শেষে তার অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০০০ তে; তাহলে সে কিভাবে যাকাত আদায় করবে? এ ব্যাপারে বিস্তারিত বিশ্লেষণ প্রয়োজন:
১- এই অতিরিক্ত অর্থ যদি মূল অর্থের মাধ্যমে অর্জিত হয় যেমন- মূল এক হাজার যদি বিনিয়োগ করার মাধ্যমে লাভ হয় চার হাজার তাহলে বছর শেষে সর্বমোট অর্থের যাকাত আদায় করতে হবে। কেননা বিধি হচ্ছে- লাভ পুঁজির বিধানের অনুগত।
২- যদি এই অর্থ মূল অর্থের মাধ্যমে অর্জিত না হয়; অন্য কোন মাধ্যমে অর্জিত হয়ে থাকে যেমন- উত্তরাধিকার, উপঢৌকন, কোন কিছু বিক্রি ইত্যাদি তাহলে এ সম্পদের আলাদা বছর হিসাব করা হবে। যেদিন এই অতিরিক্ত সম্পদ মালিকানায় এসেছে সেদিন থেকে বছর গণনা শুরু হবে। আর যদি মূল এক হাজারের সাথে যাকাত আদায় করে দিতে চায় সেটাও করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি এ অতিরিক্ত অর্থের যাকাত ফরজ হওয়ার আগেই অগ্রিম আদায় করে দিলেন। এতেও কোন অসুবিধা নেই।
৩- কারো ক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত অর্থ ক্রমান্বয়ে অর্জিত হয়ে থাকতে পারে। যেমন আপনি মাসিক বেতন থেকে কিছু কিছু সঞ্চয় করলেন। যেমন একমাসে ৫০০ সঞ্চয় করলেন, অন্য মাসে ১০০০ সঞ্চয় করলেন, এভাবে বছর শেষে ৪০০০ হল। তাহলে আপনার এই সুযোগ আছে যে, মূল এক হাজারের যাকাত আদায়ের সময় অতিরিক্ত অর্জিত অর্থের যাকাতও আদায় করে দিবেন। সেক্ষেত্রে আপনি অতিরিক্ত অর্জিত অর্থের যাকাত নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আদায় করে দিলেন। আর ইচ্ছা করলে আপনি প্রত্যেকবার অর্জিত সম্পদের আলাদা বছর হিসাব করতে পারেন। তবে এভাবে হিসাব রাখাটা একটু কঠিন। কারণ এক্ষেত্রে আপনাকে এক বছরে কয়েকবার যাকাত আদায় করতে হবে।
আল্লাহই ভাল জানেন।