আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
আশা করব আপনারা সেজদাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী:
اللهم إني أعوذ برضاك من سخطك وبمعافاتك من عقوبتك وأعوذ بك منك لا أحصي ثناءً عليك أنت كما أثنيت على نفسك
(হে আল্লাহ্! আমি আশ্রয় চাই: আপনার সন্তুষ্টির ওসিলায় আপনার অসন্তুষ্টি থেকে, আপনার নিরাপত্তার ওসিলায় আপনার শাস্তি থেকে, আপনার থেকে আপনার কাছে, আপনার গুণকীর্তন করে আমি শেষ করতে পারব না, আপনি নিজের গুণ নিজে যেমন উল্লেখ করেছেন আপনি তেমনিই) এর মধ্যে উদ্ধৃত وأعوذ بك منك (আমি আপনার থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই) কথাটির ব্যাখ্যা করবেন?
আলহামদু লিল্লাহ।.
এই হাদিসটি ইমাম মুসলিম তাঁর সহিহ গ্রন্থে (৭৫১) আয়িশা (রাঃ) থেকে সংকলন করেছেন যে, তিনি বলেন: এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিছানায় পেলাম না। আমি তাঁকে খুঁজতে গিয়ে আমার হাত তাঁর পায়ের পেটের উপর পড়ল। তখন তিনি সেজদারত ছিলেন। তাঁর পাদ্বয় খাড়া অবস্থায় ছিল। তিনি বলছিলেন:
اللَّهُمَّ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
(হে আল্লাহ্! আমি আশ্রয় চাই: আপনার সন্তুষ্টির ওসিলায় আপনার অসন্তুষ্টি থেকে, আপনার নিরাপত্তার ওসিলায় আপনার শাস্তি থেকে, আপনার থেকে আপনার কাছে, আপনার গুণকীর্তন করে আমি শেষ করতে পারব না, আপনি নিজের গুণ নিজে যেমন উল্লেখ করেছেন আপনি তেমনি)।
মুনাওয়ি (রহঃ) বলেন: وأعوذ بك منك (আমি আপনার থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই) অর্থাৎ আমি আপনার রহমতের ওসিলায় আপনার শাস্তি থেকে আশ্রয় চাই। যেহেতু যা থেকে আশ্রয় চাওয়া হচ্ছে তা তাঁর ইচ্ছা ও সৃষ্টি থেকে তাঁর অনুমতি ও সিদ্ধান্তক্রমে উৎপন্ন। কেননা তিনিই কারণগুলোর সৃষ্টি ও অস্তিত্ব ঘটান; যেগুলো তাঁর মাধ্যমেই অর্জন করা যেতে পারে এবং তিনিই সেগুলো থেকে আশ্রয় দিতে পারেন ও সেগুলোর সৃষ্টি ও অস্তিত্বগত অনিষ্ট দূর করতে পারেন।”[ফায়যুল কাদ্বির শারহুল জামি আস-সাগরি (২/১৭৬) থেকে সমাপ্ত]
ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন:
وأعوذ بك منك (আমি আপনার থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই): তিনি সন্তুষ্টির গুণ দিয়ে রাগের গুণ থেকে আশ্রয় চেয়েছেন এবং নিরাপত্তা-কর্ম দিয়ে শাস্তি-কর্ম থেকে আশ্রয় চেয়েছেন এবং তাঁর থেকে তাঁর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন দুটো দিক থেকে। তাঁর কাছ থেকে আশ্রয় চাওয়া যেন পূর্বের বাক্যদ্বয়ে যা বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে সেটার সংক্ষেপন। কেননা তাঁর থেকে তাঁর কাছে আশ্রয় চাওয়াটা পূর্বের কথারই মর্ম; তবে আশ্রয় চাওয়ার মধ্যে অন্য একটি মহান শিক্ষা যুক্ত হয়েছে। আর তা হল: পরিপূর্ণ তাওহীদ। আশ্রয়প্রার্থী যা থেকে আশ্রয় চায় ও যা থেকে পলায়ন করে সেটা হচ্ছে আল্লাহ্র কর্ম, ইচ্ছা ও নির্ধারণ (তাকদীর)। তিনিই একক সিদ্ধান্তদাতা। তিনি যদি বান্দার মন্দ কিছু করতে চান তাহলে কেউই তাকে আশ্রয় দিতে পারবে না। অর্থাৎ বান্দার জন্য যা মন্দ সেটাও তাঁর ইচ্ছায় এবং সেই মন্দের দূর করাটাও তাঁর ইচ্ছায়। তাই তিনিই আশ্রয়প্রার্থনীয় সত্তা এ দুটো ইচ্ছার দিক থেকে। “আল্লাহ্ যদি তোমাকে কোন কষ্ট দেন তাহলে তিনি ছাড়া কেউ তা দূর করতে পারবে না।”[সূরা আনআম; ৬:১৭] সুতরাং তিনিই কষ্ট দেন এবং তিনিই কষ্ট দূর করেন। তিনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। পালানোর জায়গা তাঁর থেকে তাঁর কাছে। আশ্রয়ের জায়গা তাঁর থেকে তাঁর কাছে। যেমনিভাবে আশ্রয়প্রার্থনা করা হয় তাঁর থেকে। তিনি ছাড়া কোন প্রভু নেই। তিনি ব্যতীত বান্দাকে নিয়ন্ত্রণকারী কেউ নেই। তিনিই বান্দাকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে পরিচালনা করেন, পরিবর্তন করেন এবং প্রতিহত করেন।”[ত্বারিকুল হিজরাতাইন ওয়া বাবুস সা’আদাতাইন (১/৪৩১) থেকে সমাপ্ত]
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।