আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
প্রশ্ন: ফেতনা-ফাসাদ যেভাবে ছড়িয়ে চরম আকার ধারণ করেছে এর থেকে বাঁচার জন্য কিভাবে মদিনাতে আশ্রয় নেয়া যায়?
আলহামদু লিল্লাহ।.
আলহামদুলিল্লাহ।
জাবের (রাঃ) থেকে সাব্যস্ত হাদিসে এসেছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “মদিনা হচ্ছে কামারের হাপরের ন্যায়। মদিনা মরিচা (দুষ্ট লোক) বিদূরিত করে এবং ভালকে আরও উজ্জ্বল করে”।[সহিহ বুখারি (৬৭৮৫) ও সহিহ মুসলিম (১৩৮৩)]
ইমাম নববী বলেন:
হাদিসটির মর্মার্থ হচ্ছে- “যে ব্যক্তির ঈমান খালেস নয় সে মদিনা থেকে বেরিয়ে পড়বে। আর খালেস ঈমানদার মদিনাতে থেকে যাবে।”
আনাস বিন মালেক (রাঃ) এর হাদিসে সাব্যস্ত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “এমন কোন স্থান নেই যে স্থানে দাজ্জাল প্রবেশ করবে না; শুধু মক্কা ও মদিনা ছাড়া। এর প্রতিটি প্রবেশপথে ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে পাহারায় থাকবে। এরপর মদিনা মদিনাবাসী সহ তিনটি ঝাঁকুনি খাবে। এর মাধ্যমে আল্লাহ প্রত্যেক কাফের ও মুনাফিককে বের করে দিবেন।”।[সহিহ বুখারী (১৭৮২) ও সহিহ মুসলিম (১৬০)]
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “এমন এক যামানা আসবে যখন ব্যক্তি তার চাচাতো ভাই ও অপরাপর আত্মীয়স্বজনকে ডেকে বলবে, সচ্ছলতার দিকে আস, সচ্ছলতার দিকে আস। অথচ মদিনাতে থাকাটাই তাদের জন্য উত্তম যদি তারা জানত। ঐ সত্তার শপথ যার হাতে রয়েছে আমার প্রাণ! মদিনার প্রতি অনাগ্রহবশতঃ যে ব্যক্তি সেখান বেরিয়ে পড়বে আল্লাহ সেখানে তার বদলে আরও ভাল মানুষকে স্থান করে দিবেন। জেনে রাখ, মদিনা হচ্ছে- কামারের হাপরের ন্যায়। ততদিন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতদিন না মদিনা দুষ্ট লোকগুলোকে মদিনা থেকে বের করে দিবে; যেভাবে হাপর লোহার মরিচা দূর করে দেয়।”[সহিহ মুসলিম (১৩৮১)]
এ হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে, মদিনা কোন দুষ্ট লোককে সেখানে টিকতে দেয় না। মদিনা সবসময় দুষ্ট লোককে বের করে দিয়ে থাকে। আরও প্রমাণ করে যে, মদিনাতে দাজ্জাল প্রবেশ করবে না। আরও প্রমাণ করে যে, যেসব মদিনাবাসী অনাগ্রহবশতঃ মদিনা থেকে বেরিয়ে যায় মদিনাতে থাকাটাই তাদের জন্য উত্তম।
তবে এর অর্থ এ নয় যে, যারা মদিনার বাইরে আছে তারা সবাই ফিতনাগ্রস্ত। আল্লাহ তাআলা হকের ওপর ও হেদায়েতের উপর অবিচল থাকার জন্য কিছু কারণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন যেমনিভাবে পথভ্রষ্টতা ও বিভ্রান্তির জন্যেও কিছু কারণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যদিও গোটা বিষয়টি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর হাতে। তবে আল্লাহ সবকিছুর পিছনে কিছু কারণ রাখেন।
হেদায়েতের ওপর অটল থাকার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. আল্লাহকে অধিক স্মরণ করা, নামায ও কুরআন তেলাওয়াত করা।
২. সার্বক্ষণিক দুআ করা ও আল্লাহর কাছে অবিচলতার জন্য দুআ করা।
৩. ভাল লোকদের সাহচর্যে থাকা ও নেককারদের সাথে উঠাবসা করা।
৪. সংশয় ও ফিতনার স্থানগুলো থেকে দূরে থাকা।
৫. ইলমে দ্বীনের বর্মে সজ্জিত হওয়া।
৬. আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়া এবং আল্লাহর রাস্তায় যা কিছু দামী ও মূল্যবান সবকিছু উৎসর্গ করা।
আল্লাহ আপনাকে সকল নেককাজ করার তাওফিক দিন।