আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইলের মাধ্যমে একটি মেসেজ ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে। সে মেসেজটিতে এশিয়া মহাদেশে সংঘটিত ভূমিকম্পটির কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং উক্ত বক্তব্যকে ড. জগলুল আল-নাজ্জারের দিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। সেই মেসেজটির ভাষ্য হচ্ছে: ড. জগলুল আল-নাজ্জার: এশিয়ার ভূমিকম্পের কারণ পৃথিবীর ঘূর্ণন প্রক্রিয়ার স্খলন; পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি মন্থর হ্ওয়ার কারণে। যা প্রমাণ করে যে, পৃথিবী বিপরীত দিক থেকে ঘুরতে যাচ্ছে, কিয়ামতের বড় আলামতগুলোতে প্রবেশ করতে যাচ্ছে এবং সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হওয়ার প্রাকৃতিক দুর্যোগের সূচনা হতে যাচ্ছে। মেসেজটি প্রচার করুন এবং ইস্তিগফার করুন। এই মেসেজটির ব্যাপারে আপনাদের মতামত কি? এটি কি সঠিক?
আলহামদু লিল্লাহ।.
এই মেসেজে ড. জগলুল আল-নাজ্জারের দিকে যা সম্বন্ধিত করা হয়েছে তা সঠিক নয়। ড. নিজেই তা অস্বীকার করেছেন; যখন আল-জাজিরা স্যাটেলাইট চ্যানেলের ‘মিম্বারুল জাজিরা: আল-তাজহিজাত আল-আরাবিয়্যা লি মুওয়াজাহাতিল কাওয়ারিছ’ শিরোনামের প্রোগ্রামে তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল।
তিনি জবাবে বলেন: আল্লাহ্র কসম, প্রিয় ভাই, এটি সম্পূর্ণরূপে আদ্যোপান্ত অসঠিক। মনে হয় কিছু মানুষরূপী শয়তান আছে যারা আমার নামে এই ধরণের মিথাচারগুলো প্রচার করতে চায়। যেহেতু তারা জানে যে, আল্লাহ্র অনুগ্রহে মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাই মানুষ এই কথাকে বিশ্বাস করবে।
এক: আমি বহুবার বলেছি যে, আখিরাতের চিরায়ত প্রথা ও আইনকানুন দুনিয়ার চিরায়ত প্রথা থেকে সম্পূর্ণরূপে আলাদা।
দুই: আখিরাত; যেমনটি বর্ণনা করেছে কুরআনে কারীম; আকস্মিকভাবে এসে পড়বে। এটি বর্ণনা করতে গিয়ে আমাদের প্রভু বলেন: “আসমান ও জমিনে এটি একটি গুরুতর বিষয়। তোমাদের কাছে তা আকস্মিকভাবেই আসবে।”[সূরা আরা’ফ, আয়াত: ১৮৭]
তিন: পৃথিবীর ভর প্রায় ছয় হাজার বিলিয়ন মিলিয়ন মিলিয়ন টন। এই ভূমিকম্পটি যদিও শক্তিশালী হয় তবুও এটি পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি পরিবর্তন করতে কিংবা এটাকে ধীরগতি করে দিতে পারে না।
কেউ কেউ বলেছেন (এই কথাটি ইন্টারনেটে রয়েছে) যদি এই বিস্ফোরণটি পৃথিবীর ঘূর্ণন গতির বিপরীত দিকে ঘটত তাহলে সেটি পৃথিবীর ঘূর্ণনকে ধীর করে দিত। আর যদি পৃথিবীর গতিপথের দিকে ঘটত তাহলে পৃথিবীর আহ্ণিক গতিকে বাড়িয়ে দিত। গতি কমা বা বাড়া উভয় অবস্থায় সেটি প্রতি সেকেন্ডে এক মিলিয়নের একভাগের বেশি হত না। সুতরাং কিভাবে বলা যেতে পারে যে, এটি কিয়ামতের বড় আলামত। কিয়ামতের বড় আলামতগুলো আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুবই নিখুঁতভাবে নিধারণ করে গেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথাকে এড়িয়ে যে ক্ষেত্রে ইজতিহাদ করার কোন সুযোগ নেই।[সমাপ্ত]
ড. জগলুল অন্য কিছু সংলাপে ভূমিকম্পের বৈজ্ঞানিক কারণগুলো ব্যাখ্যা করেছেন এবং এর সাথে তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন যে, এটি গুনাহ ও পাপের শাস্তি। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “তোমাদের যে বিপদ আসে তা তোমাদের কৃতকর্মেরই ফল। তিনি তোমাদের অনেক অপরাধ ক্ষমাও করে দেন।”[আশ-শূরা, আয়াত: ৩০]
তিনি আরও বলেন: “মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও জলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে; তিনি চান তাদেরকে তাদের কতিপয় কর্ম (কর্মের শাস্তি) আস্বাদন করাতে, যাতে তারা ফিরে আসে।”[সূরা রুম, আয়াত: ৪১]
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।