আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
এক ব্যক্তি অপবিত্র অবস্থায় ফজরের নামাযের আযান দিয়েছেন। মুয়াজ্জিন অপবিত্রতার কথা ভুলে গেছেন; এমনকি তিনি আযান শেষ করে ফেলেছেন। এরপর তিনি বাসায় ফিরে এসে গোসল করে পুনরায় মসজিদে ফিরে আসেন এবং পবিত্র অবস্থায় নামাযের ইক্বামত দেন। এখন এর হুকুম কি? আমরা জানি যে, অপবিত্র অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করা হারাম।
আলহামদু লিল্লাহ।.
পবিত্রতাসহ আযান দেয়া মুস্তাহাব; ওয়াজিব নয়। পবিত্রতাসহ আযান দেয়া সম্পর্কে একটি হাদিস উদ্ধৃত হয়েছে: “ওযু অবস্থায় ছাড়া আযান দিবে না”।[সুনানে তিরমিযি (১৪৭)] এই কথাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উক্তি মারফু হাদিস হিসেবে বর্ণিত হয়েছে এবং আবু হুরায়রা (রাঃ) এর উক্তি মাওকুফ হাদিস হিসেবেও বর্ণিত হয়েছে। তবে উভয়টি দুর্বল; সহিহ নয়।[দেখুন: তামামুল মিন্নাহ (পৃষ্ঠা-১৫৪)]
ইবনে কুদামা (রহঃ) আল-মুগনী গ্রন্থে (১/২৪৮) বলেন: মুয়াজ্জিন লঘু অপবিত্রতা ও জানাবত উভয়টি থেকে পবিত্র হওয়া মুস্তাহাব।[সমাপ্ত] তিনি পূর্বোক্ত হাদিস দিয়ে দলিল পেশ করেছেন।
ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: ওযু ছাড়া আযান দেয়া কি জায়েয এবং জুনুবী (গুরু অপবিত্রতা) অবস্থায় আযান দেয়ার হুকুম কি?
জবাবে তারা বলেন: লঘু অপবিত্রতা কিংবা গুরু অপবিত্রতা নিয়ে আযান দিলে আযান সঠিক হবে। তবে উত্তম হচ্ছে উভয় প্রকার অপবিত্রতা থেকে পবিত্র হয়ে আযান দেয়া।[সমাপ্ত][ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা (৬/৬৭)]
জুনুবী ব্যক্তি মসজিদে অবস্থান করা নিষেধ। কিন্তু আযান কিংবা অন্য কোন প্রয়োজন হলে তিনি ওযু করে মসজিদে প্রবেশ করবেন। কাশ্শাফুল ক্বিনা গ্রন্থে (১/১৪৮) বলেন: জুনুবী (অপবিত্র) ব্যক্তির জন্য মসজিদে অবস্থান করা হারাম। যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “এবং (দৈহিক) অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না গোসল কর।”[সূরা নিসা, আয়াত: ৪৩] তবে ওযু করে নিয়ে অবস্থান করতে পারবে। যেহেতু আতা বিন ইয়াসার থেকে সাঈদ বিন মানসুর বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদের কিছু লোককে এমন দেখেছি যে, তারা ওযু করে নিয়ে অপবিত্র অবস্থায় মসজিদে বসে থাকতেন। আল-মুবদি গ্রন্থে বলেন: এর সনদ সহিহ। এবং যেহেতু ওযুকরণ অপবিত্রতাকে কিছুটা হালকা করে। ফলে কিছু নিষেধাজ্ঞা দূর হয়ে যায়। শাইখ তাক্বী উদ্দিন (শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া) বলেন: সেক্ষেত্রে মসজিদে ঘুমানো জায়েয হবে যেভাবে অন্যেরা সেখানে ঘুমায়।”[পরিমার্জিতভাবে সমাপ্ত][দেখুন: আল-শারহুল মুমতি’ (২/৫৭)]
যদি কোন মুয়াজ্জিন অপবিত্রতার কথা ভুলে গিয়ে মসজিদে প্রবেশ করে থাকে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। কেননা বিস্মৃতির কারণে তার ওজর গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “হে আমাদের প্রভু! আমরা যদি বিস্মৃত হই কিংবা ভুলে যাই আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না।” এবং সহিহ মুসলিমে (১২৬) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে উদ্ধৃত হয়েছে যে, আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “আমি তাই করেছি”। অর্থাৎ আল্লাহ্ তাআলা বিস্মৃত ব্যক্তি ও ভুলকারীকে ছেড়ে দিয়েছেন।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।