আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
'অমুকের নামায কবুল হয়নি' এমন কথা বলা কি আল্লাহর নামে কসম করার মধ্যে পড়বে?
আলহামদু লিল্লাহ।.
শরিয়তের বিধান মত যে আমল বাতিল হওয়া জানা যায়— কোন রুকন ছেড়ে দেয়ার কারণে কিংবা আমলটি শুদ্ধ হওয়ার কোন শর্ত লঙ্ঘিত হওয়ার কারণে কিংবা সংশ্লিষ্ট আমলকে বাতিল করে দেয় এমন কিছুতে লিপ্ত হওয়ার কারণে ইত্যাদি; এমন আমলকে দ্ব্যর্থহীনভাবে বাতিল বলা যাবে। যেমন যে ব্যক্তি ওয়াক্ত হওয়ার আগেই নামায পড়ে ফেলল কিংবা সূরা ফাতিহা ছাড়া নামায পড়ল কিংবা রমযান মাসের দিনের বেলায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করল। এ ধরণের বিষয়গুলো শরিয়তে বাতিল হওয়া সুবিদিত। তাই এ ধরণের আমল কবুল না হওয়ার কথা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা সহিহ।
পক্ষান্তরে, কোন নামাযী যদি নামাযের শর্তগুলো ও রুকনগুলো পরিপূর্ণ করে থাকে এবং বাহ্যিকভাবে উক্ত নামাযকে বাতিলকারী কোন কিছুতে লিপ্ত না হয় এ ক্ষেত্রে কেউ তার নামায মাকবুল (গ্রহণযোগ্য) বা গাইরে-মাকবুল (অগ্রহণযোগ্য) বলতে পারে না। কেননা কবুল হওয়া বা না-হওয়া নির্ভর করবে ব্যক্তির অন্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয় ইখলাস ও আল্লাহর ইবাদত পালনের অনুভূতির সাথে। আর এমন বিষয় আল্লাহ্ ছাড়া কেউ অবহিত নয়।
ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির আলেমগণ বলেছেন: আমল কবুল হওয়া বা না-হওয়ার বিষয়টি গায়েবী বিষয়; যা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কেউ জানে না।"[ফতোয়াসমগ্র (১২/১৯৫) থেকে সমাপ্ত]
তাই 'অমুকের নামায কবুল হয়নি' এমন কথা যে ব্যক্তি বলেছেন তিনি যদি তার নামাযের ব্যাপারে এমন কিছু জেনে হয়ে থাকেন যা নামাযকে বাতিল করে দেয়; যেমন জানলেন যে, সে ব্যক্তি অজু ছাড়া নামায পড়েছে কিংবা নামাযের কোন একটি রুকন ছেড়ে দিয়েছে কিংবা নামাযকে বাতিলকারী কোন কাজ করেছে: তাহলে এমন ব্যক্তির কথা সঠিক এবং এর জন্য তার কোন গুনাহ হবে না।
আর যদি নামায বাতিল হয়ে যায় এমন কিছু না জানে; কিন্তু তাকে শরিয়ত গর্হিত কোন কাজ করতে দেখে কিংবা অশ্লীল কথা বলতে দেখে নিশ্চিতভাবে বলে যে, তার নামায কবুল হয়নি; তবে এমন কথা বলা হারাম ও নাজায়েয। এটা আল্লাহ্র নামে মিথ্যা বলার অন্তর্ভুক্ত। কেননা কারো নামায কবুল হওয়া বা না-হওয়ার বিষয়টি আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানে না। আর আল্লাহ্র নামে মিথ্যা বলা কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। তবে এটি আল্লাহ্র নামে কসম করার মধ্যে পড়বে না। কেননা সে তো এই মর্মে কসম করেনি।
সহিহ মুসলিমে জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিস বর্ণনা করেছেন যে: "জনৈক ব্যক্তি বলল: আল্লাহ্র শপথ, তিনি অমুককে ক্ষমা করবেন না। অথচ নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন: কোন সে ব্যক্তি যে আমার নামে শপথ করেছে যে, আমি অমুককে ক্ষমা করব না। নিশ্চয় আমি অমুককে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং তোমার আমল বাতিল করে দিয়েছি।"[সহিহ মুসলিম (২৬২১)]
ইমাম নববী বলেন:
(হাদিসে উদ্ধৃত) يَتَأَلَّى অর্থ: শপথ করা। الْأَلْيَةُ শব্দের অর্থ: শপথ।[শারহুন নববী আলা মুসলিম (১৬/১৭৪) থেকে সমাপ্ত]
আল্লাহ্র কাছে আমল কবুলের শর্তগুলো জানতে পড়ুন: 14258 নং প্রশ্নোত্তর।
আরও জানতে পড়ুন: 8596 নং ও 81874 নং প্রশ্নোত্তর।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।