বৃহস্পতিবার 6 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 7 নভেম্বর 2024
বাংলা

রোযাদার কখন ইফতার করবেন?

প্রশ্ন

সূর্য ডোবার পরপরই ইফতার করা উত্তম; নাকি আকাশ থেকে আলো দূর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উত্তম?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

সুন্নত হচ্ছে- অবিলম্বে ইফতার করা; অর্থাৎ সূর্য ডোবার অব্যবহিত পরেই ইফতার করা। বরং তারাগুলো উদিত হওয়া পর্যন্ত দেরী করা ইহুদীদের কর্ম এবং শিয়া রাফেযি সম্প্রদায় তাদেরকে অনুসরণ করে আসছে। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে ভালভাবে সন্ধ্যা হওয়ার জন্য দেরী করা রোযাদারের জন্য বাঞ্ছনীয় নয়। এমনকি আযান শেষ হওয়া পর্যন্তও বিলম্ব করা ঠিক নয়। কারণ এর কোনটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ নয়।

সাহল বিন সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "মানুষ ততদিন কল্যাণে থাকবে যতদিন তারা অবিলম্বে ইফতার করবে"।[সহিহ বুখারী (১৮৫৬) ও সহিহ মুসলিম (১০৯৮)]

ইমাম নববী বলেন:

"এ হাদিসে সূর্য ডোবা নিশ্চিত হওয়ার পর অবিলম্বে ইফতার করার প্রতি উৎসাহ রয়েছে। যতদিন উম্মত এ সুন্নত রক্ষা করে যাবে ততদিন তারা সুশৃঙ্খল থাকবে এবং তারা কল্যাণে থাকবে। যদি তারা ইফতার করতে বিলম্ব করতে থাকে তাহলে সেটা তাদের বিশৃঙ্খলায় লিপ্ত হওয়ার আলামত।"[শারহে মুসলিম (৭/২০৮)]

ইবনে আবু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি ও মাসরূক আয়েশা (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বললাম: ইয়া উম্মুল মুমেনীন! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদের মধ্যে একজন অবিলম্বে ইফতার করেন ও অবিলম্বে নামায পড়েন। অপর একজন বিলম্বে ইফতার করেন ও বিলম্বে নামায আদায় করেন। তিনি বললেন: তাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি অবিলম্বে ইফতার করেন ও অবিলম্বে নামায পড়েন? আমরা বললাম: আব্দুল্লাহ্‌ অর্থাৎ ইবনে মাসউদ। তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবেই করতেন।[সহিহ মুসলিম (১০৯৯)]

সতর্কতা:

"এ যামানায় যে গর্হিত বিদাতগুলো প্রবর্তিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রমযান মাসে ফজর হওয়ার ২০ মিনিট আগে দ্বিতীয় আযান দেয়া এবং বাতিগুলো নিভিয়ে দেয়া; যে বাতিগুলো রোযা রাখতে ইচ্ছুক ব্যক্তির জন্য পানাহার নিষিদ্ধ হওয়ার আলামত হিসেবে রাখা হয়। যে ব্যক্তি এটি প্রবর্তন করেছে সে এই ধারণা থেকে করেছে যে, এতে ইবাদতের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা হবে। গুটি কতক মানুষ ছাড়া আর কাউকে বিষয়টি জানায় না। একই চিন্তা থেকে তারা সূর্য ডোবার কিছু সময় পরে আযান দেয়; তাদের ধারণা অনুযায়ী যাতে করে সময় হওয়াটা জোরদার হয়। এভাবে তারা ইফতার করতে দেরী করে ও সেহেরী খাওয়া আগে আগে শেষ করে সুন্নাহ্‌র বিপরীত আমল করে যাচ্ছে। তাই তাদের মাঝে কল্যাণ হ্রাস পেয়েছে এবং অকল্যাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আল্লাহ্‌ই সহায়।"[ফাতহুল বারী (৪/১৯৯)]

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব