আলহামদু লিল্লাহ।.
আমরা কিতাব ও সুন্নাহ-তে এমন কিছু পাইনি যা প্রমাণ করে যে, কোন পাপ ও গুনাহ-তে লিপ্ত হওয়ার কারণে আর-রহমানের আরশ কেঁপে উঠে। ব্যভিচার ও সমকামিতা জঘন্য পাপ ও কবিরা গুনাহ। কিন্তু এই পাপগুলো ঘটলে আরশ কেঁপে ওঠার কথা উদ্ধৃত হয়নি। শরিয়তের সহিহ ও সুস্পষ্ট দলিল ছাড়া কোন দাবী করা জায়েয নয়।
ইমাম যাহাবী বলেন:
“আরশ আল্লাহ্র অনুগত সৃষ্টি। আল্লাহ্ যখন চান তখনই এটি কেঁপে উঠে।”[সমাপ্ত][সিয়ার আলাম আন-নুবালা (১/২৯৭)]
তবে আমরা প্রশ্নকারী ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যে, এই গুনাহগুলোর ব্যাপারে আরশ কেঁপে উঠার চেয়ে কঠিন কথা এবং শ্রোতা আঁৎকে উঠার মত কথা উদ্ধৃত হয়েছে।
আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “আল্লাহর চেয়ে অধিক গাইরত (প্রতিরক্ষামূলক ঈর্ষা)-সম্পন্ন আর কোন সত্তা নেই। এ জন্যই তিনি প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সমস্ত অশ্লীলতাকে হারাম করেছেন। তেমনিভাবে আল্লাহর চেয়ে অধিক প্রশংসা পছন্দকারীও কেউ নেই। এ কারণেই তিনি নিজে নিজের প্রশংসা করেছেন।[সহিহ বুখারী (৪৬৩৪) ও সহিহ মুসলিম (২৭৬০)]
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “হে মুহাম্মাদের উম্মাতেরা! আল্লাহর চেয়ে অধিক গাইরত (প্রতিরক্ষামূলক ঈর্ষা)-সম্পন্ন আর কেউ নাই যে, তিনি তাঁর বান্দাকে বা বান্দীকে ব্যভিচার করতে দেখবেন। হে মুহাম্মাদের উম্মতগণ! আমি যা জানি যদি তোমরা তা জানতে তাহলে নিশ্চয় তোমরা কম হাসতে ও বেশী কাঁদতে।”[সহিহ বুখারী (৫২২১) ও মুসলিম (৯০১)]
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন:
“গাইরতের মধ্যে এমন ঘৃণা ও ক্রোধ থাকে যার মাধ্যমে ব্যক্তি যেটা থেকে গাইরত অনুভব করে সেটাকে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। আল্লাহ্ সুবহানাহু তাআলা সেটাকে ঘৃণা করেন এবং তিনি যা কিছু নিষিদ্ধ করেছেন সে সবকিছুকে তিনি ঘৃণা করেন; যেমনিভাবে তিনি যা কিছুর নির্দেশ দিয়েছেন সে সবকে তিনি ভালোবাসেন। গাইরত ঘৃণার শক্তিকে অনিবার্য করে। কারণ প্রত্যেক যে ব্যক্তি গাইরত অনুভব করে সে যা থেকে গাইরত অনুভব করে সেটাকে ঘৃণা করে। তবে প্রত্যেক যে ব্যক্তি কোন কিছুকে ঘৃণা করে সে ওটা থেকে গাইরত অনুভব করে না। সুতরাং গাইরত হলো সবিশেষ ও শক্তিশালী।”[ক্বায়িদা ফিল মাহাব্বাহ (২০০-২০১)]
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।