বৃহস্পতিবার 27 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 28 নভেম্বর 2024
বাংলা

বিদআতের সংজ্ঞা কী, তারাবীর নামাযের সংখ্যা বৃদ্ধির হুকুম কী?

প্রশ্ন

আপনি আমাদেরকে বিদআতের সংজ্ঞা ও একটি উদাহরণ দিতে পারবেন? এ বিষয়টি আমার কাছে খুব জটিল। তারাবীর নামায আট রাকাতের চেয়ে বেশি পড়া কি বিদআত হবে? যেহেতু রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চেয়ে বেশি পড়েননি।

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

বিদআত শব্দটির বুৎপত্তিগত অর্থ "কোন কিছু পূর্ব নমুনা ছাড়া শুরু করা" এর গণ্ডিতে আবর্তিত হয়। এ অর্থে কুরআনে কারীমে এসেছে- بديع السماوات والأرض (আসমানসমূহ ও জমিন পূর্ব নমুনা ছাড়া সৃষ্টিকারী)।[সূরা বাক্বারা, ২:১১৭]

শরিয়তের পরিভাষায় বিদআত হচ্ছে: "আল্লাহ্‌র ধর্মে এমন কিছু চালু করা যার সপক্ষে কোন আম দলিল; কিংবা খাস দলিল প্রমাণ বহন করে না"।

উদাহরণতস্বরূপ: বিদআতী যিকিরগুলো; যেমন-- শুধু 'আল্লাহু' 'আল্লাহু' 'আল্লাহু' যিকির করা। কিংবা 'হু' 'হু' 'হু' যিকির করা। এটি ধর্মের মধ্যে নতুন ও নব-প্রবর্তিত; যার দ্বারা আল্লাহ্‌র ইবাদত পালনের উদ্দেশ্য করা হয়। এ ধরণের আমলের পক্ষে কোন দলিল নেই; না এই যিকিরের পক্ষে খাস কোন দলিল; আর না আম কোন দলিল। যাকে উসুলুল ফিকহ-এর পরিভাষায় বলা হয় 'আল-মাসালিহ আল-মুরসালাহ'। সুতরাং এ ধরণের আমল বিদআত।

আর আট রাকাতের চেয়ে বেশি তারাবীর নামায পড়া: সহিহ গ্রন্থে সাব্যস্ত সুন্নাহ হচ্ছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিত রাতের বেলায় এগার রাকাত নামায পড়তেন: আট রাকাত নামায পড়তেন (অধিকাংশ সময় প্রতি দুই রাকাতে সালাম ফেরাতেন) দুই রাকাত দুই রাকাত করে। এরপর এক রাকাত বেজোড় (বিতির) নামায পড়তেন।

কখনও কখনও তের রাকাত নামায পড়তেন। এটি আয়েশা (রাঃ) ও ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর হাদিস থেকে সাব্যস্ত। যদি কেউ এর চেয়ে বেশি পড়ে তাহলে সেটা জায়েয। তবে, সুন্নাহ্‌র পরিপন্থী। জায়েয হওয়ার পক্ষে প্রমাণ করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: "রাতের নামায হচ্ছে-- দুই রাকাত, দুই রাকাত"। এখানে কোন সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়নি।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ