বৃহস্পতিবার 27 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 28 নভেম্বর 2024
বাংলা

বেহুশ হয়ে যাওয়ার কারণে কি রোযা বাতিল হয়ে যাবে?

প্রশ্ন

যে লোক রোযা রেখে বেহুশ হয়ে গেছেন তার রোযা কি বাতিল হয়ে যাবে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদের মাযহাবে যে ব্যক্তি রমযান মাসে বেহুশ হয়ে গেছেন তার অবস্থা দুটোর একটি থেকে মুক্ত নয়:

প্রথমত:

সারাদিন বেহুশ অবস্থায় থাকা। অর্থাৎ ফজরের আগে বেহুশ হওয়া এবং সূর্য ডোবার পরে পর্যন্ত বেহুশ থাকা।

এমন ব্যক্তির রোযা শুদ্ধ নয়। তাকে রমযানের পরে এই রোযাটির কাযা পালন করতে হবে।

তার রোযা শুদ্ধ না হওয়ার পক্ষে দলিল হলো: রোযা হচ্ছে নিয়তের সাথে রোযা-ভঙ্গকারী- বিষয়াবলী থেকে বিরত থাকা। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলা হাদিসে কুদসীতে রোযাদার সম্পর্কে বলেছেন: সে আমার কারণে তার খাদ্য, পানীয় ও যৌন চাহিদাকে ত্যাগ করে[সহিহ বুখারী (১৮৯৪) ও সহিহ মুসলিম (১১৫১)] এখানে বর্জন করাকে রোযাদারের দিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে। বেহুশ ব্যক্তির বর্জনকে তার দিকে সম্বন্ধিত করা যায় না।

আর কাযা আবশ্যক হওয়ার পক্ষে দলিল হলো আল্লাহ্‌ তাআলার বাণী: আর কেউ অসুস্থ থাকলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে।[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৫]

দ্বিতীয়ত:

দিবসের কিছু সময়- এমনকি এক মূহূর্তের জন্য হলেও- হুশ ফিরে পাওয়া। এমন ব্যক্তির রোযা শুদ্ধ হবে। চাই সে ব্যক্তি দিবসের প্রথম ভাগে, কিংবা শেষভাগে কিংবা মধ্যভাগে হুশ ফিরে পাক।

নববী (রহঃ) এ মাসয়ালায় আলেমদের মতভেদ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন:

সর্বাধিক সঠিক অভিমত হলো: এর কিছু অংশে হুশ ফিরে পাওয়া শর্ত।[সমাপ্ত]

অর্থাৎ বেহুশ ব্যক্তির রোযা শুদ্ধ হওয়ার জন্য দিবসের কিছু অংশে হুশ ফিরে পাওয়া শর্ত।

এ অবস্থায় তার রোযা শুদ্ধ হওয়ার পক্ষে দলিল হলো: যদি দিবসের কিছু অংশে সে হুশ ফিরে পায় তাহলে মোটের উপর রোযা ভঙ্গকারী বিষয়াবলী থেকে তার বিরত থাকা পাওয়া যায়।

[দেখুন: হাশিয়াতু ইবনে কাসেম আলার রওযিল মুরবি (৩/৩৮১)]

উত্তরের সারাংশ:

কোন ব্যক্তির যদি সারাদিন বেহুশ অবস্থায় কাটে- ফজরের উদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত- তার রোযা শুদ্ধ হবে না; কাযা পালন করা তার উপর ওয়াজিব হবে।

আর যদি দিবসের কিছু অংশে হুশ ফিরে পায় তাহলে তার রোযা শুদ্ধ হবে। এটি ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদের অভিমত। শাইখ ইবনে উছাইমীন এই অভিমতটিকে নির্বাচন করেছেন।

দেখুন: আল-মাজমু (৬/৩৪৬), আল-মুগনী (৪/৩৪৪) এবং আল-শারহুল মুমতি (৬/৩৬৫)

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব