Islam QA ওয়েবসাইটের জন্য দান করুন

আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্‌ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।

আল্লাহ তাআলার বাণী ‍"মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত চলে যায় না।"[সূরা নুর, আয়াত: ৬২] আমরা এই আয়াতের অনুসরণ কিভাবে করব?

03-12-2013

প্রশ্ন 129724

আল্লাহ তাআলা ইরাশাদ করেন: ‍"মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত চলে যায় না।"[সূরা নুর, আয়াত: ৬২] আমরা এ আয়াতটি কিভাবে অনুসরণ করব এবং নিজেদের জীবনে কিভাবে বাস্তবায়ন করব?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক: এ আয়াতে কারীমা নাযিল করে নবী করিম (সাঃ) এর সাথে সাহাবায়ে কেরামের আচার-ব্যবহার কীরূপ হবে এ সংক্রান্ত কিছু শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং মুনাফিকদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন হতে সাবধান করা হয়েছে; যারা কোন প্রকার সচ্চরিত্র বা শিষ্টাচারের কোনরূপ পরোয়া করে না। আল্লাহ তাআলা বলেন: "মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত চলে যায় না। যারা আপনার কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে, তারাই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। অতএব তারা আপনার কাছে তাদের কোন কাজের জন্যে অনুমতি চাইলে আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুমতি দিন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান।"[সূরা নুর, আয়াত: ৬২]

ইবনে কাছীর (রহঃ) বলেন: এখানে আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দাদেরকে একটি আদব শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি ঈমানদারগণকে কোন স্থানে প্রবেশের পূর্বে যেমন অনুমতি নেয়ার আদেশ দিয়েছেন তেমনি প্রস্থানের পূর্বে অনুমতি নেয়ার আদেশ দিয়েছেন। বিশেষতঃ তারা যদি সমষ্টিগত কোন কাজে রাসূলের (সাঃ) সাথে একত্রিত হয়, যেমন- জুমার নামায, ঈদের নামায, জামায়াতে নামায অথবা কোন পরামর্শসভা ইত্যাদিতে, সেক্ষেত্রে প্রস্থানের পূর্বে রাসূলের (সাঃ) নিকট অনুমতি চাওয়া বা পরামর্শ চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যে ব্যক্তি অনুমতি চায় সে পূর্ণ ঈমানদার।

এরপর আল্লাহ তাআলা রাসূল (সাঃ) কে আদেশ দিয়েছেন- মুমিনদের কেউ যদি অনুমতি চায় তিনি যেন তাকে অনুমতি প্রদান করেন। তাই তিনি বলেছেন: "আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুমতি দিন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান"

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন: "তোমাদের কেউ যদি শেষে এসে মজলিস যোগ দেয় তাহলে সে যেন সালাম দেয় এবং তোমাদের কেউ যদি মজলিস হতে উঠে যেতে চায় তাহলেও সে যেন সালাম দেয়। জেনে রেখো, প্রস্থানের সময় সালাম দেয়া আগমনের সময় সালাম দেয়ার চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। হাদীসটি ইমাম তিরমিযি বর্ণনা করে বলেছেন: হাসান। [তাফসীরে ইবনে কাছীর, পৃষ্ঠা- ৬/৮৮]

আল্লামা সা'দী (রহঃ) বলেন: এটি আল্লাহর পক্ষ হতে মুমিন বান্দাদের জন্য একটি দিকনির্দেশনা। মুমিনরা যদি কোন সমষ্টিগত বিষয়ে রাসূল (সাঃ) এর সাথে একত্রিত হয়, অর্থ্যাৎ যে বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা বা কল্যাণের দিক হলো সকলে উপস্থিত থাকা। যেমন- জিহাদ বা পরামর্শমূলক সভা ইত্যাদি সমষ্টিগত কাজের ক্ষেত্রে মঙ্গলজনক হলো সকলে উপস্থিত থাকা, কেউ বিচ্ছিন্ন না থাকা। অতএব আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি পূর্ণ ঈমানদার ব্যক্তি এ ধরনের কাজ রেখে অন্য কোন কাজে যাওয়ার আগে বা বাড়ী ফেরার আগে বা অন্য কোন প্রয়োজনে যাওয়ার আগে রাসূল (সাঃ) এর কাছ থেকে বা তাঁর প্রতিনিধির নিকট থেকে অনুমতি গ্রহণ করবে। আয়াতে অনুমতি ছাড়া না-যাওয়াকে ঈমানের অনিবার্য দাবী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং এ কর্মের জন্য ঈমানদারদের প্রশংসা করা হয়েছে। এভাবে মুমিনদেরকে রাসূল (সাঃ) এর সাথে ও দায়িত্বশীলের সাথে আদব রক্ষা করার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ এভাবে বলেছেন: " যারা আপনার কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে, তারাই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে।"

কিন্তু রাসূল (সাঃ) কি তাদেরকে অনুমতি প্রদান করবেন? রাসূল (সাঃ) কর্তৃক তাদেরকে অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে দুইটি শর্ত রয়েছে:

এক: অনুমতি প্রার্থনাকারীর একান্ত বিশেষ কোন কাজ বা প্রয়োজন থাকা। বিনা ওজরে অনুমতি চাইলে অনুমতি দেয়া যাবে না।

দুই: যার প্রয়োজন তাকে অনুমতি চাইতে হবে এবং রাসূল (সাঃ) কর্তৃক তাকে অনুমতি দেয়াটা কল্যাণের দাবী হতে হবে। এছাড়া অনুমতিদাতার ওপর কোন ক্ষতি যেন না বর্তায়। আল্লাহ বলেছেন: "অতএব তারা আপনার কাছে তাদের কোন কাজের জন্য অনুমতি চাইলে আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুমতি দিন।" অতএব কোন ঈমানদার তার কোন ওজরের কারণে যদি মজলিস ত্যাগের অনুমতি চায় কিন্তু রাসূলের (সাঃ) বিবেচনায় এই ব্যক্তির মজলিস ত্যাগ না করার মধ্যে সার্বিক কল্যাণ নিহিত থাকে তাহলে তিনি তাকে অনুমতি দেবেন না। তদুপরি কোন ব্যক্তি যদি অনুমতি চায় এবং উল্লেখিত দুইটি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে রাসূল (সাঃ) তাকে অনুমতি দিয়ে থাকেন তথাপি আল্লাহ তাঁর রাসূলকে (সাঃ) এই ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ হতে পারে এই ব্যক্তি অনুমতি গ্রহণ করে কোন কসুর করেছেন। এজন্য আল্লাহ তাআলা বলেছেন- "এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান"। অর্থ্যাৎ আল্লাহই তাদের গুনাহ খাতা ক্ষমা করেন এবং ওজরের কারণে অনুমতিগ্রহণকে বৈধ করে তাদের প্রতি দয়া করেছেন। [তাফসিরে সা'দী, পৃষ্ঠা- ৫৭৬]

দুই: এ যুগেও আমরা এ আয়াত হতে উপকৃত হতে পারি এবং কয়েকটি পদ্ধতিতে তা নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি:

কুরআনের তাফসির
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইটে দেখান