আলহামদু লিল্লাহ।.
যেহেতু আপনি স্মরণ করতে পারছেন না যে, আপনি রমযানের রোযা রাখেননি সুতরাং এ ধরণের সন্দেহ শয়তানের ওয়াসওয়াসা (কুমন্ত্রণা)। আপনার উপর কোন কিছু আবশ্যক নয়। আলেমগণ এ সংক্রান্ত একটি নীতি উল্লেখ করেছেন: কোন মুসলিম কোন একটি ইবাদত সমাপ্ত করার পর যদি সন্দেহের উদ্রেক হয় তার ইবাদত কি সহিহ; নাকি নয়? এ সন্দেহের দিকে ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না এবং ইবাদত পালন সহিহ।
শাইখ বিন উছাইমীন (রহঃ) বলেন:
এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি নীতি। ইবাদত সমাপ্ত করার পর সন্দেহ হলে ইবাদতের উপর সেটার কোন প্রভাব নেই। কিছু মানুষ নামায শেষ করে সালাম ফিরিয়ে ফেলার পর শয়তান এসে বলে: তুমি সূরা ফাতিহা পড়নি। তুমি একবারের বেশি সেজদা দাওনি। সে ব্যক্তিকে এ ধরণের সন্দেহ ছুড়ে মারতে হবে। কেননা ইবাদত সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার পর সন্দেহের কোন প্রভাব নেই।
অনেক মানুষ আছে খুবই সন্দেহপ্রবণ। সন্দেহ ছাড়া কোন ইবাদত পালন করতে পারে না। এ ব্যক্তিও সন্দেহকে ছুড়ে মারবেন; সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না। কেননা এটাই হচ্ছে কুমন্ত্রণা।[সমাপ্ত][দুরুস ওয়া ফাতাওয়াল হারাম আল-মাদানী (পৃষ্ঠা-১৫৩)]
এই আলোচনার ভিত্তিতে আপনার কাছে কোন শয়তান এসে যদি আপনাকে কুমন্ত্রণা দেয় যে, 'আপনি রোযা রাখতেন না' আপনি এ সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না এবং এটা নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত করবেন না।
এ সংক্রান্ত একটি মজার ঘটনা ইবনুল জাওযি (রহঃ) উল্লেখ করেছেন, তিনি বলেন:
"আমাদের কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, এক লোক আবু হাযেম এর কাছে এসে তাকে বলল: আমার কাছে শয়তান এসে বলে যে, তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ফেলেছ। এভাবে সে আমার মাঝে সন্দেহ তৈরী করে। তখন তিনি তাকে বললেন: তুমি কি তাকে তালাক দাওনি? সে বলল: না। তিনি বললেন: তুমি কি গতকাল আমার কাছে এসে তাকে তালাক দাওনি? সে বলল: আল্লাহ্র কসম আমি আজকের আগে আপনার কাছে আসি নাই এবং কোনভাবেই তাকে তালাক দিই নাই। তখন তিনি তাকে বললেন: যখন শয়তান তোমার কাছে আসবে তখন আমার কাছে যেভাবে কসম করেছ ঠিক শয়তানকেও সেভাবে কসম করে বলবে। এভাবে তুমি নিরাপদ থাকতে পারবে।"[আল-আযকিয়া (পৃষ্ঠা-৩১) থেকে সমাপ্ত]
এ ধরণের কুমন্ত্রণার সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা হল— আল্লাহ্র যিকির, আল্লাহ্র কাছে দোয়া করা ও শয়তান থেকে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। এরপর এসব কুমন্ত্রণাকে এড়িয়ে যাওয়া, এগুলোর প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করা। তাই এ চিন্তাগুলোকে অপনোদন করতে হবে। এ চিন্তাগুলোকে বাড়তে দেওয়া ও চলতে দেওয়া যাবে না। যদিও মানুষের মনের জন্য এটা করা কঠিন; কিন্তু এটাই হল এর চিকিৎসা।
গুরুত্বপূর্ণ বিধায় 62839 নং প্রশ্নোত্তরটিও পড়তে পারেন।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।