আলহামদু লিল্লাহ।.
আমরা এমন কোন অ্যাপ খুঁজে পাইনি।
তবে, সাধারণভাবে আমরা তাগিদ করছি যে, গায়েবের বিষয়ে আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানেন না। তাই কারো পক্ষে এটি জানা সম্ভবপর নয় যে, অমুকে আপনার গোপন বিষয় সংরক্ষণ করবে কিংবা আপনার প্রতি নিষ্ঠাবান থাকবে কিংবা আপনার খুশির কারণ হবে; যদি না সে একটি সময় পর্যন্ত তার সাথে চলে ও তার অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয় কিংবা আপনি নিজে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার অবস্থান সম্পর্কে সংবাদ দেন; যা থেকে ভবিষ্যত সম্পর্কে আন্দাজ করা যায়। তদুপরি এটি অনুমানের গণ্ডিতে থাকবে।
যেমন: আপনি যদি বলেন: এই বন্ধুকে দেখলে আমি খুশি হই এবং হারালে কষ্ট পাই।
এর মানে সে আপনার জন্য সুখ বয়ে আনে!
যদি আপনি বলেন: অমুকে আমার কষ্টে কষ্ট পায়, দুর্দিনে আমার পাশে দাঁড়ায়, বিপদাপদে আমাকে সাহায্য করে, আমাকে উপদেশ ও দিক-নির্দেশনা দিতে কার্পন্য করে না।
আপনাকে বলবে যে, সে আপনার প্রতি নিষ্ঠাবান; বাহ্যিক অবস্থার আলোকে। ভেতরের অবস্থা আল্লাহ্ই ভাল জানেন।
কিন্তু, যেমনটি আপনি দেখতে পাচ্ছেন এটি এক ধরণের অনর্থক কাজ, জানা বিষয়কে জানানো কিংবা গায়েবী বিষয়ে আন্দাজ ও ভবিষ্যদ্বাণী করা।
তাই এই অ্যাপগুলোর অবস্থা দুটো বিষয়ের কোন একটি থেকে মুক্ত নয়:
১। আপনি আপনার বন্ধু সম্পর্কে যে তথ্যগুলো দিয়ে থাকেন সেগুলোর উপর ভিত্তি করে আপনার বন্ধুর বৈশিষ্ট্য আপনাকে জানানো। এটি যে কারো পক্ষে করা সম্ভব। কিন্তু এটি বাহ্যিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে হুকুম। হতে পারে বাস্তবতা এর বিপরীত। কারণ কত ধোঁকাবাজ আছে যে বিশ্বস্ত বন্ধুর বেশ ধারণ করে এবং বিপরীতটাও রয়েছে।
এবং এমন কত বন্ধু রয়েছে যে যুগের পর যুগ তার সাথীর সাথে সদাচরণ করে এসেছে, ভাল ব্যবহার করেছে। এরপর তার বন্ধু কোন এক দোষ বা ঘটে যাওয়া কোন এক ভুলের জন্য তাকে দোষারোপ করে বসে। তার এ দোষটি ছাড়া অন্য কিছু উল্লেখ করে না। তাকে এই দোষে দোষারোপ করে; আর পূর্বের সদ্ব্যবহার ও ভাল আচরণের কথা ভুলে যায়।
২। এ অ্যাপগুলো আপনি যে তথ্যগুলো দিয়ে থাকেন সেগুলোর উপর নির্ভর করে না। বরং কেবল বন্ধুর নাম, বন্ধুর জন্মের সময়কাল, বন্ধুর ছবি কিংবা প্রোফাইল পিকচারের উপর নির্ভর করে আপনাকে তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অবহিত করে। এটি গণকীপনা ও গায়েবের জ্ঞান দাবী করা। এ ধরণের অ্যাপ ব্যবহার করা ও বিশ্বাস করা নাজায়েয। দলিল হচ্ছে সাফিয়্যা বিনতে আবু উবাইদ এর হাদিস তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোন এক স্ত্রীর কাছ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি কোন গণকের কাছে এসে তাকে কোন কিছু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে তার চল্লিশ দিনের নামায কবুল হবে না।”[সহিহ মুসলিম (২২৩০)]
এবং আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন গণক বা জ্যোতিষির কাছে যাবে এবং সে যা বলে তাতে বিশ্বাস করবে তাহলে সে ব্যক্তি মুহাম্মদের উপর যা নাযিল হয়েছে সেটাকে অস্বীকার করল।”[সুনানে তিরমিযি (১৩৫), সুনানে আবু দাউদ (৩৯০৪), সুনানে ইবনে মাজাহ (৬৩৯), আলবানী ‘সহিহুত তিরমিযি’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
ইতিপূর্বে 121011 নং প্রশ্নোত্তরে কিছু বৈজ্ঞানিক নীতিমালার ভিত্তিতে কোন ব্যক্তি চরিত্র বিশ্লেষণ করা ও জ্যোতিষিপনার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করার মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করা হয়েছে; সেটি পড়ুন।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।