আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
জমহুর আলেমের মতে, সতর ঢাকা নামায শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত। সেটি পুরুষের ক্ষেত্রে হোক অথবা নারীর ক্ষেত্রে হোক। নামাযে নারীর সতর কতটুকু তা জানতে 1046 নং প্রশ্নোত্তরটি দেখুন। এর দলিল হচ্ছে- আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থকেএ বর্ণিত হাদিস তিনি বলেন: “আল্লাহ তাআলা খিমার পরিধান করা ব্যতীত কোন প্রাপ্ত বয়স্কা নারীর নামায কবুল করেন না।”[সুনানে আবু দাউদ, সুনানে তিরমিযি, আলবানি সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
ইবনে আব্দুল বার (রহঃ) বলেন: “যারা সতর ঢাকাকে নামাযের ফরজ আমল বলেন তারা ইজমা দিয়ে দলিল দেন যে, যে ব্যক্তি সতর ঢাকতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও সতর না ঢেকে উলঙ্গ হয়ে নামায পড়ে তার নামায বাতিল।” তিনি আরও বলেন: “তারা সকলে এ ব্যাপারে ইজমা বা ঐকমত্য করেছেন।” সমাপ্ত [দেখুন আল-মুগনি (১/৩৩৭)]
দুই:
যে ব্যক্তি সতর ঢেকে নামায পড়ছিলেন কিন্তু অনিচ্ছাকৃতভাবে সতরের কিছু অংশ অনাবৃত হয়ে গেছে এবং সে সাথে সাথে ঢেকে নিয়েছে তাহলেও তার নামায শুদ্ধ হবে। সে ব্যক্তি পুরুষ হোক অথবা নারী হোক। সতরের সে অংশ সাধারণ অঙ্গ হোক অথবা বিশেষ অঙ্গ হোক। উন্মুক্ত অংশ কম হোক অথবা বেশি হোক।
কাশশাফুল কিনা (১/২৬৯) গ্রন্থে বলেন:
অনিচ্ছাকৃতভাবে সতরের কিছু অংশ উন্মুক্ত হয়ে গেলে নামায বাতিল হবে না। যদি সতরের কিছু অংশ দীর্ঘ সময়ের জন্য উন্মুক্ত থাকে তবুও। আর যদি সতরের বড় একটা অংশ স্বল্প সময়ের জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রেও নামায বাতিল হবে না। যদি বাতাসে তার সতর থেকে আচ্ছাদন সরে যায়, এমনকি এতটুকু সরে যায় দীর্ঘসময় যতটুকু উন্মুক্ত রাখা যায় না; এমনকি এতে করে যদি তার সম্পূর্ণ সতর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে কিন্তু সে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমলে কাছির (বেশি কাজ) না করে ঢেকে নিতে পারে তাহলেও তার নামায বাতিল হবে না। কারণ সময়ের স্বল্পতা সামান্য সতর বেশি সময় ধরে উন্মুক্ত থাকার সাথে তুল্য। যদি সতর ঢাকতে গিয়ে আমলে কাছির (বেশি কাজ) এ লিপ্ত হতে হয় তাহলে নামায বাতিল হয়ে যাবে। সমাপ্ত।
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন: যদি সতরের বেশি অংশ সামান্য সময়ের জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ে তাহলে নামায বাতিল হবে না। যেমন- ‘কেউ নামাযের রুকুতে ছিলেন, এর মধ্যে তীব্র বাতাসে কাপড় সরে গেল এবং তাৎক্ষণিকভাবে সে কাপড় ঠিক করে নেয়’ গ্রন্থকারের মতে এ ব্যক্তির নামায বাতিল। কিন্তু সঠিক মতানুযায়ী: নামায বাতিল হবে না। যেহেতু তিনি অতিদ্রুত কাপড়টি পরে নিতে পেরেছেন এবং তিনি তো ইচ্ছাকৃতভাবে সতর খোলেন নি। আল্লাহ তাআলা বলেন: “তোমরা সাধ্যানুযায়ী আল্লাহকে ভয় কর।”[সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৬] শরহে আল-শরহুল মুমতি (২/৭৫)]
এ আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়: আপনার নামায সহিহ। যেহেতু তাৎক্ষণিকভাবে সতর ঢেকে নিয়েছেন সুতরাং আপনাকে এ নামায পুনরায় পড়তে হবে না।
আল্লাহই ভাল জানেন।