আলহামদু লিল্লাহ।.
উদ্ভিদজাত গোশত এমন একটি খাদ্য যা বিভিন্ন উদ্ভিদ; যেমন সয়াবিন থেকে তৈরী করা হয়। এর থেকে এমন একটি খাদ্য তৈরী করা হয় যা দেখতে গোশতের মত।
সুতরাং উদ্ভিদজাত গোশত প্রকৃতপক্ষে উদ্ভিদ। তবে বিশেষ পদ্ধতিতে এটাকে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে যার ফলে এক পর্যায়ে এটি প্রাণীর গোশতের সাথে সাদৃশ্য অর্জন করেছে।
এই গোশত হালাল; যেহেতু এটি হালাল উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন করা হয়। সকল উদ্ভিদ হালাল; কেবলমাত্র এর মধ্যে যেগুলো ক্ষতিকর উদ্ভিদ কিংবা নেশাকর উদ্ভিদ সেগুলো ছাড়া। এটি আলেমদের সর্বসম্মত অভিমত।
ইবনে হাযম (রহঃ) বলেন:
“আলেমগণ মতৈক্য করেছেন যে, সকল শস্যদানা, ফল, ফুল, গাছের আঠা এবং এগুলোর নির্যাস থেকে উৎপন্ন সকল শরবত যদি নাবিয (নেশাকর) না হয় যেমনটি আমরা পানীয় অধ্যায়ে উল্লেখ করেছি... এবং বিষ না হয় তাহলে সেটা হালাল।”[মারাতিবুল ইজমা (পৃষ্ঠা-১৫০)]
উমরানী (রহঃ) বলেছেন:
“পক্ষান্তরে প্রাণী ছাড়া অন্য কিছু: এর মধ্যে যা কিছু নাপাক সেটা হালাল নয়। কেননা তা খারাপের অর্ন্তভুক্ত। অনুরূপভাবে পবিত্র হলেও যা ক্ষতিকর সেটা খাওয়া নাজায়েয। যেহেতু আল্লাহ্তাআলা বলেন: “তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে হত্যা করো না”।[সূরা নিসা, ৪: ২৯]
আর যেটা ক্ষতিকর নয় তা হালাল; যেমন শস্যদানা, ফলফলাদি; যেহেতু আল্লাহ্তাআলা বলেন: “তিনি তাদের জন্য ভাল জিনিসগুলো হালাল করেন”।[সূরা আরাফ, ৭: ১৫৭] এগুলো সবই ভাল জিনিসের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এই মর্মে ইজমা (মতৈক্য) সংঘটিত হয়েছে; এতে কোন মতানৈক্য নেই।”[আল-বায়ান (৪/৫১১) থেকে সমাপ্ত]
বিভিন্ন জিনিসের ক্ষেত্রে বিবেচ্য হলো এর হাকীকত (আসল পরিচয়); নাম নয়। মানুষ সেটাকে গোশত নাম দিক কিংবা উদ্ভিদ নাম দিক। কেননা উদ্ভিদজাত গোশতের আসল পরিচয় হল এটি উদ্ভিদ।
ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন:
“বিবেচ্য হবে হাকীকত (আসল পরিচয়)। এর উপরই নির্ভর করতে হবে। এর ভিত্তিতে হালাল ও হারামের বিধান আরোপ হবে। আল্লাহ্তাআলা বাহ্যিক রূপ কিংবা মানুষ এটাকে শব্দের যে মোড়ক দেয় সেটার দিকে তাকান না; বরং তিনি তাকান বস্তুগুলোর হাকীকত (আসল পরিচয়) ও সত্তার দিকে।”[আ’লামুল মুওয়াক্কিয়ীন (৫/১৭৫-১৭৬)]
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।