বৃহস্পতিবার 20 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 21 নভেম্বর 2024
বাংলা

গর্ভবতী নারীকে কি নির্দিষ্ট কিছু সূরা পড়ার পরামর্শ দেয়া যায়; যাতে করে সন্তানটি বুদ্ধিমান হয়

প্রশ্ন

আমি গর্ভবতী। আমি আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করছি যাতে তিনি আমাকে একটি নেককার সন্তান দেন। আমি এক লোকের কাছে শুনেছি যে, গর্ভবতী নারীকে প্রতিদিন নিয়মিত সূরা মারিয়াম তেলাওয়াত করার পরামর্শ দেয়া হয়; যাতে করে তার প্রসব সহজ হয় এবং প্রতিদিন নিয়মিত সূরা ইউসুফ পড়ার পরামর্শ দেয়া হয় যাতে করে বাচ্চা সুন্দর হয়। এর সমর্থনে কি কোন সহিহ হাদিস আছে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

গর্ভবতী নারী কুরআনের নির্দিষ্ট কোন সূরা পড়লে সেটি সন্তান বুদ্ধিমান হওয়া বা সুন্দর হওয়া— এ রকম কোন প্রভাব ফেলে মর্মে শরিয়তে কোন কিছু আছে বলে আমরা জানি না। যে ব্যক্তি দলিল-প্রমাণ ছাড়া এমন কিছু দাবী করেছে সে সীমালঙ্ঘন করেছে এবং আল্লাহ্‌র নামে এমন কিছু বলেছে যা সে নিজেই জানে না।

কিছু কিছু ব্লগে কোন কোন গবেষক ছাত্রের অভিজ্ঞতা হিসেবে যা প্রচার করা হয় এর উপর নির্ভর করা উচিত নয়। কেননা বৈজ্ঞানিক গবেষণা ধর্তব্য হয় না যদি সেটা গবেষণা-পদ্ধতি নির্ভর না হয় এবং এমন পরিসংখ্যানসমূহের ভিত্তিতে না হয়; যে পরিসংখ্যানগুলো ব্যাপক নমুনায়ন, বহু ক্রমধাপ এবং হেতু ও ফলাফলকে সীমাবদ্ধকারী এককভিত্তিক। এটি সম্পন্ন করার জন্য দীর্ঘ সময় বহুবছর প্রয়োজন; সাধারণ কিছু তথ্য নয় বা ভুলের নিকটবর্তী ফলাফলগুলো নয়। বরং যে ফলাফলগুলো সত্য কি মিথ্যা সেটাই জানা যায় না।

নিঃসন্দেহে গোটা কুরআনে কারীম কল্যাণ, বরকত ও পূন্যবহ। কিন্তু তার মানে এ নয় যে, আমরা যা কিছু নিজেদের জন্য কিংবা আমাদের সন্তানদের জন্য পেতে চাই সেটাকে কুরআনের দিকে সম্পৃক্ত করব। আল্লাহ্‌ তাআলা তার পবিত্র কিতাবে বলেন: তিনিই মাতৃগর্ভে যেভাবে চান তোমাদের আকৃতি গড়েন। তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি পরাক্রমশালী, পরম প্রাজ্ঞ।[সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৬]

কুরতুবী (রহঃ) বলেন: অর্থাৎ সুশ্রী, অসুশ্রী, কালো, সাদা, লম্বা, খাটো, বিকলাঙ্গ বা নিখুঁত ইত্যাদি হওয়া।[আল-জামে লি-আহকামিল কুরআন (১/৯২৭)]

তদুপরি গর্ভবতী নারীর জন্য কুরআনে কারীম তেলাওয়াত ও এর শ্রবণের অভ্যাস করায় কোন আপত্তি নেই। যেহেতু চিকিৎসা-শাস্ত্রের গবেষণাগুলোতে গর্ভস্থিত সন্তান বর্হিজগতের শব্দ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া সাব্যস্ত হয়েছে। সুতরাং সে শব্দটি যদি হয় কুরআনে কারীম তেলাওয়াতকারীর শব্দ; আশা করা যায় এর মাধ্যমে এই ভ্রূণের জন্য কল্যাণ ও বরকত রয়েছে। তবে এই কল্যাণটা কি সেটা নির্দিষ্ট করা যাবে না।

আমরা প্রশ্নকারী বোনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তার নিশ্চিত হওয়ার উদ্যোগের জন্য এবং শরয়ি দলিল সন্ধানের জন্য। আমরা আশা করব বর্তমান যামানার সকল মুসলিমের এটাই হবে মানহাজ।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব