রবিবার 21 জুমাদাল ছানী 1446 - 22 ডিসেম্বর 2024
বাংলা

জনৈক খ্রিস্টানের কিছু সংশয় যেগুলোর মাধ্যমে তিনি কুরআনের কিছু আয়াতের উপর অপবাদ দিচ্ছেন এই দাবী করে যে, সেগুলোতে সবিরোধিতা রয়েছে

প্রশ্ন

এক খ্রিস্টান আমার কাছে এই প্রশ্নটি উত্থাপন করেছে। আমি এর উত্তর চাই; যাতে করে উত্তরটি তাকে পাঠাতে পারি: ‘তোমরা কেন তোমাদের জীবন ও ভাগ্যকে এমন এক বইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট করছ যে বই সবিরোধিতা ও ভুলে ভরা’ -সেই ব্যক্তি কুরআনকে উদ্দেশ্য করছে-?! এই খ্রিস্টান আমার সাথে যোগাযোগ করে এবং বলে: তোমরা বল, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ বলেন:

وَلَوْ كَانَ مِنْ عِنْدِ غَيْرِ اللَّهِ لَوَجَدُوا فِيهِ اخْتِلَافًا كَثِيرًا

যদি কুরআন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসত তাহলে তারা এতে অনেক বৈপরীত্য দেখতে পেত)। বাস্তবিকপক্ষে এই বই বৈপরীত্য ও সবিরোধিতায় ভরপুর। এ কারণে সেটি আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নয়। তোমাকে আমি কিছু উদাহরণ দিচ্ছি: আমরা সূরা আশ-শু’আরাতে পাই, ফেরাউন পানিতে ডুবে ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু সূরা ইউনুসে পাই:

فَالْيَوْمَ نُنَجِّيكَ بِبَدَنِكَ لِتَكُونَ لِمَنْ خَلْفَكَ آيَةً

সুতরাং আজ আমরা তোমার দেহটি রক্ষা করব যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক)। তাহলে কোনটা সঠিক?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

কুরআনে কারীমকে সমালোচনা করা ও কুরআনের আয়াতগুলোর উপর সবিরোধিতা ও বৈপরীত্যের অপবাদ দেয়ার এটি প্রথম চেষ্টা নয়। ইতিপূর্বে এমন অনেক অপবাদ অতিবাহিত হয়েছে। যতজন এই চেষ্টা করেছে তারা সকলে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা যে কিতাবের প্রতি ঈমান রাখি যে, সেটি আমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ সেটাতে যদি এমন কিছু বিকৃতি, সবিরোধিতা ও সংঘর্ষ থাকত যা ইহুদী ও খ্রিস্টানদের কিতাবে রয়েছে তাহলে আমরাই সর্বপ্রথম এই কিতাবকে অস্বীকারকারী হতাম। কিন্তু কিভাবে সেটি ঘটতে পারে; অথচ আল্লাহ্‌ তাআলা নিজেই কিয়ামত পর্যন্ত এই কিতাবকে সংরক্ষণ করার দায়িত্ব নিয়েছেন। যাতে করে এই কিতাবে যে সত্য ও সঠিক তথ্য রয়েছে তা মানুষের উপর দলিল হিসেবে কায়েম হয়।

যদি সেই খ্রিস্টান ব্যক্তি কিংবা অন্য যে কোন ব্যক্তি কুরআনে কারীমে বৈপরীত্য না থাকার পক্ষে যে আয়াতটি উদ্ধৃত করা হয়েছে সেই আয়াতটির প্রথম অংশ পড়ত ও চিন্তা-ভাবনা করে দেখত তাহলে এ ধরণের সংশয়গুলো একত্রিত করা ও সেগুলোর উপর ভিত্তি করে কুরআনের উপর অপবাদ আরোপ করার প্রয়োজন হত না। প্রাচীন আরব ও সমকালীন আরবদের মধ্যে অনেক বিদ্যান, বুদ্ধিমান, সাহিত্যিক ও বাগ্মী রয়েছে। তারা কুরআন পড়ে। কিন্তু তাদের কারো কাছে এই ধরণের আয়াত সাংঘর্ষিক প্রতীয়মান হয়নি। হতে পারে তারা কোন আয়াতের কোন কোন অর্থ নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু কুরআনের আয়াতগুলো নিয়ে তাদের কেউ যখন একটু চিন্তা ভাবনা করে কিংবা তাফসির বিশারদ ও ইলমে পারদর্শী আলেমদের শরণাপন্ন হয় কত দ্রুতই না সেই প্রশ্নগুলো নিরসন হয়ে যায়। সেই খ্রিস্টান ব্যক্তি প্রথমে যেই আয়াতটি উদ্ধৃত করেছে সেটির প্রথমাংশে আল্লাহ্‌ তাআলা কুরআনের আয়াতসমূহকে অনুধাবনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে বলেন: তবে কি তারা কুরআনকে গভীরভাবে অনুধাবন করে না? এরপর তিনি বলেন: যদি কুরআন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসত তাহলে তারা এতে অনেক বৈপরীত্য দেখতে পেত।[সূরা নিসা, আয়াত: ৮২] তাই সেই ব্যক্তি যদি কুরআনের আয়াতগুলোকে অনুধাবত করত তাহলে আয়াতগুলোর মধ্যে বেশি বা কম কোন বৈপরীত্যই পেত না। যদি সেই ব্যক্তি ইলমে পারদর্শী আলেমদের বক্তব্য জানার চেষ্টা করত তাহলে দেখতে পেত যে, কুরআনে কোন সংঘর্ষ ও সবিরোধিতা নাই।  

তাই প্রত্যেক যে ব্যক্তির কুরআন পঠন অনুধাবন সহকারে হয় না; বিশেষতঃ সে যদি কুপ্রবৃত্তির অনুসারী হয়; তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সে কুরআনের আয়াতগুলোর মাঝে এমন কিছু পায় যেটাকে তার কাছে সংঘর্ষ ও সবিরোধিতা মনে হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ও বাস্তবে এই সংঘর্ষ ও সবিরোধিতা ঐ ব্যক্তি মস্তিষ্কে ও বুঝে; মুহকাম (চূড়ান্ত) আয়াতসমূহে নয়। প্রত্যেক যে ব্যক্তি কোন বই লেখে বইয়ের শুরুতে এই কৈফিয়ত লেখা ছাড়া তার কোন উপায় থাকে না যে যিনি এতে কোন কসুর পান তিনি যেন লেখককে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে এবং প্রত্যেক যে ব্যক্তি এতে কোন ভুল পায় সে যেন ভুলটি গোপন রেখে লেখককে অবহিত করে। এ কারণে দেখা যায় যে, ভাল লেখকরা এক বই একাধিক বার প্রিন্ট করেন। তাই বইয়ের উপরে লেখা থাকে “বর্ধিত ও পরিমার্জিত”। পক্ষান্তরে আল্লাহ্‌র কিতাবের প্রথম পৃষ্ঠা যে ব্যক্তি খুলবে সেখানে সে এ বাণীটি পাবে: আলিফ লাম মীম। এই তো কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নাই।[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১-২] এই ধরণের সূচনা অনেক বুদ্ধিমান খ্রিস্টান মানুষের ইসলাম গ্রহণের কারণ হয়েছে; যখন তারা দেখতে পেল যে, এটি দুর্দান্ত সূচনা। যা প্রমাণ করে যে, এই অক্ষরগুলো যিনি বলেছেন তিনি মানুষ নন। কারণ কোন মানুষ কোন বই রচনা করলে তার পক্ষে এ ধরণের কথা বলা সম্ভবপর নয়। এরপর কুরআনের আয়াতগুলো পড়ার পর তারা জানতে পারে যে, এটি মহাবিশ্বের প্রভুর বাণী। এ কারণে ত্রুটিটি হচ্ছে অনুধাবনে কসুর করা। এ আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, আয়াতের প্রথমাংশে অনুধাবনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করাটা অযথা নয়; বরং সুমহান গূঢ় রহস্যের কারণে।

ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন: “এ কারণে আল্লাহ্‌ তাআলা তাঁর বান্দাদেরকে কুরআন অনুধাবনের দিকে আহ্বান জানিয়েছেন। কেননা প্রত্যেক যে ব্যক্তি কুরআন অনুধাবন করে তার অনুধাবন এমন জরুরী (অপ্রতিরোধ্য) জ্ঞান ও সুদৃঢ় একীন অনিবার্য করে যে, এই কুরআন হক্ব ও সত্য। বরঞ্চ প্রত্যেক হক্বের চেয়ে বেশি হক্ব এবং প্রত্যেক সত্যের চেয়ে বেশি সত্য। যিনি এই কুরআনকে নিয়ে এসেছেন তিনি সৃষ্টিকুলের মধ্যে সর্বাধিক সত্যবাদী, সর্বাধিক নেককার, সর্বাধিক ইলম, আমল ও জ্ঞানধারী। যেমনটি আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন: তবে কি তারা কুরআনকে গভীরভাবে অনুধাবন করে না? এরপর আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: যদি কুরআন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসত তাহলে তারা এতে অনেক বৈপরীত্য দেখতে পেত।[সূরা নিসা, আয়াত: ৮২] তিনি আরও বলেন: তবে কি তারা কুরআন অনুধাবন করে না?! নাকি অন্তরগুলোর ওপর তালা ঝুলছে?[সূরা মুহাম্মদ, আয়াত: ২৪] তাই যদি অন্তরগুলো থেকে তালাগুলো উঠে যেত তাহলে অন্তরগুলো কুরআনের সত্যগুলোকে আলিঙ্গন করত, ঈমানের আলোতে আলোকিত হত এবং জরুরী ইলম (অপ্রতিরোধ্য জ্ঞান) উপলব্ধ হত যে, এটি আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে আগত, বাস্তবিকই তিনি এ বাণী বলেছেন এবং তাঁর দূত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম এ বাণীকে তাঁর দূত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পোঁছে দিয়েছেন।”[মাদারিজুস সালেকিন (৩/৪৭১ ও ৪৭২) থেকে সমাপ্ত]

কুরআনে কারীম সংঘর্ষ ও সবিরোধিতা থেকে মুক্ত; যে ব্যক্তি কুরআন অনুধাবন করে তার জন্য। বাহ্যতঃ যা সবিরোধী সেটি সমন্বয়যোগ্য বৈপরীত্য। অবস্থা, কাল বা ব্যক্তির ভিন্নতা ভেদে বৈপরীত্য। অতি সহজেই আয়াতগুলোর মধ্যস্থিত এ ধরণের বৈপরীত্যের মাঝে সমন্বয় করা যায়। কোন গবেষক যখন এটি করতে সক্ষম হন তখন প্রজ্ঞাপূর্ণ আল্লাহ্‌র কিতাবের মুজেজার অপর একটি দিক তার কাছে ফুটে ওঠে।

আবু বকর আল-জাস্‌সাস (রহঃ) বলেন: বৈপরীত্য তিনপ্রকার:

“১। সবিরোধী বৈপরীত্য। সেটা হলো দুটো বিষয়ের একটি অপরটির বাতুলতা দাবী করা।

২। মানগত বৈপরীত্য: সেটা হলো কোন অংশ বাগ্মিতাপূর্ণ; আর কোন অংশ নিম্নমানের পতিত। এই দুই প্রকার বৈপরীত্য কুরআনে নেই। এ ধরণের বৈপরীত্য না থাকাটা কুরআনের মোজেজার একটি প্রমাণ। কেননা সকল বাগ্মী ও বাকপটুদের কথা যখন দীর্ঘ হয় –কুরআনের লম্বা সূরাগুলোর মত- তখন এটি মানগত বৈপরীত্য থেকে মুক্ত হয় না।

৩। সমন্বয়যোগ্য বৈপরীত্য: সেটা হলো ভালত্বের দিক থেকে সর্বাংশ অভিন্ন হওয়া। উদাহরণতঃ বিভিন্ন প্রকার পঠনপদ্ধতি বৈপরীত্য, আয়াতের সংখ্যার বৈপরীত্য এবং রহিতকারী ও রহিতের সাথে সম্পৃক্ত বিধিবিধানের বৈপরীত্য।

আয়াতে কারীমাতে সত্যের পক্ষে যতভাবে প্রমাণ পেশ করা যায় সেটার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে; যে সত্যকে বিশ্বাস করা ও যে সত্য মোতাবেক আমল করা অনিবার্য।[আহকামুল কুরআন (৩/১৮২)]

সমন্বয়যোগ্য বৈপরীত্যের সবচেয়ে প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে (খুব সম্ভব সেই খ্রিস্টান ব্যক্তি এটি জানতে পারলে এটাকেও সবিরোধিতার তালিকায় যোগ করবে): আল্লাহ্‌ তাআলা তাঁর কিতাবে আদমকে সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেছেন। একবার উল্লেখ করেছেন তিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন পানি থেকে। আবার বলেছেন: মাটি থেকে। তৃতীয় স্থানে বলেছেন: কাদা থেকে। চতুর্থ স্থানে বলেছেন: ঠনঠনে মাটি থেকে। এটি কি সবিরোধিতা বা সংঘর্ষ?! বরঞ্চ এটি হলো আদমের সৃষ্টির বিভিন্ন ধাপ। ইতিপূর্বে 4811 নং প্রশ্নোত্তরে আমরা বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। যদি এটি সবিরোধিত হত তাহলে এ কারণে কুরআন নাযিলের সময়কালের কাফের আরবী ভাষাবিদ ও অলঙ্কারবিদগণ সবার আগে অপবাদ আরোপ করত। কিন্তু তারা নিজেরা নিজেদের বিবেকবুদ্ধির মর্যাদা রক্ষা করেছে যে, তারা অলঙ্কারিক দিক ও ব্যঞ্জনাগত দিক থেকে কুরআনের সমালোচনা করেনি। বরং কুরআনের আয়াতসমূহ তাদের অনেকের ইসলাম গ্রহণের কারণ হয়েছিল। কেনইবা হবে না অথচ কুরআন হচ্ছে: “মানুষের জন্য দিশারী”।

দুই:

সুতরাং এই অপবাদ বিতর্ককারীর কি ধারণা যে, ‘ফেরাউন পানিতে ডুবে মরেছে’ আল্লাহ্‌ কর্তৃক এই সংবাদ দেয়া এবং তাঁর বাণী: সুতরাং আজ আমরা তোমার দেহটি রক্ষা করব যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। আর অনেক মানুষই আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি একেবারে অমনোযোগী।[সূরা ইউনুস, আয়াত: ৯২] এতদুভয়ের মধ্যে বৈপরীত্য ও সবিরোধিতা রয়েছে? বড় অদ্ভুত ব্যাপার। ফেরাউন ডুবেছে এটি এমন নিশ্চিত বিষয় যাতে কোন সন্দেহ নেই। এই ডুবার মাধ্যমে তার মৃত্যু ঘটেছে এবং সে স্পষ্টভাবে ধ্বংস হয়েছে। এই খ্রিস্টানের কাছে প্রশ্ন: প্রত্যেক যে ব্যক্তি সমুদ্রে ডুবে মারা যায় তাকে কি হাঙ্গর মাছে খেয়ে ফেলে কিংবা সমুদ্রের অতলে তার লাশ কি হারিয়ে যায়? নাকি কেউ ডুবে মরতে পারে এবং পরে তার লাশ ভেসে উঠতে পারে ও পঁচে যাওয়া ও নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারে? এই প্রশ্নের নিশ্চিত জবাব হচ্ছে: দ্বিতীয়টি। সমুদ্রে পড়ে বিমান দুর্ঘটনা, জাহাজের দুর্ঘটনা কিংবা অন্য কোন দুর্ঘটনায় সমুদ্রে ডুবে নিহত হওয়া মানুষদের ক্ষেত্রে বাস্তবে তো এটাই দেখা যাচ্ছে। আমরা সেই ব্যক্তিকে বলব: ফেরাউনের ক্ষেত্রেও ঠিক এটাই ঘটেছে। সে সমুদ্রে ডুবে মরেছে। আল্লাহ্‌ তাআলা তার লাশকে সমুদ্রে ভাসিয়ে তুলেছেন; যাতে করে বনী ইসরাইলেরা নিশ্চিত হতে পারে যে, সে মরেছে। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রজ্ঞা। যেহেতু এই মিথ্যুক দাবী করেছিল যে, সে তাদের সর্বোচ্চ প্রভু! তাই ঐ লাশটি মানুষদের কাছে প্রকাশ করাটা উপযুক্ত ছিল— যাতে করে তারা এই মিথ্যা দাবীদার প্রভুর প্রকৃত অবস্থা নিশ্চিত হতে পারে এবং যাতে করে দুর্বল লোকদের মন থেকে ভয় কেটে যায়। যারা বিশ্বাস করতে পারে যে, ফেরাউন আত্মগোপন করেছে; কিছুদিন পর ফিরে আসবে। ধার্মিকতা ও বুদ্ধির দুর্বলতায় আক্রান্ত কত মানুষ এ ধরণের বিশ্বাস রাখে!

আয়াতে نُنَجِّيك এর অর্থ হলো: উপরে তোলা ও ভাসানো। এটি "النجو" শব্দমূল থেকে উৎপন্ন। আর যদি শব্দটি النجاة (বাঁচা) অর্থেও হয় তদুপরি এই বাঁচা দ্বারা মৃত্যু থেকে বাঁচা উদ্দেশ্য নয়। বরঞ্চ সমুদ্রের অতলে দেহটি হারিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচা উদ্দেশ্য কিংবা তাকে সমুদ্রের প্রাণীরা খেয়ে ফেলা থেকে বাঁচা উদ্দেশ্য। যদি সেই খ্রিস্টান ব্যক্তি আল্লাহ্‌র বাণীর এই অংশটি نُنَجِّيْكَ بِبَدَنِكَ (আমরা তোমার দেহটি রক্ষা করব) অনুধাবন করতেন তাহলে বুঝতে পারতেন যে, এ ধরণের বাক্য মৃত্যু থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় না। বরং দেহটি বাঁচার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যদি ফেরাউনের বাঁচা উদ্দেশ্য হত তাহলে এখানে ‘তোমার দেহটি  উল্লেখ করা অনর্থক হত। আর অনর্থক কিছু উল্লেখ করা আল্লাহ্‌র বাণীর বৈশিষ্ট্য নয়।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব