বৃহস্পতিবার 18 রমজান 1445 - 28 মার্চ 2024
বাংলা

যেই রুমে কুরআনগ্রন্থ রাখা আছে সেই রুমে স্ত্রী সহবাস করা

প্রশ্ন

যেই রুমে কুরআন রাখা আছে সেই রুমে স্ত্রী সহবাস করার হুকুম কি? যেহেতু অন্য কোন রুম নেই। এটি কি কুরআনকে অপমান করা গণ্য হবে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

কুরআনকে সম্মান করা ও সংরক্ষণ করা আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে আলেমদের মাঝে কোন মতভেদ নেই।

ইমাম নববী বলেন: “আলেমগণ কুরআনগ্রন্থকে সংরক্ষণ করা ও সম্মান করার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে একমত।”[আল-মাজমু (২/৮৫)]

দুই:

আলেমগণ এমন কিছু অবস্থা উল্লেখ করেছেন যেগুলোতে কুরআনের অপমান হয়; যেমন:

কুরআনকে মাটিতে ফেলে রাখা কিংবা নাপাক জায়গায় ফেলে রাখা কিংবা কুরআনকে পা দিয়ে মাড়ানো কিংবা কুরআনের উপর থুথু ফেলা... ইত্যাদি যে অবস্থাগুলো আল্লাহ্‌র বাণীকে অপমান করার প্রমাণবহ।

এ অবস্থাগুলোর মধ্যে যে রুমে কুরআনগ্রন্থ রাখা আছে সেই রুমে স্ত্রী সহবাস করার অবস্থাটি নেই; চাই কারো অন্য কোন রুম থাকুক কিংবা না থাকুক।

উল্লেখ্য, অধিকাংশ মুসলমানদের ঘরে কুরআনগ্রন্থ থাকে। আলেমদের যতগুলো কিতাব দেখা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে এতে আমরা আলেমদের এমন কোন কথা পাইনি যে, যেই রুমে কুরআনগ্রন্থ আছে সেই রুমে স্ত্রী সহবাস করা যাবে না। যদি এমন কিছু হত তাহলে অবশ্যই তারা তাদের গ্রন্থসমূহে সেটি উল্লেখ করতেন ও বর্ণনা করতেন; যেমনিভাবে তারা অন্যান্য বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন। যেহেতু তারা এমন কিছু বা এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কিছু উল্লেখ করেননি সুতরাং এটি মূল (জায়েয) অবস্থাকে আঁকড়ে ধরা ও মূলের উপর বহাল থাকার প্রমাণ বহন করে।

এক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করেছিল”: আমি যে বিছানায় স্ত্রীকে সহবাস করি সেই বিছানার উপর মুসহাফ (কুরআনগ্রন্থ) রাখতে পারব? তিনি বললেন: হ্যাঁ।”[এই উক্তিটি আব্দুর রাজ্জাক তাঁর মুসান্নাফ নামক গ্রন্থে (২/১৭১) বর্ণনা করেছেন এবং ইবনে আবু দাউদ আল-মাসাহিফ নামক গ্রন্থে (৪৪৬) বর্ণনা করেছেন]

পড়ুন: আব্দুল্লাহ্‌ ইউসুফ আল-জুদাঈ এর লিখিত: আল-মুকাদ্দিমাত আল-আসাসিয়্যাহ ফি উলুমিল কুরআন; পৃষ্ঠা- ৫৬২ ও তৎ পরবর্তী।

স্থায়ী কমিটির আলেমগণকে প্রশ্নকারীর মাসয়ালাটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি মাসয়ালা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: “বেড রুমে কুরআন ঢুকানো, ঘুমানোর আগে বিছানায় কুরআন পড়া ও একটি লোহার বক্সের ভেতরে বেড রুমে কুরআন রাখা কি জায়েয?

জবাবে তারা বলেন: কুরআনে কারীম বেড রুমে ও বিছানার উপর পড়া জায়েয; যদি ব্যক্তি জুনুবী (সহবাস উত্তর গোসল ফরয হওয়ার অবস্থা) না হয় এবং মুসহাফ থেকে পড়াকালে ওযু অবস্থায় থাকে।”[সমাপ্ত]

যদি বেড রুমে মুসহাফ রাখা হারাম হত; অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর মিলন যেই রুমে সংঘটিত হয়ে থাকে; তাহলে আলেমগণ সেটা উল্লেখ করতেন এবং সেটি এড়িয়ে যেতেন না। যেহেতু এটি প্রায়শঃ ঘটে এবং এটি মানুষের জানা প্রয়োজন।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব