আলহামদু লিল্লাহ।.
ঈদের সময় তাকবীর দেয়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত সুন্নত। তাকবীর দেয়া অন্য সকল ইবাদতের মত একটি ইবাদত। এ ইবাদত পালনের ক্ষেত্রেও ঠিক যেভাবে করতে বলা হয়েছে এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা অপরিহার্য; পদ্ধতির মধ্যে নতুন কিছু চালু করা নাজায়েয। বরং হাদিস ও আছারে যা করতে বলা হয়েছে এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।
আমাদের ফিকাহবিদ আলেমগণ বর্তমান যামানার সম্মিলিত তাকবীর নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে তারা এর সপক্ষে দলিলের সমর্থন পাননি বিধায় এটাকে বিদআত ফতোয়া দিয়েছেন। কারণ যে কোন ইবাদত নতুনভাবে চালু করা কিংবা কোন ইবাদতের পদ্ধতি ও বৈশিষ্ট্যের মধ্যে নতুনত্ব আনা নিন্দিত বিদআত হিসেবে গণ্য এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বানী: "যে ব্যক্তি আমাদের এ বিষয়ের মধ্যে (ধর্মের মধ্যে) নতুন কিছু চালু করে যা তাতে নেই সেটা প্রত্যাখ্যাত"।[সহিহ মুসলিম (১৭১৮)]
শাইখ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিম (রহঃ) বলেন:
"মসজিদে হারামে যে তাকবীর দেয়ার প্রচলন ছিল সেটা হচ্ছে‑ এক বা একাধিক ব্যক্তি যমযম পানির ছাউনির বসে তাকবীর দিতেন এবং মসজিদে অবস্থিত অন্য লোকেরা তাদের সাথে সাড়া দিত। তখন শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহঃ) এই পদ্ধতিতে তাকবীর দেয়ার বিরোধিতা করলেন এবং বললেন: এটি বিদআত। শাইখের উদ্দেশ্য হচ্ছে‑ এই বিশেষ পদ্ধতিটা বিদআত। তাকবীর দেয়া বিদআত নয়। তখন মক্কার কিছু সাধারণ লোক এতে ক্ষুব্ধ হল। কেননা তারা এভাবে তাকবীর দিতে অভ্যস্ত ছিল। এ কারণে তিনি এই ফ্যাক্সটি পাঠিয়েছিলেন যে, এ পদ্ধতিতে তাকবীর দেয়ার কোন দলিল আমি জানি না। কেউ যদি এ পদ্ধতিতে তাকবীর দেয়াকে শরিয়তসম্মত দাবী করেন তাহলে তার কর্তব্য দলিল-প্রমাণ পেশ করা। যদিও এটি একটি মামুলি মাসয়ালা। এ মাসয়ালাকে নিয়ে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তা কাম্য ছিল না।"[সমাপ্ত]
[মাজমুউ ফাতাওয়াল আল্লামা মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিম (৩/১২৭, ১২৮)]
শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহঃ) বলেন:
আল্-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মদ, ওয়া আলা আলিহি ওয়া আসহাবিহি আজমাঈন; পর সমাচার:
সম্মানিত ভাই শাইখ আহমাদ বিন মুহাম্মদ জামাল (আল্লাহ্ তাকে তাঁর সন্তুষ্টিমূলক কাজের তাওফিক দিন) একটি স্থানীয় পত্রিকায় ঈদের নামাযের আগে সম্মিলিতভাবে তাকবীরকে বিদআত গণ্য করে মসজিদগুলোতে সেটা নিষিদ্ধ করার বিষয়টির প্রতি বিস্ময় প্রকাশ করে যে প্রবন্ধ লিখেছেন তা আমি পড়েছি। শাইখ আহমাদ সে প্রবন্ধে দলিল পেশ করার চেষ্টা করেছেন যে, সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেয়া বিদআত নয়; এ তাকবীর দিতে বাধা দেওয়া জায়েয হবে না। কিছু কিছু লেখক শাইখ আহমাদের মতকে সমর্থন করেছেন। যারা প্রকৃত বিষয়টি জানে না, তাদের কাছে ধোঁয়াশা থেকে যাওয়ার আশংকা থেকে আমরা এ বিষয়টি পরিষ্কার করতে চাই। চাঁদ রাতে, ঈদুল ফিতরের নামাযের আগে, যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকে ও তাশরিকের দিনগুলোতে তাকবীর দেয়ার মূল বিধান হলো‑ এটি এ মহান সময়গুলোতে শরিয়তসম্মত এবং এ আমলের রয়েছে মহান ফযিলত। আল্লাহ্ তাআলা ঈদুল ফিতর‑এর সময় তাকবীর দেয়া সম্পর্কে বলেন: “তিনি চান– তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি যে, তোমাদেরকে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন সে জন্য 'তাকবির' উচ্চারণ কর (আল্লাহর মহত্ব ঘোষণা কর)। আর যাতে তোমরা শোকর কর।”[সূরা বাকারা ২: ১৮৫] যিলহজ্জের দশদিনে তাকবীর দেয়া সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন‑ "যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে। এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা কিছু রিযিক হিসেবে দিয়েছেন সেগুলোর উপর নির্দিষ্ট কিছু দিনে আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করতে পারে।"[সূরা হজ্জ, আয়াত: ২৮] তিনি আরও বলেন: "গুটি কয়েক দিনে আল্লাহকে স্মরণ কর...”[সূরা বাকারা, আয়াত: ২০৩]
নির্দিষ্ট কিছু দিনে ও গুটি কয়েক দিনে শরিয়ত অনুমোদিত যিকিরের মধ্যে রয়েছে‑ সাধারণ তাকবীর ও বিশেষ তাকবীর। যেমনটি পবিত্র সুন্নাহ্-তে ও সালাফদের আমলে পাওয়া যায়। শরিয়ত অনুমোদিত এ যিকিরের পদ্ধতি হল: প্রত্যেক মুসলিম নিজে নিজে একাকী উচ্চস্বরে তাকবীর দিবেন যাতে করে অন্যেরাও শুনতে পেয়ে তাকে অনুসরণ করে এবং তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিবেন। পক্ষান্তরে, সম্মিলিত বিদআতী তাকবীর হল‑ দুইজন বা ততোধিক ব্যক্তি সমস্বরে তাকবীর দেওয়া; একই সুরে সবাই একত্রে শুরু করা ও একত্রে শেষ করা।
এ আমলের কোন ভিত্তি নেই ও দলিল নেই। তাকবীরের এ পদ্ধতিটি বিদআত; এর সপক্ষে আল্লাহ্ কোন দলিল নাযিল করেননি। যে ব্যক্তি এমন পদ্ধতির তাকবীরকে অস্বীকার করেন তিনি হক্বপন্থী। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করে যাতে আমাদের অনুমোদন নেই সেটা প্রত্যাখ্যাত।"[সহিহ মুসলিম] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন: "তোমরা নব-প্রবর্তিত বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকবে। কারণ প্রত্যেক নব-প্রবর্তিত বিষয় বিদআত। প্রত্যেক বিদআতই‑ ভ্রান্তি।” সম্মিলিত তাকবীর হচ্ছে‑ নব-প্রবর্তিত বিষয়। সুতরাং তা বিদআত। মানুষের কোন কাজ যখন পবিত্র শরিয়ত বিরোধী হয় তখন তাতে বাধা দেওয়া ও এর বিরোধিতা করা ওয়াজিব। কেননা ইবাদতগুলো হচ্ছে‑ তাওক্বিফি; অর্থাৎ ইবাদতের ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর দলিলের বাইরে কোন বিধান আরোপ করা যাবে না। আর মানুষের উক্তি বা দৃষ্টিভঙ্গি যদি শরয়ি দলিলের বিরোধী হয় তাহলে সেটা কোন দলিল হতে পারে না। অনুরূপভাবে 'মাসালিহ মুরসালাহ' এর দ্বারা কোন ইবাদত সাব্যস্ত হয় না। বরং ইবাদত সাব্যস্ত হয় সরাসরি কুরআন-সুন্নাহ্ বা অকাট্য ইজমা‑ এর দলিলের ভিত্তিতে।
শরিয়তসম্মত হচ্ছে‑ শরয়ি দলিলের ভিত্তিতে সাব্যস্ত শরিয়তসম্মত পদ্ধতিতে তাকবীর দেওয়া; আর তা হল‑ ব্যক্তিগতভাবে তাকবীর দেওয়া।
সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেওয়া থেকে বারণ করেছেন সৌদি আরবের প্রাক্তন গ্র্যান্ড মুফতি শাইখ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিম (রহঃ) এবং তিনি এ বিষয়ে ফতোয়া দিয়েছেন। সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেয়াকে বারণ করে আমার পক্ষ থেকেও একাধিক ফতোয়া ইস্যু হয়েছে এবং এটাকে বারণ করে সৌদি আরবের ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকেও ফতোয়া ইস্যু হয়েছে।
শাইখ হুমুদ বিন আব্দুল্লাহ্ আত্-তুওয়াইজিরি (রহঃ) সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেওয়া থেকে নিষেধ করে একটি পুস্তিকা রচনা করেছেন। সেটি ছাপা হয়েছে ও সুলভ। ঐ পুস্তিকাতে সম্মিলিতভাবে তাকবীর গর্হিত হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট দলিল-প্রমাণ উল্লেখ করা হয়েছে।
শাইখ আহমাদ ভাই মীনাতে সকল মানুষের উপস্থিতিতে উমর (রাঃ) কর্তৃক এ আমল করার যে দলিল দিয়েছেন সেটা দলিল নয়। কেননা মীনাতে উমর (রাঃ) এর আমল কিংবা অন্যান্য মানুষেরর আমল সম্মিলিত তাকবীর নয়। বরং সেটা শরিয়ত অনুমোদিত তাকবীর। কারণ উমর (রাঃ) সুন্নাহ্ অনুযায়ী আমল করতে গিয়ে ও মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে তাকবীর দিতেন তখন লোকেরাও তাকবীর দিত। প্রত্যেকেই নিজের মত তাকবীর দিত। এতে এমন কিছু ছিল না যে, লোকেরা উমর (রাঃ) এর সাথে একত্রে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই সুরে উচ্চস্বরে তাকবীর দিত; যেমনটি বর্তমানে সম্মিলিত তাকবীর দেওয়ার ক্ষেত্রে করা হয়। অন্যান্য সলফে সালেহীন থেকেও তাকবীরের ক্ষেত্রে যা বর্ণনা করা হয় তারা সকলে শরয়ি পদ্ধতিতেই তাকবীর দিতেন। যে ব্যক্তি এর বিপরীত দাবী করবে তার কর্তব্য হল দলিল উল্লেখ করা। অনুরূপভাবে ঈদের নামাযের জন্য আহ্বান, তারাবীর আহ্বান, কিয়ামুল লাইলের আহ্বান, বিতিরের আহ্বান ইত্যাদি প্রত্যেকটি বিদআত; যেগুলোর পক্ষে কোন দলিল নেই। আমরা এমন কোন আলেম জানি না যিনি বলেছেন যে, ভিন্ন ধরণের কিছু ভাষ্যে আহ্বান রয়েছে (তিনি বলতে চাচ্ছেন সুন্নাতে উদ্ধৃত)। যদি কেউ এমন কিছু দাবী করে তার কর্তব্য হল‑ দলিল উল্লেখ করা। মূল অবস্থা হল‑ দলিল না থাকা। অতএব, কুরআন, সহিহ সুন্নাহ ও আলেমগণের ইজমা ব্যতিরেকে কোন বাচনিক ইবাদত বা কর্মগত ইবাদত চালু করা জায়েয নয়; যেমনটি ইতিপূর্বেও বলা হয়েছে‑ এ কারণে যে শরিয়তের সাধারণ দলিল নতুন প্রবর্তন থেকে বারণ করে ও সাবধান করে। যেমন আল্লাহ্ তাআলা বলেন: "এদের কি এমন কতকগুলি অংশী (উপাস্য) আছে যারা এদের জন্য বিধান দিয়েছে এমন ধর্মের, যার অনুমতি আল্লাহ এদেরকে দেননি?"[সূরা শুরা, ৪২:২১] এছাড়াও রয়েছে এ আলোচনার শুরুতে উল্লেখিত হাদিসদ্বয়। এর আরও রয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বানী: "যে ব্যক্তি আমাদের এ বিষয়ের মধ্যে (ধর্মের মধ্যে) নতুন কিছু প্রবর্তন করে যা তাতে নেই‑ সেটা প্রত্যাখ্যাত।"[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম] এবং জুমার খোতবাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: "পর সমাচার, সর্বোত্তম বাণী হচ্ছে‑ আল্লাহ্র কিতাব। সর্বোত্তম আদর্শ হচ্ছে‑ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ। সর্বনিকৃষ্ট বিষয় হচ্ছে‑ নব-প্রবর্তিত বিষয়গুলো। আর প্রত্যেকটি নব-প্রবর্তিত বিষয় গোমরাহী।"[সহিহ মুসলিম এবং এ অর্থবোধক হাদিস ও আছার অনেক][সমাপ্ত]
[মাজমুউ ফাতাওয়া বিন বায (১৩/২০-২৩]
স্থায়ী কমিটির ফতোয়াতে (৮/৩১০) এসেছে যে, "প্রত্যেকে নিজে নিজে উচ্চস্বরে তাকবীর দিবে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেয়া সাব্যস্ত হয়নি। অথচ তিনি বলেছেন: "যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করে যাতে আমাদের অনুমোদন নেই সেটি প্রত্যাখ্যাত।"
স্থায়ী কমিটির ফতোয়াতে (৮/৩১১) আরও এসেছে যে‑
"একই সুরে সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেয়া শরিয়তসম্মত নয়; বরং বিদআত। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, "যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করে যাতে আমাদের অনুমোদন নেই সেটি প্রত্যাখ্যাত"। সাহাবী, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ীগণ তথা সলফে সালেহীনদের কেউ এটি করেননি। তাঁরাই হচ্ছেন‑ আদর্শ। আমাদের কর্তব্য হল‑ অনুসরণ করা; অভিনব কিছু চালু করা নয়।"[সমাপ্ত]
স্থায়ী কমিটির ফতোয়াতে (২৪/২৬৯) আরও এসেছে যে, "সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেয়া বিদআত। কেননা এর পক্ষে কোন দলিল নেই। অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করে যাতে আমাদের অনুমোদন নেই সেটি প্রত্যাখ্যাত"। উমর (রাঃ) যা করেছেন তাতে সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেওয়ার পক্ষে কোন দলিল নেই। বরং তাতে রয়েছে যে, উমর (রাঃ) নিজে তাকবীর দিতেন এবং তাঁর তাকবীর দেওয়া শুনলে লোকেরাও তাকবীর দিত। প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে তাকবীর দিত। তারা সম্মিলিতভাবে তাকবীর দিত না।"[সমাপ্ত]
স্থায়ী কমিটির ফতোয়াতে (২/২৩৬, দ্বিতীয় ভলিউম) আরও এসেছে যে,
"একই সুরে সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেওয়া সেটা নামাযের শেষে হোক কিংবা নামায ছাড়া অন্য সময়ে হোক‑ শরিয়তসম্মত নয়। বরং সেটি ধর্মের মধ্যে অভিনব বিদআত। শরিয়তসিদ্ধ হচ্ছে‑ বেশি বেশি আল্লাহ্র যিকির করা তথা 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' পড়া, 'তাসবিহ' পড়া, 'তাকবীর' বলা, কুরআন তেলাওয়াত করা, বেশি বেশি 'ইস্তিগফার' করা; তবে সম্মিলিতভাবে নয়। সেটা আল্লাহ্র এ বাণীর নির্দেশ পালনার্থে: "হে ঈমানদারগণ! তোমরা বেশী করে আল্লাহ্কে স্মরণ কর। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর তাসবীহ পড়"।[সূরা আহযাব, ৩৩: ৪১-৪২] এবং এ বাণীর নির্দেশ পালন করে: "অতএব তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব"।[সূরা বাক্বারা, ২: ১৫২] এবং যিকিরের প্রতি উৎসাহদানকারী এ হাদিসের উপর আমল করে: "আমি 'সুবহানাল্লাহ্' বলা, 'আল্-হামদু লিল্লাহ্' বলা, 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলা, 'আল্লাহু আকবার' বলা যা কিছুর উপর সূর্য উদিত হয়েছে সেসব কিছুর চেয়েও আমার কাছে অধিক প্রিয়"।[সহিহ মুসলিম] এবং এ হাদিসের উপর আমল করে: "যে ব্যক্তি 'সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহি' একশ বার বলবে তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হবে; এমনকি তার গুনাহ্ যদি সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয় তবুও"।[সহিহ মুসলিম ও সুনানে তিরমিযি; ভাষ্য তিরমিযির] এবং এ উম্মতের পূর্বসূরিদের অনুকরণে। যেহেতু তাঁদের কাছ থেকে এভাবে সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেয়ার বর্ণনা আসেনি। এভাবে সম্মিলিতভাবে তাকবীর দেয়‑ বিদআতপন্থী ও কুপ্রবৃত্তির অনুসারীরা। অথচ যিকির একটা ইবাদত। ইবাদতের ক্ষেত্রে মূলনীতি হল‑ তাওকীফ তথা শরিয়তপ্রণেতা যে নির্দেশ দিয়েছেন সেটার সীমানাতে থেমে যাওয়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ধর্মীয় বিষয়ে অভিনব কিছু প্রবর্তন করা থেকে সাবধান করেছেন। তিনি বলেছেন: "যে ব্যক্তি আমাদের এই বিষয়ের মধ্যে (ধর্মের মধ্যে) এমন কিছু চালু করে যা তাতে নেই সেটা প্রত্যাখ্যাত"।[সমাপ্ত]
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।