বৃহস্পতিবার 20 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 21 নভেম্বর 2024
বাংলা

মুসাফির ব্যক্তির নামায আদায়ের পদ্ধতি

প্রশ্ন

আমি এক মাসের জন্য দেশের বাইরে সফরে যাব। আমি নামায আদায় করার সহজ পদ্ধতি জানতে চাই?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

আপনি যে স্থানের উদ্দেশ্য সফরে যাবেন সেখানে যদি আপনি চারদিনের বেশি সময় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাহলে সে স্থানে প্রবেশ করার সাথে সাথে আপনি মুকীম হয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে একজন মুকীম ব্যক্তির ওপর যা যা আবশ্যক আপনার ওপরও তা তা আবশ্যক; অর্থাৎ নামাযগুলো পূর্ণসংখ্যায় আদায় করতে হবে; কসর (সংখ্যাহ্রাস) করা যাবে না।

আপনি সফরের পথিমধ্যে নামাযগুলো কসর (সংখ্যাহ্রাস) করে আদায় করবেন। যখন আপনি সে স্থানে পৌঁছবেন তখন আপনি নামাযগুলো পূর্ণসংখ্যায় আদায় করবেন; কেননা আপনার হুকুম মুকীমের হুকুম।

স্থায়ী কমিটির ফতোয়াতে এসেছে (৮/৯৯): "যে সফরের মধ্যে সফরের ছাড়গুলো গ্রহণ করা শরিয়তসম্মত সেটা হচ্ছে প্রচলিত প্রথায় যেটাকে সফর বলা হয়। এর পরিমাণ হচ্ছে— প্রায় ৮০ কিঃমিঃ। যে ব্যক্তি এ পরিমাণ বা এতোর্ধ দূরত্ব অতিক্রমের উদ্দেশ্য নিয়ে সফরে বের হবে সে ব্যক্তি সফরের ছাড়গুলো গ্রহণ করতে পারবেন; যেমন- মোজার ওপর তিনদিন তিনরাত মাসেহ করা, দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করা ও নামাযগুলো কসর (সংখ্যাহ্রাস) করে আদায় করা, রমযানের রোযা না রাখা। এ মুসাফির ব্যক্তি যদি কোন স্থানে চারদিনের বেশি সময় অবস্থান করার নিয়ত করেন তাহলে তিনি আর সফরের ছাড়গুলো গ্রহণ করতে পারবেন না। যদি তিনি চারদিন বা এর চেয়ে কম সময় অবস্থানের নিয়ত করেন তাহলে সফরের ছাড়গুলো গ্রহণ করতে পারবেন। আর যে মুসাফির কোন এক স্থানে অবস্থান করছেন কিন্তু তিনি জানেন না যে, কখন তার প্রয়োজন শেষ হবে এবং অবস্থানের জন্য কোন সময় তিনি নির্দিষ্ট করেননি তিনিও সফরের ছাড়গুলো গ্রহণ করতে পারবেন; এমনকি সে অবস্থান অনেক দীর্ঘ হলেও। এক্ষেত্রে স্থলপথে সফর ও জল পথে সফরের মাঝে কোন পার্থক্য নেই।"   

দুই:

নামায একত্রিত করণ: মুসাফিরের জন্য যোহর ও আসরের নামায একত্রে আদায় করা এবং মাগরিব ও এশার নামায একত্রে আদায় করা জায়েয; সুবিধা অনুযায়ী সেটা প্রথম নামাযের ওয়াক্তে হোক কিংবা দ্বিতীয় নামাযের ওয়াক্তে হোক। তবে, যদি প্রত্যেকটি নামায স্ব স্ব ওয়াক্তে আদায় করা তার জন্য কষ্টকর না হয় তাহলে একত্রিত না করাই উত্তম।

এ আলোচনার আলোকে আপনি সফরকালীন সময়ে নামাযদ্বয় একত্রে আদায় করতে পারবেন। যখন আপনি অভীষ্ট স্থানে পৌঁছে একমাস থাকার নিয়ত করবেন তখন প্রত্যেক নামায ওয়াক্তমত আদায় করবেন।

তিন:

জেনে রাখুন, জামাতের সাথে নামায আদায় করা অন্যদের মত মুসাফিরের ওপরও ওয়াজিব। ইতিপূর্বে 21498 নং প্রশ্নোত্তরে সে মাসয়ালাটি আলোচিত হয়েছে। অতএব, জামাতের সাথে নামায আদায়ে সচেষ্ট হোন।  

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব