Islam QA ওয়েবসাইটের জন্য দান করুন

আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্‌ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বলতে কী বুঝায়?

14-03-2020

প্রশ্ন 121550

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বলতে কী বুঝায়?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ একটি নতুন মতবাদ। এটি একটি ভ্রান্ত আন্দোলন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে- রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে আলাদা করা, দুনিয়া ও দুনিয়ার মজা নিয়ে মেতে থাকা। আখেরাতকে ভুলে গিয়ে, অথবা আখেরাতকে উপেক্ষা করে পার্থিব জীবনকে মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা। পরকালের আমলের প্রতি বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করা ও গুরুত্ব না দেয়া। ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ব্যক্তির ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লামের এ হাদিসটি হুবহু মিলে যায়- “দিনার ও দিরহামের পূজারি ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক কারুকাজের পোশাক ও মখমলের বিলাসী। যদি তাকে কিছু দেওয়া হয় সন্তুষ্ট থাকে; আর না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়। সে মুখ থুবড়ে পড়ুক অথবা মাথা থুবড়ে পড়ুক। সে কাটা বিদ্ধ হলে কেউ তা তুলতে না পারুক।”[সহিহ বুখারি (২৮৮৭]

উল্লেখিত বিশেষণের মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও পড়বে যারা ইসলামের কোন একটি কথা বা কাজকে সমালোচনার পাত্র বানায়। যে ব্যক্তি ইসলামী শরিয়াকে বাদ দিয়ে মানবরচিত আইনে শাসন পরিচালনা করে সেই ধর্মনিরপেক্ষ। যে ব্যক্তি ইসলামে নিষিদ্ধ বিষয় যেমন- ব্যভিচার, মদ, গান-বাজনা, সুদী কারবার ইত্যাদিকে বৈধ বিবেচনা করে এবং বিশ্বাস করে যে, এগুলো থেকে বারণ করা মানুষের জন্য ক্ষতিকর ও ব্যক্তিগত স্বার্থে বাধা দেয়ার নামান্তর সে ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষ। যে ব্যক্তি শরয়ি দণ্ডবিধি যেমন- হত্যার শাস্তি, পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুর শাস্তি, ব্যভিচারী ও মদ্যপের উপর বেত্রাঘাতের শাস্তি, চোর ও ডাকাতের হাত কাটার শাস্তি কায়েমে বাধা দেয় অথবা অসম্মতি প্রকাশ করে, অথবা দাবী করে এসব দণ্ডবিধি যুগপোযুগী নয়, এগুলো নিষ্ঠুর ও জঘন্য তাহলে বুঝতে হবে সে ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষ।

তাদের ব্যাপারে ইসলামের হুকুম হচ্ছে: আল্লাহ তাআলা ইহুদীদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন: “তবে কি তোমরা কিতাবের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দুর্গতি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই।” [সূরা বাকারা, আয়াত: ৮৫]

সুতরাং যে ব্যক্তি যে বিধানগুলো তার মনঃপুত হয় যেমন পারিবারিক আইন, কিছু কিছু ইবাদত সেগুলো মানে আর যেগুলো তার মনঃপুত হয় না সেগুলো প্রত্যাখ্যান করে সেও এ আয়াতের বিধানের মধ্যে পড়বে। একই প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা আরো বলেন: “যে ব্যক্তি পার্থিবজীবন ও তার চাকচিক্যই কামনা করে, আমি দুনিয়াতেই তাদেরকে তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং এতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হবে না। এরাই হল সেসব লোক আখেরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া কিছু নেই।” [সূরা হুদ, আয়াত: ১৫-১৬]

ধর্মনিরপেক্ষাবাদীদের টার্গেট হলো- দুনিয়া কামাই করা, দুনিয়ার মজা উপভোগ করা। এমনকি ইসলামে সেটা হারাম হলেও, কোন ফরজ ইবাদত পালনে প্রতিবন্ধক হলেও। তাই তারা এ আয়াতের হুমকির অধীনে পড়বে এবং এই আয়াতের অধীনেও পড়বে “যে কেউ ইহকাল কামনা করে, আমি সেসব লোককে যা ইচ্ছা অতিসত্ত্বর দিয়ে দেই। অতঃপর তাদের জন্যে জাহান্নাম নির্ধারণ করি। ওরা তাতে নিন্দিত-বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে।”[সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ১৮] এ অর্থবোধক অন্যান্য আয়াত ও হাদিসগুলো তাদের ব্যাপারে প্রযোজ্য হবে।

আল্লাহই ভাল জানেন।

বিভিন্ন মতবাদ ও ধর্ম
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইটে দেখান