আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
প্রশ্ন: এখানে মুসলিম আলেমদের মধ্যে রমযানের রোযার শুরু ও ঈদুল ফিতর নির্ধারণ নিয়ে চরম মতভেদ। তাদের মধ্যে কেউ “চাঁদ দেখে রোযা রাখ ও চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গ” এ হাদিসের উপর নির্ভর করে চাঁদ দেখাকে ধর্তব্য মনে করেন। আর কেউ আছেন তারা জ্যোর্তিবিদদের মতামতের উপর নির্ভর করেন। তারা বলেন: বর্তমানে জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা মহাকাশ গবেষণার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে গেছেন; তাদের পক্ষে চন্দ্র মাসের শুরু জানা সম্ভব। এ মাসয়ালায় সঠিক রায় কোনটি?
আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
সঠিক অভিমত হচ্ছে, যে অভিমতের ভিত্তিতে আমল করা কর্তব্য তা হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গ” যা প্রমাণ করছে তার ভিত্তিতে আমল করা। অর্থাৎ চর্মচোখে চাঁদ দেখে রমযান মাস শুরু করা ও রমযান মাস শেষ করা। কেননা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে শরিয়ত বা অনুশাসন দিয়ে পাঠানো হয়েছে সেটা কিয়ামত পর্যন্ত শ্বাশত ও অব্যাহত থাকবে। ইসলামী শরিয়ত সর্বকাল ও সর্বযুগের জন্য উপযোগী। হোক না, জাগতিক জ্ঞান অগ্রসর হোক; কিংবা অনগ্রসর থাকুক। হোক না যন্ত্রপাতি পাওয়া যাক; কিংবা না পাওয়া যাক। হোক না কোন দেশে জ্যোর্তিবিদ্যায় পারদর্শী বিজ্ঞানী থাকুক কিংবা না থাকুক। পৃথিবীর সর্বকালের, সর্বস্থানের মানুষ চাঁদ দেখে আমল করার সাধ্য রাখে। কিন্তু, জ্যোর্তিবদ্যায় পারদর্শী ব্যক্তি কোথাও পাওয়া যেতে পারে; আবার কোথাও পাওয়া যাবে না। যন্ত্রপাতি হয়তো কোথাও পাওয়া যাবে; আবার হয়তো কোথাও পাওয়া যাবে না।
দুই:
জ্যোর্তিবিজ্ঞান কিংবা অন্যান্য বিজ্ঞানের যে বিকাশ ঘটেছে কিংবা ভবিষ্যতে ঘটবে নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা সে ব্যাপারে জ্ঞাত আছেন। তা সত্ত্বেও আল্লাহ্ তাআলা বলেন: সুতরাং তোমাদের মাঝে যেব্যক্তিএই মাসপাবেসে যেনরোজাপালন করে।”[২ সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৮৫] এ বিধানকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ভাষায় ব্যাখ্যা করেছেন যে, “তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ; চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গ”[আল-হাদিস]। এর মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমযানের রোযা শুরু করা ও রোযা ভঙ্গ করাকে চাঁদ দেখার সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। নক্ষত্রের হিসাবের সাথে মাস গণনাকে সম্পৃক্ত করেননি। অথচ আল্লাহ্র জ্ঞানে রয়েছে যে, জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা অচিরেই নক্ষত্রের হিসাব ও বিচরণের জ্ঞানে এগিয়ে যাবেন। তাই মুসলমানদের কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহ্র রাসূলের মুখনিসৃত যে বিধান আল্লাহ্ দিয়েছেন সেটাকে গ্রহণ করা। তা হচ্ছে- চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোযা রাখা ও রোযা ভাঙ্গা। এটি আলেমদের ইজমার পর্যায়ে। যে ব্যক্তি এ অভিমতের বিপক্ষে গিয়ে নক্ষত্র গণনার উপর নির্ভর করবে তার অভিমতটি অসমর্থিত; এর উপর নির্ভর করা যাবে না।
আল্লাহ্ই ভাল জানেন।