আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
আমি যদি আমার পিতার কবর যিয়ারত করতে চাই; আমি কী করব? কবরস্থান যিয়ারতের আদবগুলো কি কি? এমন কোন বিষয় আছে কি যেগুলো রক্ষা করা উচিত?
আলহামদু লিল্লাহ।.
উপদেশ গ্রহণ করা ও আখিরাতকে স্মরণ করার জন্য কবর যিয়ারত করা শরিয়তে অনুমোদিত। শর্ত হলো কবরস্থান যিয়ারতের সময় এমন কোন কথা বলা যাবে না যা রব্বকে রাগান্বিত করে। যেমন- আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে কবরস্থ ব্যক্তির কাছে দোয়া করা, তার কাছে বিপদ দূর করার জন্য সাহায্য চাওয়া কিংবা কবরস্থ ব্যক্তিকে সত্যায়ন করা এবং তার জন্য জান্নাত অবধারিত মর্মে নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য দুইটি:
ক. যিয়ারতকারী মৃত্যু ও মৃতদেরকে স্মরণ করে উপকৃত হওয়া এবং এটা জানা যে, সকলের চূড়ান্ত গন্তব্য জান্নাত কিংবা জাহান্নাম। এটাই যিয়ারতের প্রধান উদ্দেশ্য।
খ. মৃতব্যক্তির উপকার করা। সালাম দিয়ে, দোয়া ও ইস্তিগফার করে তার প্রতি ইহসান করা। এটি মুসলমানদের জন্য খাস। কবর যিয়ারতের দোয়াগুলোর মধ্যে রয়েছে:
السَّلامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيارِ من المؤمنينَ والمُسْلمينَ، إن شاءَ اللهُ بِكُمْ لَاحِقُوْنَ، أَسْأَلُ اللهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيةَ
(কবরবাসী মুমিন ও মুসলিমগণ! আপনাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইনশাআল্লাহ্, আপনাদের সাথে মিলিত হব। আমি আমাদের জন্য এবং আপনাদের জন্য নিরাপত্তার দোয়া করছি।)
দোয়ার সময় হাত উত্তোলন করা জায়েয। যেহেতু আয়েশা (রাঃ) এর হাদিসে এসেছে যে, তিনি বলেন: এক রাতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেরিয়ে গেলেন। আমি তাঁর পেছনে বারিরাকে পাঠালাম যাতে করে তিনি কোথায় যান তা দেখে। বারিরা বলল: তিনি বাক্বী আল-গারক্বাদ (মদিনাস্থ কবরস্থান)-এর দিকে গেলেন। তিনি বাক্বীর পাদদেশে গিয়ে দাঁড়ালেন। এরপর দুই হাত তুললেন। এরপর চলে এলেন। বারিরা আমার কাছে ফিরে এসে এটা জানাল। যখন ভোর হলো তখন আমি তাঁকে (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) জিজ্ঞেস করলাম: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! গত রাতে আপনি কোথায় গিয়েছেন? তিনি বললেন: আমাকে বাকীতে পাঠানো হয়েছে; যাতে করে আমি তাদের জন্য দোয়া করি।
তবে দোয়া করার সময় কবরগুলোকে সামনে রাখবে না। বরং কাবাকে সামনে রাখবে। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবরের দিকে ফিরে নামায পড়তে নিষেধ করেছেন। আর দোয়া হচ্ছে- নামাযের মগজ; যা সুপরিজ্ঞাত। সুতরাং নামাযের যা হুকুম দোয়ারও তা হুকুম। এবং যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া বলেছেন: “দোয়াই হলো ইবাদত”। এরপর তিনি তেলাওয়াত করেন: وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ (তোমাদের প্রভু বলেন: তোমরা আমার কাছে দোয়া কর; আমি তোমাদের দোয়ায় সাড়া দেব।)[সূরা গাফের, আয়াত: ৬০]
এছাড়া মুসলমানদের কবরগুলোর মাঝে জুতা নিয়ে হাঁটবে না। উকবা বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু্ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “কোন মুসলিমের কবরের উপর হাঁটার চেয়ে আগুনের অঙ্গারের উপর কিংবা তরবারীর উপর হাঁটা কিংবা পা দিয়ে জুতা সেলাই করা আমার কাছে অধিক প্রিয়। বাজারের মাঝখানে মল ত্যাগ করা, আর কবরের মাঝখানে মল ত্যাগ করা আমার কাছে উভয়টির মাঝে কোন পার্থক্য নেই।”[সুনানে ইবনে মাজাহ (১৫৬৭)]
আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি তিনি যেন আমাদের মৃত ব্যক্তিদেরকে এবং মুসলমানদের মৃতব্যক্তিদেরকে ক্ষমা করে দেন।