আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
গর্ভবতী নারীর জন্য রোযা রাখা উত্তম; নাকি না-রাখা?
আলহামদু লিল্লাহ।.
অন্য নারীর মত গর্ভবতী নারীও রোযা রাখার ভারপ্রাপ্ত। তবে যদি গর্ভবতী নারী নিজের জন্য কিংবা নিজের গর্ভস্থিত সন্তানের ক্ষতির আশংকা করেন তাহলে তার জন্য রোযা না-রাখা জায়েয।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) আল্লাহ্ তাআলার বাণী, “আর যাদের জন্য সিয়াম কষ্টসাধ্য তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদিয়া দেয়া তথা একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করা।”[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৪]-এর ব্যাপারে বলেন: এটি আয়াতটি বয়োবৃদ্ধ নর ও নারীর জন্য অবকাশ। তারা রোযা রাখতে পারলেও রোযা রাখার পরিবর্তে প্রতিদিন একজন মিসকীনকে খাদ্য দিবেন এবং গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী নারী যদি তাদের সন্তানের ক্ষতির আশংকা করেন তাহলে রোযা না-রেখে খাদ্য দান করবেন।[সুনানে আবু দাউদ (২৩১৭), আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ গ্রন্থে (৪/১৮ ও ২৫) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
জেনে রাখা বাঞ্চনীয় যে, গর্ভবতী নারীর জন্য রোযা না-রাখা জায়েয, ওয়াজিব ও হারাম:
যদি রোযা রাখতে তার কষ্ট হয়; কিন্তু কোন ক্ষতি না হয়; তাহলে রোযা না-রাখা জায়েয।
যদি রোযা রাখলে তার নিজের কিংবা তার গর্ভস্থিত সন্তানের ক্ষতি হয় তাহলে রোযা না-রাখা ওয়াজিব।
আর যদি রোযা রাখলে তার কোন কষ্ট না হয় তাহলে রোযা না-রাখা হারাম।
শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) বলেন:
গর্ভবতী নারীর দুইটি অবস্থার কোন একটি অবস্থা হবে:
১। গর্ভবতী নারী কর্মঠ ও শক্তিশালী হওয়া। (রোযা রাখার দ্বারা) তার কোন কষ্ট না হওয়া এবং তার গর্ভস্থিত সন্তানের উপর কোন প্রভাব না পড়া। এ নারীর উপর রোযা রাখা ফরয। কেননা রোযা বর্জন করার ক্ষেত্রে তার কোন ওজর নেই।
২। গর্ভবতী নারী রোযা রাখতে সক্ষম না হওয়া। গর্ভের কাঠিন্যের কারণে কিংবা শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে কিংবা অন্য কোন কারণে। এক্ষেত্রে তিনি রোযা রাখবেন না। বিশেষতঃ যদি তার গর্ভস্থিত সন্তানের ক্ষতি হয় সেক্ষেত্রে রোযা না রাখা তার উপর ফরযও হতে পারে।
[ফাতাওয়াস শাইখ ইবনে উছাইমীন (১/৪৮৭)]
শাইখ বিন বায (রহঃ) বলেন:
গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী নারীর হুকুম রোগীর হুকুমের মত। যদি রোযা রাখা তাদের জন্য কষ্টকর হয় তাহলে তাদের জন্য রোযা না-রাখার বিধান রয়েছে। তারা যখন সক্ষমতা অর্জন করবেন তখন রোগীর মত কাযা পালন করবেন। কোন কোন আলেমের অভিমত হলো: তারা প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাওয়ালে সেটাই যথেষ্ট। কিন্তু এটি দুর্বল ও অনগ্রগণ্য অভিমত। সঠিক অভিমত হলো: মুসাফির ও রোগীর মত তাদের উপরও কাযা পালন করা আবশ্যক। যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্যদিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৪]
এর সপক্ষে প্রমাণ করে আনাস বিন মালিক আল-কা’বী (রাঃ) এর হাদিস যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা মুসাফিরের উপর থেকে রোযা ও অর্ধেক নামায মওকুফ করেছেন এবং গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী নারীর উপর থেকে রোযা মওকুফ করেছেন।”[পাঁচটি গ্রন্থ কর্তৃক সংকলিত]
তুহফাতুল ইখওয়ান বি আজওয়িবাহ মুহিম্মাহ তাতাআল্লাকু বি আরকানিল ইসলাম (পৃষ্ঠা-১৭১)
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।