আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করার সময় কিছু কিছু লোক যে ভুলগুলো করে থাকেন?
আলহামদু লিল্লাহ।.
মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করার ক্ষেত্রে যেসব ভুল সংঘটিত হয়ে থাকে সেগুলো নিম্নরূপ:
এক:
কিছু কিছু লোক মাথার কিয়দাংশ খুর দিয়ে ভালভাবে মুণ্ডন করে; বাকীটুকু রেখে দেয়। আমি নিজ চোখে এটি দেখেছি। আমি এক লোককে সাফা-মারওয়ার মাঝে সায়ী করতে দেখেছি; সে তার মাথার অর্ধেক মুণ্ডন করেছে; বাকী অর্ধেকের চুল রেখে দিয়েছে। আমি তাকে ধরে বললাম: কেন আপনি এভাবে করেছেন? তিনি বললেন: আমি এভাবে করেছি যেহেতু আমি দুইটি উমরা করতে চাই। তাই্ প্রথম উমরার জন্য অর্ধেক মুণ্ডন করেছি। আর দ্বিতীয় উমরার জন্য বাকী অর্ধেক রেখে দিয়েছি। এটি অজ্ঞতা ও গোমরাহি; কোন আলেম এমন কোন মত ব্যক্ত করেননি।
দুই:
কিছু কিছু লোক উমরা থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথার এক পাশের গুটি কয়েকটি চুল ছোট করেন। এটি আয়াতে কারীমার বাহ্যিক অর্থের বিপরীত। আল্লাহ তাআলা বলেন: “তোমাদের মাথা মুণ্ডন করে এবং চুল ছেঁটে”।[সূরা আল-ফাত্হ, আয়াত: ২৭] অতএব, চুল ছোট করার প্রভাবটা মাথার উপর স্পষ্টভাবে দেখা যেতে হবে। সবাই জানে যে, এক, দুই বা তিনটি চুল কাটলে সেটা কোন প্রভাব ফেলে না এবং উমরাকারীর মাথায় ফুটে উঠে না যে, সে চুল ছোট করেছে। তাই এটি আয়াতে কারীমার বাহ্যিক বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
এ দুইটি ভুলের প্রতিকার হচ্ছে- যদি মুণ্ডন করতে চায় তাহলে গোটা মাথার চুল মুণ্ডন করবে। আর যদি চুল ছোট করতে চায় তাহলে সম্পূর্ণ মাথার চুল ছোট করবে; এক, দুইটি চুল ছোট করবে না।
তিন:
কিছু কিছু লোক আছে তারা সায়ী শেষ করার পর মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করার জন্য কাউকে না পেয়ে নিজ গৃহে চলে যায়। সে হালাল হয়ে গেছে মনে করে স্বাভাবিক পোশাক পরিধান করে। পরবর্তীতে মাথা মুণ্ডন করে কিংবা চুল ছোট করে। এটি মহা ভুল। কারণ কোন ব্যক্তি মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করা ছাড়া উমরা থেকে হালাল হবে না। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী; বিদায় হজ্জকালে তিনি তাঁর সাহাবীদের মধ্যে যারা সাথে করে হাদির পশু আনেনি তাদেরকে নির্দেশ দেন হজ্জের ইহরামকে উমরাতে পরিবর্তন করার, তখন তিনি তাদেরকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন: “এরপর মাথার চুল ছোট করবে অতঃপর হালাল হবে”।[সহিহ বুখারী (১৬৯১) ও সহিহ মুসলিম (১২২৯)] এ হাদিসটি প্রমাণ করে যে, চুল ছোট করা ছাড়া হালাল হওয়া যাবে না।
অতএব, কেউ যদি সায়ী করার পর মাথা মুণ্ডন করার জন্য কিংবা চুল ছোট করার জন্য কাউকে না পায় তাহলে সে ব্যক্তি ইহরামের উপর থাকবে; যতক্ষণ না সে মাথা মুণ্ডন করে কিংবা চুল ছোট করতে পারে। এর আগে হালাল হওয়া জায়েয নেই। যদি ধরে নেয়া হয় যে, কোন এক ব্যক্তি অজ্ঞতাবশতঃ মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করার আগে এই মনে করে হালাল হয়ে গেছে যে, এটি জায়েয তাহলে তার অজ্ঞতার কারণে কোন অসুবিধা হবে না। কিন্তু, জানার সাথে সাথে তাকে স্বাভাবিক কাপড়-চোপড় খুলে ইহরামের কাপড় পরতে হবে। কেননা, সে হালাল হয়নি এ কথা জানার পর আর গড়িমসি করা জায়েয হবে না। অতঃপর সে মাথা মুণ্ডন করা কিংবা চুল ছোট করার পর হালাল হবে।