আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
পর সমাচার: জনৈক নারী ইয়েমেন থেকে উমরার নিয়তে এসেছেন। মীকাতে পৌঁছার আগেই তার হায়েযের রক্ত দেখা দেয়। তখন তিনি জেদ্দাতে চলে যান এবং সেখানে গিয়ে এক সপ্তাহ থাকেন। এখন তিনি উমরা করতে চান। এমতাবস্থায় তিনি কি জেদ্দা থেকে উমরা করবেন; নাকি ইয়ালামলাম মীকাতে গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম করবেন?
আলহামদু লিল্লাহ।.
জেনে রাখা উচিত যে, ইহরাম করার জন্য পবিত্রতা শর্ত নয়। তাই হায়েযগ্রস্ত নারী উমরা বা হজ্জের ইহরাম করতে পারেন। একজন হাজীসাহেব যা যা করেন তিনিও তা তা করবেন; কেবল বায়তুল্লাহ্কে তাওয়াফ করা ছাড়া। যেহেতু আয়িশা (রাঃ) এর হাদিসে এসেছে যে, তিনি বলেন: “আসমা বিনতে উমাইস (রাঃ) আল-শাজারা নামক স্থানে মুহাম্মদ বিন আবু বকর (রাঃ) এর জন্ম দেয়ার মাধ্যমে নিফাসগ্রস্ত হয়েছেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর (রাঃ) কে নির্দেশ দেন যাতে করে তাকে নির্দেশ দেয়: গোসল করার ও ইহরাম বাঁধার।”[সহিহ মুসলিম (১২০৯)] হায়েযগ্রস্ত ও নিফাসগ্রস্ত উভয়ের হুকুম এক।
তাছাড়া আয়িশা (রাঃ) এর যখন হায়েয শুরু হয়েছিল তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে নির্দেশ দেন একজন হাজী যা যা করে তা তা করার; কেবল বায়তুল্লাহ্কে তাওয়াফ করা ছাড়া।[সহিহ বুখারী (১৫১৬)]
উল্লেখিত নারী যদি হায়েয শুরু হওয়ায় উমরার নিয়ত পরিবর্তন করে ফেলেন এবং এমতাবস্থায় মীকাত অতিক্রম করেন যে, তিনি উমরার কাজ শুরুর নিয়ত করছেন না। যখন তিনি জেদ্দাতে এলেন তখন উমরা করার ইচ্ছা জাগল; তাহলে এতে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। তিনি জেদ্দায় তার অবস্থানস্থল থেকে ইহরাম করবেন। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি এর ভেতরে আছেন তিনি যেখান থেকে নিয়ত করেছেন সেখান থেকে ইহরাম করবেন”।[সহিহ বুখারী (১৫২৪) ও সহিহ মুসলিম (১১৮১)] অর্থাৎ যে ব্যক্তি মীকাতগুলোর ভেতরে অবস্থান করেন তিনি তার অবস্থানস্থল থেকে ইহরাম করবেন।
আর যদি মীকাত অতিক্রমের মূহূর্তে এ নারীর উমরা করার নিয়ত থাকে, কিন্তু তিনি সেখান থেকে ইহরাম না করেন; তাহলে তার উপর আবশ্যক হলো মীকাতে ফিরে সেখান থেকে ইহরাম করা। যদি তিনি সেটি না করেন এবং জেদ্দা থেকে ইমরাম করেন তাহলে তার উপর পশু জবাই করা আবশ্যক। যে পশুটি মক্কাতে জবাই করা হবে এবং এর গোশত হারাম এলাকার গরীব ও মিসকীনদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে।
ইবনে কুদামা (রহঃ) বলেন: মোটকথা হলো: যে ব্যক্তির হজ্জ বা উমরার ইচ্ছা থাকা অবস্থায় তিনি ইহরাম ছাড়া মীকাত অতিক্রম করেন তার উপর আবশ্যক মীকাতে ফিরে গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বাঁধা; যদি সেটা সম্ভব হয়। চাই তিনি জেনেশুনে মীকাত অতিক্রম করে থাকেন কিংবা না-জেনে মীকাত অতিক্রম করে থাকেন। এটি যে, হারাম তা তিনি জেনে থাকুন কিংবা না-জেনে থাকুন। যদি তিনি মীকাতে ফেরত গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বাঁধেন তাহলে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। এ ব্যাপারে আমরা কোন মতভেদ জানি না। এটি জাবের বিন যায়েদ, হাসান, সাঈদ বিন যুবাইর, ছাওরী, শাফেয়ি ও অন্যান্যদের অভিমত। কেননা সেই ব্যক্তিকে যে মীকাত থেকে ইহরাম করার আদেশ দেয়া হয়েছে তিনি সেখান থেকেই ইহরাম করেছেন। তাই তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না; যেমনিভাবে কোন কিছু বর্তাবে না যদি তিনি মীকাত অতিক্রম না করেন। আর যদি মীকাতের ভেতর থেকে ইহরাম করেন তাহলে দম (পশু জবাই) দেয়া তার উপর আবশ্যক হবে।[আল-মুগনী ৩/১১৫) সমাপ্ত]
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।