বৃহস্পতিবার 20 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 21 নভেম্বর 2024
বাংলা

জনৈক ব্যক্তি এক দোকান থেকে কিছু পোশাক কিনেছে; পরবর্তীতে জেনেছে যে, সেখানে চুরিকৃত জিনিস বিক্রি করা হয়

প্রশ্ন

আমি আমার এক বন্ধুর মালিকানাধীন দোকান থেকে কিছু পোশাক কিনেছি। কেনার পর আমি উদঘাটন করেছি যে, সে চুরিকৃত জিনিসপত্র বিক্রি করে। আমি এখন জেনেছি যে, এই দোকান থেকে কিছু খরিদ করা আমার জন্য হালাল হবে না। কিন্তু জানার আগে আমি যেই পোশাকগুলো খরিদ করেছি সেগুলোর কি হবে? সেগুলো পরা কি হালাল হবে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

যদি প্রমাণিত হয় যে, এই দোকানটি চুরিকৃত জিনিসপত্র বিক্রি করে তাহলে এই দোকান থেকে ক্রয় করা জায়েয হবে না। কেননা চুরিকৃত মাল চোরের মালিকানাধীন নয়। তাই চুরিকৃত মালে তার লেনদেন সঠিক নয়।

ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: “হারাজে (পুরাতন জিনিসের মার্কেটে) কখনও কখনও চুরিকৃত জিনিসপত্র আসে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় বিক্রেতার মধ্যে আতঙ্ক ফুটে উঠা থেকে কিংবা ভেতরে কি কি জিনিস আছে সেগুলো সে না-জানা থেকে কিংবা যন্ত্রটির প্রকার ও চালানোর পদ্ধতি না-জানা থেকে কিংবা যে অল্পমূল্যে যন্ত্রটি বিক্রি করা হয়েছে সেটা থেকে কিংবা কোথায় থেকে ক্রয় করেছে সেটা থেকে। এ ধরণের জিনিস ক্রয় করার হুকুম কী?

জবাবে তারা বলেন:

যদি কেউ নিশ্চিত হয় যে, বিক্রির জন্য পেশকৃত পণ্যটি চুরিকৃত কিংবা আত্মসাৎকৃত কিংবা যে ব্যক্তি বিক্রির জন্য এটি পেশ করেছে সে এর আইনানুগ মালিক নয় বা বিক্রির জন্য নিযুক্ত প্রতিনিধিও নয়; তাহলে এমন পণ্য ক্রয় করা হারাম। যেহেতু এমন ক্রয়ের মধ্যে পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা রয়েছে এবং প্রকৃত মালিকের হাত থেকে পণ্যটি বঞ্চিত করা রয়েছে। এবং যেহেতু এর মধ্যে মানুষের ওপর জুলুম করা, অন্যায়ের পক্ষে সায় দেয়া এবং অন্যায়কারীর সাথে পাপে অংশগ্রহণ করা রয়েছে। অথচ আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যকে সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে একে অন্যকে সহায়তা করো না।[সূরা আল-মায়িদা, আয়াত: ২]

পূর্বোক্ত আলোচনার আলোকে যে ব্যক্তি জানতে পারেন যে, এটি চুরিকৃত বা আত্মসাৎকৃত পণ্য তার উচিত যে ব্যক্তি এটি চুরি করেছে তাকে নম্রতা, কোমলতা ও প্রজ্ঞা দিয়ে নসিহত করা; যাতে করে সে চুরিকর্ম থেকে ফিরে আসে। যদি ফিরে না আসে এবং এই অপরাধে অব্যাহতভাবে লিপ্ত থাকে তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা। যাতে করে অপরাধী তার অপরাধের উপযুক্ত সাজা পায় এবং হকদারকে তার হক ফিরিয়ে দেয়া যায়। এটি সৎকর্ম ও আল্লাহ্‌ভীতিতে পরস্পরকে সহযোগিতা করার অর্ন্তভুক্ত। কেননা এতে জালিমকে তার জুলুম থেকে প্রতিহতকরণ এবং জালিম ও মজলুম উভয়ের জন্য সহযোগিতা রয়েছে।[সমাপ্ত]

[ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা (১৩/৮১)]

দুই:

যে ব্যক্তি জেনেশুনে চুরির পণ্য কিনেছে তার কর্তব্য সেই পণ্যটি ফেরত দিয়ে তার অর্থ ফেরত নেয়া। যেহেতু ক্রয়বিক্রয় সঠিক হয়নি।

আর যে ব্যক্তি কিনে ফেলেছে; এরপর তার সন্দেহ হয়েছে যে, সেটি চুরিকৃত; কিন্তু সে নিশ্চিত হয়নি; সেই জিনিস ফেরত দেয়া তার উপর আবশ্যকীয় নয়। যেহেতু মূল বিধান হলো বেচাকেনা শুদ্ধ হওয়া।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব