বৃহস্পতিবার 20 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 21 নভেম্বর 2024
বাংলা

বেশি সওয়াব পাওয়ার জন্য ইবাদতের কষ্টকর অবস্থাকে লক্ষ্য বানানো শরিয়তসম্মত নয়

প্রশ্ন

যে কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে বেশি সওয়াব পাওয়ার জন্য কষ্টকর অবস্থাকে বেছে নেয়া কি ব্যক্তির জন্য শরিয়তসম্মত? যেমন- গরম পানি থাকা সত্ত্বেও ঠাণ্ডা পানি দিয়ে অজু করা কিংবা নিকটে মসজিদ থাকা সত্ত্বেও দূরের মসজিদে যাওয়া। কারণ আমি ইমাম শাতেবির ‘আল-মুওয়াফাকাত’ কিতাবে পড়েছি যে, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কষ্টটাকে খুঁজে বেড়ায় সে সওয়াব পাবে না?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

মুকাল্লাফ (শরয়ি ভারপ্রাপ্ত) ব্যক্তি যদি কষ্টকর অবস্থাকে তার লক্ষ্য বানায় এতে করে তিনি কোন সওয়াব পাবেন না। বরং তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি কষ্ট হয় সেজন্য তিনি সওয়াব পাবেন। কেননা, কষ্টটা কষ্ট হিসেবে ঈপ্সিত নয়।

শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীন তাঁর রচিত ‘কাওয়ায়েদ’ বিষয়ক পংক্তিগুলো ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন: এটি যখন সিদ্ধান্ত হল যে, শরিয়ত কষ্টকে কষ্ট হিসেবে লক্ষ্যস্থল বানায়নি। তাই কোন আমল যদি কষ্ট ছাড়া পালন করা যায় সেক্ষেত্রে আমাদের উচিত কষ্টকে নির্বাচন না করা। যদি কষ্টকে টার্গেট করা হয় সেটা শরিয়তসম্মত হবে না। এর উদাহরণ হচ্ছে- কেউ একজন বলল যে আমি পায়ে হেঁটে হজ্জ আদায় করব; যাতে আমার হজ্জ করতে কষ্ট হয় এবং সওয়াব বেশি হয়। তাকে বলা হবে: কষ্টকে লক্ষ্য বানানো শরিয়তসম্মত নয়। কেননা শরিয়তপ্রণেতা কষ্টকে লক্ষ্যস্থল করেননি। তাই আপনি আপনার এ কর্মের মাধ্যমে শরিয়তপ্রণেতার উদ্দেশ্যের বিপরীত করছেন।

যদি কেউ বলে যে, হাদিসে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কষ্ট অনুপাতে আপনি সওয়াব পাবেন” তাকে বলা হবে: এ হাদিসে যে কষ্টের কথা এসেছে সেটা মুকাল্লাফের স্ব-প্রণোদিত কষ্ট নয়। বরং হাদিসের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সেই কষ্ট যেটা ইবাদত পালনে ঘটে থাকে; মুকাল্লাফের স্বেচ্ছায় উদ্দেশ্যকৃত নয়।[সমাপ্ত]

ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল:

কেউ অপবিত্রতা থেকে গোসল করার সময় কোন ধরণের পানি ব্যবহার করা মুস্তাহাব? ঠাণ্ডা পানি নাকি গরম পানি?

জবাবে তারা বলেন: সমস্ত প্রশংসা এক আল্লাহ্‌র জন্য। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর রাসূলের উপর, রাসূলের পরিবার-পরিজন ও সাহাবীবর্গের উপর...। পর সমাচার:

মুসলিম তার কল্যাণের দিক বিবেচনা করে ঠাণ্ডা কিংবা গরম পানি ব্যবহার করবে। এ বিষয়টি প্রশস্ত। আল্লাহ্‌র দ্বীন সহজ। যেমনটি আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন: “আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তিনি তোমাদের জন্য কঠিন করতে চান না”

আল্লাহ্‌ই উত্তম তাওফিকদাতা। আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার-পরিজন, তাঁর সাহাবীবর্গের উপর আল্লাহ্‌র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।[সমাপ্ত]

শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায, শাইখ আব্দুর রাজ্জাক আফিফি, শাইখ আব্দুল্লাহ্‌ গাদইয়ান, শাইখ আব্দুল্লাহ্‌ বিন কুয়ুদ।

[স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (৫/৩২৮)]

আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব