বৃহস্পতিবার 20 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 21 নভেম্বর 2024
বাংলা

ওয়াকফ সম্পদ ও জাতীয় সম্পদের উপর কোন যাকাত নেই; এমনকি সেটাকে বিনিয়োগে খাটানো হলেও

প্রশ্ন

ওয়াকফ সম্পত্তি দিয়ে বিনিয়োগ করা হলে তাতে কি যাকাত ওয়াজিব হবে? যেমন— রাষ্ট্র যে প্রজেক্টগুলো চালু করে থাকে এবং যে গুলোর মুনাফা রাষ্ট্রীয় ফান্ডে জমা হয়।

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোন যাকাত নেই। যেহেতু এ সম্পত্তি কারো ব্যক্তি মালিকানাধীন নয়; চাই সে সম্পত্তি বিনিয়োগে লাগানো হোক; কিংবা না লাগানো হোক। যদি ওয়াকফকৃত সম্পত্তি বিনিয়োগে লাগানো হয় তাহলে এর আয় ওয়াকফকারী যে খাতগুলো নির্ধারণ করে গেছেন সে খাতগুলোতে বণ্টন করা হবে; যেমন— গরীব-মিসকীন, বয়োবৃদ্ধ মানুষ, তালিবুল ইলম প্রমুখ। যে ব্যক্তি ওয়াকফ খাত থেকে কোন সম্পদ পেল সেটা যদি নেসাব পরিমাণ হয় কিংবা অন্য সম্পদের সাথে মিলে নেসাব পরিমাণ হয় এবং এর এক বছর পূর্ণ হয় তাহলে তাকে এ সম্পদের যাকাত দিতে হবে। যেহেতু এটি ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পদ এবং যাকাত ওয়াজিব হওয়ার শর্তাবলী এতে পূর্ণ হয়েছে।

স্থায়ী কমিটির আলেমগণকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল:

"কোন এক গোত্র একটি তহবিল গঠন করেছে। এ তহবিলকে তারা এ গোত্রের উপর যে সব রক্তমূল্য ধার্য হয় সেগুলো পরিশোধের জন্য খাস করে রেখেছে। এ অর্থ দিয়ে তারা ব্যবসাতে বিনিয়োগ করেছে। এতে যা লাভ হয় সেটাও রক্তমূল্য পরিশোধ করার জন্য। এ অর্থের উপরে কি যাকাত আসবে; নাকি আসবে না? যদি ব্যবসা করা না হয় তাহলে কি যাকাত আসবে; নাকি আসবে না? গোত্রের লোকেরা কি এ তহবিলে তাদের স্বর্ণ-রৌপ্যের যাকাত দিতে পারবেন?

জবাবে তাঁরা বলেন: যা উল্লেখ করা হয়েছে যদি বাস্তবতা সেটাই হয় তাহলে উল্লেখিত সম্পদের উপর যাকাত আসবে না। যেহেতু এ অর্থ ওয়াকফকৃত সম্পত্তির মত; চাই সেটা অলস অর্থ হোক কিংবা ব্যবসাতে বিনিয়োগকৃত অর্থ হোক। এ তহবিলে যাকাত দেওয়া জায়েয হবে না। কেননা এ তহবিল গরীবদের জন্য খাস নয়। কিংবা যাকাত বণ্টনের অন্য কোন খাতের জন্যেও খাস নয়।"[সমাপ্ত] [ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা (৯/২৯১)]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) গ্রাম্য সমিতির ব্যাপারে বলেন, যে সমিতির সদস্যরা মাসিক একটা চাঁদা দেয় এবং উক্ত চাঁদার অর্থ এক্সিডেন্টের ক্ষতিপূরণ, রক্তমূল্য পরিশোধ এবং বিয়ে করার জন্য কারো ঋণের প্রয়োজন হলে তাকে ঋণ দেওয়ার জন্য জমা করা হয়: "এ তহবিলের অর্থের উপর যাকাত নেই। কেননা এটি সদস্যদের মালিকানাধীন নয়। বরং এ অর্থের নির্দিষ্ট কোন মালিক নেই। আর যে অর্থের নির্দিষ্ট কোন মালিক নেই সে অর্থের উপর যাকাত নেই।"[মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন (১৮/১৮৪)]

তিনি আরও বলেন: "রাষ্ট্রীয় সম্পদ বায়তুল মালে (রাষ্ট্রীয় কোষাগারে) জমা হয়। এর কোন নির্দিষ্ট মালিক নেই। তাই এ সম্পদের উপর যাকাত নেই।"[শারহুল কাফী থেকে সমাপ্ত]

সারকথা: রাষ্ট্রীয় সম্পদ বা ওয়াকফকৃত সম্পদের উপর যাকাত নেই। যেহেতু এসব সম্পদের নির্দিষ্ট কোন মালিক নেই; চাই এসব সম্পদ বিনিয়োগে খাটানো হোক কিংবা না খাটানো হোক। 

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব