বৃহস্পতিবার 20 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 21 নভেম্বর 2024
বাংলা

কেউ যদি রেকর্ডকৃত রুকিয়া শুনে এটা কি ঝাড়ফুঁক চাওয়ার অর্ন্তভুক্ত হবে?

প্রশ্ন

মোবাইল থেকে রুকিয়া শু নলে সে ব্যক্তি কি তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে যারা অন্যের কাছে ঝাড়ফুঁক চায় কিংবা যে ব্যক্তি কেবল রুকিয়াকারী (ঝাড়ফুঁককারী) ব্যক্তির কাছে যায় (সেও কি অন্তর্ভুক্ত হবে)। যেহেতু হাদিসে এসেছে "আমার উম্মতের মধ্যে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হচ্ছে যারা কারো নিকট ঝাড়ফুঁক চায় না, যারা কুলক্ষণে বিশ্বাস করে না, যারা গরম ছ্যাক দিয়ে চিকিৎসা নেয় না; বরং আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে।"

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

ইমাম মুসলিম ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্‌সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "আমার উম্মতের মধ্যে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হচ্ছে যারা কারো নিকট ঝাড়ফুঁক চায় না, যারা কুলক্ষণে বিশ্বাস করে না, যারা গরম ছ্যাক দিয়ে চিকিৎসা নেয় না; বরং আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে।"

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে সহিহ মুসলিমের (২২০) নং হাদিসে এসেছে: "ঝাড়ফুঁক করে না"। আলেমগণ এ ভাষ্যের ব্যাপারে হুকুম দিয়েছেন যে, এটি বর্ণনাকারীর ভুল। সঠিক হচ্ছে "ঝাড়ফুঁক চায় না"।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন:

তিনি বলেননি যে, "তারা ঝাড়ফুঁক করে না" যদিও সহিহ মুসলিমের কোন এক বর্ণনাতে এভাবেও উদ্ধৃত আছে; তবে সেটি ভুল। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই ঝাড়ফুঁক করেছেন এবং তিনি অন্যকেও ঝাড়ফুঁক করেছেন; কিন্তু তিনি কারো কাছ থেকে ঝাড়ফুঁক চাননি। কারণ ঝাড়ফুঁকপ্রার্থী: অন্যের কাছে দোয়াপ্রার্থী; পক্ষান্তরে ঝাড়ফুঁককারী অন্যের জন্য দোয়াকারী।"[ইকতিযাউস সিরাতিল মুস্তাকীম (পৃষ্ঠা-৪৪৮) থেকে সমাপ্ত]

তিনি আরও বলেন:

"ঝাড়ফুঁককারী ও ঝাড়ফুঁকপ্রার্থীর মধ্যে পার্থক্য হল: ঝাড়ফুঁকপ্রার্থী: প্রার্থী, যাচনাকারী, তার অন্তর গায়রুল্লাহ্‌মুখী। আর ঝাড়ফুঁককারী: অনুগ্রহকারী, অন্যের উপকারকারী।[সমাপ্ত][আল-মুস্তাদরাক আলা মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া (১/১৮)]

সুতরাং এই সত্তর হাজার লোকের বৈশিষ্ট্য হল: তারা কারো কাছে ঝাড়ফুঁক তলব করে না। কেননা لَا يَسْتَرْقُونَ এর অর্থ হচ্ছে— তারা অন্যদের কাছে রুকিয়া (ঝাড়ফুঁক) করা তলব করে না। পক্ষান্তরে, কেউ যদি নিজে নিজেকে ঝাড়ফুঁক করে কিংবা অন্য কাউকে ঝাড়ফুঁক করে: এতে অপছন্দনীয় কিছু নেই।

দুই:

ক্যাসেট, মোবাইল কিংবা অন্য কোন যন্ত্রের মাধ্যমে রুকিয়া শুনলে আমাদের মনোনীত অভিমত হচ্ছে— এটি ঝাড়ফুঁক চাওয়ার অন্তর্ভুক্ত হবে না।

এ পদ্ধতিতে রুকিয়া শুনাটা ইনশা আল্লাহ্‌উপকারী। এর মাধ্যমে অনেক মানুষ উপকার পেয়েছে। যদিও বেশি ভাল হচ্ছে ব্যক্তি নিজে কুরআন পড়া কিংবা অন্য কেউ তাকে পড়ে শুনানো।

শাইখ বিন বায (রহঃ) ফতোয়া দিয়েছেন যে, রেডিও থেকে সূরা বাক্বারা পড়া হলে এটি বাড়ী থেকে শয়তানকে তাড়াবে।

[মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ বিন বায (২৪/৪১৩)]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ। 

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব