আলহামদু লিল্লাহ।.
আলহামদুলিল্লাহ।
কোরবানি করা এমন একটি ইবাদত যে ইবাদতের প্রতি শরিয়ত নর-নারী, বিবাহিত-অবিবাহিত নির্বিশেষে সকলকে উদ্বুদ্ধ করেছে। কোরবানি সংক্রান্ত দলিলগুলোর ব্যাপকতা সেটাই প্রমাণ করছে। সে দলিলগুলোতে কাউকে খাস করা কিংবা কারো জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়নি।
সুতরাং কোন নারীর যদি আর্থিক সামর্থ্য থাকে তার জন্য নিজের অর্থ দিয়ে নিজের পক্ষ থেকে ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোরবানি করা সুন্নত। বিশেষতঃ পরিবারের কর্তা ব্যক্তি যদি ইসলামের এ নিদর্শনটি পালনে অসম্মত হয়।
ইবনে হাযম (রহঃ) ‘আল-মুহাল্লা’ গ্রন্থে (৬/৩৭) বলেন:
“কোরবানির বিধান মুকীমের জন্যে যেমন মুসাফিরের জন্যেও তেমন; কোন পার্থক্য নেই। নারীর জন্যেও তেমন। যেহেতু আল্লাহ্ বলেছেন: “তোমরা ভাল কাজ কর”।[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ৭৭] কোরবানি করা ভাল কাজ। আমরা যাদের কথা উল্লেখ করলাম তারা প্রত্যেকে ভাল কাজের মুখাপেক্ষী ও সেদিকে আহুত। এবং যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোরবানি সংক্রান্ত যে বাণীগুলো আমরা উল্লেখ করেছি সেগুলোতে তিনি শহরবাসী থেকে গ্রামবাসীকে খাস করেননি; মুকীম থেকে মুসাফিরকে খাস করেননি; নারী থেকে পুরুষকে খাস করেননি। এ কারণে কাউকে খাস করা বাতিল ও নাজায়েয।”[সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত]
‘আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা’ গ্রন্থে (৫/৮১) এসেছে:
“কোরবানি ওয়াজিব হওয়া কিংবা সুন্নত হওয়ার জন্য (ব্যক্তি) পুরুষ হওয়া শর্ত নয়। কোরবানি পুরুষদের উপর যেমন ওয়াজিব হয় তেমনি নারীদের উপরেও ওয়াজিব হয়। কারণ ওয়াজিব হওয়া কিংবা সুন্নত হওয়ার দলিল সকলকে অন্তর্ভুক্তকারী।”
অতএব, পরিবারের কর্তাব্যক্তি যদি ইসলামের এ নিদর্শন পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করে সেক্ষেত্রে স্ত্রী নিজে কিংবা অন্য কোন ব্যক্তির সহায়তায় কোরবানির পশু কেনা ও জবাই করার মাধ্যমে কোরবানি করতে পারেন। এটা তার স্বামীর জ্ঞাতসারে হোক কিংবা অজ্ঞাতসারে হোক; তার স্বামীর অনুমতি নিয়ে হোক কিংবা অনুমতি ছাড়া হোক। কেননা কোরবানি করা সকলের জন্য সুন্নত। পরিবারের কর্তা যদি কোরবানি করতে অসম্মতি জানায়; তাহলে স্ত্রী সেটা পালন করার অধিকার রয়েছে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “হে লোক সকল! নিশ্চয় প্রত্যেক পরিবারের উপর প্রতি বছর কোরবানি রয়েছে...।”[মুসনাদে আহমাদ (১৭২১৬), সুনানে আবু দাউদ (২৭৮৮), আলবানি ‘সহিহু আবি দাউদ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ আখ্যায়িত করেছেন]
খতীব আল-শারবিনি (রহঃ) ‘আল-উদ্দা’ গ্রন্থকার থেকে তার উক্তি উদ্ধৃত করেন যে: “যদি পরিবারের সদস্য একাধিক হয় তাহলে সেটা সুন্নতে-কিফায়া (সমষ্টিগত সুন্নত)। পরিবারের একজন আদায় করলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। নচেৎ এটি সুন্নতে-আইন (ব্যক্তিগত সুন্নত)।[মুগনিল মুহতাজ (৬/১২৩)]
আল্লাহ্ই ভাল জানেন।