শুক্রবার 21 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 22 নভেম্বর 2024
বাংলা

কোন তরুণ কখন ইজতিহাদ করার ও ফতোয়া দেয়ার অধিকার অর্জন করে

2071

প্রকাশকাল : 23-04-2014

পঠিত : 9811

প্রশ্ন

প্রশ্ন: একজন তরুণের জন্য কখন ইজতিহাদ করা ও ফতোয়া দেয়া জায়েয? কারণ কিছু কিছু তরুণ দ্বীনদার হওয়ার পর প্রায়শ শরিয়তের দলিল-প্রমাণ নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণে জড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন সাম্প্রতিক ইস্যু ও মাসয়ালার বিধান নির্ণয় করার চেষ্টা করে- যা হালাল বা হারাম ঘোষণা করার শামিল। তারা নিজেদের বিচার-বিশ্লেষণ অনুযায়ী কিছু কিছু সাম্প্রতিক ইস্যুর ফিকহী বিধান বলারও চেষ্টা করে।

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

কোন বিষয়ে ইজতিহাদ করার কিছু শর্ত রয়েছে। যে কোন ব্যক্তির যে কোন বিষয়ে ফতোয়া দেয়া ও কথা বলার অধিকার নেই। কোন বিষয়ে ফতোয়া দিতে ও কথা বলতে হলে যথাযথ ইলম ও যোগ্যতা থাকতে হবে। দলিল জানার ক্ষমতা থাকতে হবে। দলিলের মধ্যে কোনটি নস (প্রত্যক্ষ), কোনটি যাহের (প্রকাশ্য), কোনটি সহিহ (বিশুদ্ধ), কোনটি জয়িফ (দুর্বল), কোনটি নাসেখ (রহিতকারী), কোনটি মানসুখ (রহিত), কোনটি মানতুক (শব্দ-ভিত্তিক), কোনটি মাফহুম (ভাব-ভিত্তিক), কোনটি খাস (বিশেষ), কোনটি আম (সাধারণ), কোনটি মুতলাক (শর্তহীন), কোনটি মুকাইয়্যাদ (শর্তযুক্ত), কোনটি মুজমাল (অ-বিস্তারিত), কোনটি মুবাইয়্যান (বিস্তারিত) তা জানতে হবে। সাথে সাথে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এছাড়া ফিকাহর প্রকারভেদ, গবেষণাযোগ্য বিষয়গুলো, পূর্ববর্তী আলেম ও ফকীহদের মতামত জানা থাকতে হবে এবং দলিল-প্রমাণ মুখস্থ থাকতে হবে অথবা বুঝার ক্ষমতা থাকতে হবে। কোন সন্দেহ নেই যথাযথ যোগ্যতা ছাড়া ফতোয়া দিতে নেমে পড়া বড় ধরনের গুনাহ এবং ইলম ছাড়া মতপ্রকাশের নামান্তর। আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন: “আর তোমাদের জিহ্বা দ্বারা বানানো মিথ্যার উপর নির্ভর করে বলো না যে- এটা হালাল এবং এটা হারাম, আল্লাহর উপর মিথ্যা রটানোর জন্য। নিশ্চয় যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রটায়, তারা সফল হবে না।”[সূরা আন্‌-নাহল, আয়াত: ১১৬] হাদিসে এসেছে- “যে ব্যক্তিকে যথাযথ দলিল ছাড়া কোন ফতোয়া দেয়া হয়েছে তার পাপ ফতোয়াদানকারীর (মুফতি) উপর বর্তাবে।” [সহিহ; মুসনাদে আহমাদ (২/৩২১)] তালিবে ইলমের কর্তব্য ফতোয়া দানের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া না করা। কোন বিষয়ে কথা বলার আগে এর উৎস, দলিল এবং তার পূর্বে এ অভিমত আর কে ব্যক্ত করেছেন ইত্যাদি জেনে তারপর কথা বলা। যদি তার সে যোগ্যতা না থাকে তাহলে তার উচিত এ দায়িত্ব উপযুক্ত ব্যক্তির জন্য ছেড়ে দেয়া। সে যে বিষয়গুলো জানে সেগুলোর মধ্যে তাকে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত এবং সে যা অর্জন করেছে সেটার উপর তার আমল করা উচিত এবং ইলম অর্জন চালিয়ে যাওয়া উচিত। যাতে সে ইজতিহাদ করার যোগ্যতায় পৌঁছতে পারে। আল্লাহই সঠিক পথে পরিচালনাকারী।

সূত্র: শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ