আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “আল্লাহ্ লানত করেছেন আল্লাহ্র সৃষ্টিকে পরিবর্তনকারী সে সব নারীদেরকে যারা উল্কি অঙ্কনের কাজ করে, যাদেরকে উল্কি করানো হয়, সৌন্দর্য চর্চা হিসেবে যাদের চোখের ভ্রু সরু করা হয়, যাদের দাঁতকে সরু করানো হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকে লানত করেছেন আমি তাকে লানত করতে বাধা কোথায়? এটি তো আল্লাহ্র কিতাবেই রয়েছে। “রাসূল তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা গ্রহণ কর”... “বিরত থাক” পর্যন্ত [সূরা হাশর, আয়াত: ৭]।[সহিহ বুখারী (৫৯৩১)]
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: “ঐ নারীকে লানত করা হয়েছে যে পরচুলা লাগানোর কাজ করে, যাকে পরচুলা লাগানো হয়, যে ভ্রু সরু করানোর কাজ করে, যার ভ্রু সরু করানো হয়, যে উল্কি অঙ্কনের কাজ করে এবং যাকে উল্কি করানো হয়— কোন রোগ ছাড়া।”[সুনানে আবু দাউদ (৪১৭০), ইবনে হাজার ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে (১০/৩৭৬) হাদিসটিকে হাসান বলেছেন, আলবানী ‘সহিহ আবু দাউদ’ গ্রন্থে (৪১৭০) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
আলেমগণ এই হাদিসগুলো দিয়ে দলিল পেশ করেছেন যে, ভুরু উপড়ানো নিষিদ্ধ।
‘আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা’ নামক ফিকহী বিশ্বকোষে (১৪/৮১) এসেছে:
“ফিকাহবিদগণ একমত হয়েছেন যে, দুই চোখের ভুরু উপড়ানো এটি চেহারার লোম উপড়ানোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়বে।”[সমাপ্ত]
দুই:
ভুরুর সীমানা:
ইবনে মানযুর (রহঃ) বলেন:
“الحاجبان হচ্ছে— অক্ষিদ্বয়ের উপরস্থ গোশত ও চুল সমেত হাড্ডিদ্বয়। বহুবচনে حواجب।
কারো কারো মতে, হাড্ডির উপর গজিয়ে ওঠা চুল। এই চুলকে এই নামে নামকরণ করা হয়েছে যেহেতু এটি চোখে সূর্যের রস্মি পড়তে বাধা দেয় (حاجب মানে বাধাদানকারী)।”[লিসানুল আরব (১/২৯৮-২৯৯)]
আরবী ভাষায় ও মানুষের প্রচলনে এটাকে حاجب বা ভুরু বলা হয়।
পূর্বোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হয় যে, আপনি যে লোমের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছেন সেটি ভুরু-এর অধিভুক্ত। কারণ সেটি ভুরুর মূল চুল থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও তদুপরি সেটি ভুরুর অধিভুক্ত। কেননা সেটি ভুরুর হাড্ডির এলাকায় গজিয়েছে। তাই এটি ভুরুর হাড্ডির বিধানই গ্রহণ করবে। নিদেনপক্ষে এর হুকুম হলো: যে বিষয়ে সংশয় অতি তীব্র সতর্কতাস্বরূপ সেটি ত্যাগ করা। বিশেষতঃ জমহুর আলেমের মাযহাব হলো: ভুরু ছাড়া চেহারার অন্য কোন চুল উপড়ানো নিষিদ্ধ نمص (চুল উপড়ানো) এর মধ্যে পড়বে।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।