আলহামদু লিল্লাহ।.
এই দুনিয়ার জীবনে এমন কেউ নেই যে তার নিজের ব্যাপারে, তার পরিবারের ব্যাপারে, তার প্রিয়জনের ব্যাপারে কিংবা তার সম্পদের ব্যাপারে মুসিবত থেকে নিরাপদ।
মুমিনের উপর ওয়াজিব হচ্ছে এমন কোন মুসিবতে আক্রান্ত হলে ধৈর্য ধারণ করা। আর যদি সন্তুষ্টির স্তরে উন্নীত হতে পারে তাহলে সেটি আরও অধিকতর পরিপূর্ণ, উত্তম ও অধিক সওয়াবের। ইতিপূর্বে ধৈর্য ও সন্তুষ্টি এ দুটোর মধ্যে পার্থক্য 219462 নং প্রশ্নোত্তরে তুলে ধরা হয়েছে।
আপনি কোন কোন সময় যা অনুভব করেন এটি ধৈর্যের পরিপন্থী নয়। যেহেতু এটি কেবলমাত্র অভ্যন্তরীণ অনুভূতি; এটি শরিয়ত পরিপন্থী কথা বা কাজ হিসেবে প্রকাশ পায়নি; উদাহরণ বিলাপ করা, কাপড়চোপড় ছিড়ে ফেলা ইত্যাদি।
মানুষ যখন তার একান্ত আপনজনকে হারায় তখন প্রচণ্ড দুঃখের এ অনুভূতি মানুষের এখতিয়ারের বাইরে এসে যায়; যেমনটি আপনার অবস্থা।
তবে একজন মুসলিমের করণীয় হচ্ছে এই দুঃখকে বাড়তে না দেয়া, এই দুঃখের সাথে অগ্রসর না হওয়া; যাতে করে এই দুঃখ তার জীবনের উপর ও ইবাদত-বন্দেগীর উপর প্রভাব ফেলতে না পারে। আপনি বেশি সময় একাকী থাকবেন না। এসব দুঃখ নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করবেন না। উপকারী কোন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। আপনি দুঃখ যাতনার মধ্যে বন্দি হয়ে পড়বেন না; যে দুঃখগুলোকে শয়তান চাঙ্গা করে তোলে। যাতে করে মুসলিম ব্যক্তি ভারাক্রান্ত ও বেদনাগ্রস্ত হয়ে বসে থাকে। কারণ কোন মুসলিমের মনে দুঃখ ঢুকাতে পারলে শয়তান খুশি হয়। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “(কাফেরদের) এই গোপন পরামর্শ তো শয়তানের পক্ষ থেকে; মুমিনদেরকে দুঃখ দেওয়ার জন্য; তবে আল্লাহ্র অনুমতি ছাড়া সে তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। অতএব মুমিনরা যেন আল্লাহ্র ওপর ভরসা করে।”[সূরা মুজাদালা, আয়াত: ১০]
আপনি সন্তুষ্টির স্তরে পৌঁছতে পারবেন এভাবে যে, আপনি যদি সবসময় চিন্তা করেন যে, এটি আল্লাহ্ লিখে রেখেছেন। এটি ঘটতই ঘটত। দুঃখ করলেও এই মুসিবত দূর হবে না। বরং আরও বাড়বে।
যদি সবসময় আল্লাহ্র সন্তুষ্টির সওয়াবের চিন্তা মাথায় রাখেন। “যে ব্যক্তি সন্তুষ্ট হয় তার জন্য রয়েছে সন্তুষ্টি”। আল্লাহ্ তার বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হওয়ার চেয়ে মহান আর কিছু নেই।
আপনি আপনার বাবার জন্য যে দোয়াটি করেন সেটি একটি ভালো দোয়া। আমরা আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আপনার দোয়া কবুল করেন এবং আপনাকে যে মুসিবতে আক্রান্ত করেছেন এর উত্তম বদলা দেন।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।