আলহামদু লিল্লাহ।.
নির্দিষ্ট এ কোম্পানিগুলোর অবস্থা সম্পর্কে আমাদের জানা নেই যে, তাদের আমানতদারিতা কেমন এবং লেনদেনে শরয়ি সীমারেখা তারা কতটুকু মেনে চলে।
কিন্তু সাধারণভাবে মূলধন দিয়ে মুদারাবা লেনদেন করা এবং যে সমস্ত কোম্পানি ব্যবসা করে তাদের কাছে বিনিয়োগ করা জায়েয; যদি নিম্নোক্ত শর্তাবলি পূর্ণ হয়:
১- কোম্পানি তার সম্পদগুলো বৈধ ব্যবসায় বিনিয়োগ করা। যেমন: স্বর্ণ বিক্রি করার ক্ষেত্রে; যদি নগদ অর্থে অথবা রৌপ্যের বিনিময়ে স্বর্ণ বিক্রি করা হয় তাহলে একই মজলিসে আদান-প্রদান করার শর্ত মেনে চলা হয়। আর যদি স্বর্ণ দিয়ে স্বর্ণ বিক্রি করা হয় তাহলে পরিমাণে সমান হওয়া এবং একই মজলিসে আদান-প্রদান করার শর্ত মেনে চলা হয়। আরো জানতে দেখুন (34325) নং প্রশ্নের উত্তর।
২- মূলধনের কোন গ্যারান্টি না দেয়া। ব্যবসায় ক্ষতি হলে কোম্পানি মূলধন ফিরিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে না; কেবল যদি ঐ কোম্পানির পক্ষ থেকে সীমালঙ্ঘন বা অবহেলা হয়ে থাকে তাহলে মূলধন ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। কারণ যদি মূলধনের গ্যারান্টি দেয়া হয়, তাহলে সর্বাবস্থায় এর স্বরূপ হলো: ঋণের চুক্তি। আর এর থেকে যা মুনাফা আসবে তা সুদ বলে গণ্য হবে।
৩- লভ্যাংশ জ্ঞাত হওয়া ও উভয় পক্ষের সম্মতিপূর্ণ হওয়া। তবে এটি নির্ধারণ করতে আনুপাতিক হারে লাভ থেকে; মূলধন থেকে নয়। যেমন: একজন অংশীদার এক-তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক অথবা ২০% লাভ পাবে। আর বাকি লাভ অন্য অংশীদার পাবে।
লাভ যদি হয় নির্দিষ্ট অংক কিংবা মূলধনের নির্দিষ্ট হার কিংবা অজানা ও অনির্দিষ্ট, তাহলে চুক্তি সঠিক হবে না। ফকীহরা বলেছেন যে এ অবস্থাগুলোতে অংশীদারী ব্যবসা বাতিল বলে গণ্য হবে।
ইবনুল মুনযির বলেন: আমরা যতজন আলেমের কাছ থেকে ইলম সংরক্ষণ করেছি তারা সকলে ইজমা করেছেন যে, অংশীদারী (মুদারাবায় তথা একজনের শ্রম ও অন্যজনের অর্থ) ব্যবসায় একজন অথবা উভয়জন যদি নিজের জন্য নির্দিষ্ট দিরহাম শর্ত করে তাহলে এ চুক্তি বাতিল। আমরা যাদের কাছ থেকে এ ইলম মুখস্ত করেছি তাঁরা হলেন: মালেক, শাফেয়ী, আবু ছাওর এবং রায়পন্থী আলেমগণ।”[আল-মুগনী (৫/২৩) থেকে সমাপ্ত]
মাত্বালিবু উলিন্নুহা গ্রন্থে (৩/৫১৭) এসেছে: “যদি সে বলে: আপনি এটি মুদারাবা হিসেবে গ্রহণ করুন, আপনার জন্য লাভের অংশ থাকবে অথবা লাভে অংশীদারিত্ব থাকবে অথবা লাভের কিছু থাকবে অথবা লাভে ভাগ থাকবে; তাহলে এটি শুদ্ধ হবে না। কারণ এখানে লাভ অজ্ঞাত। আর মুদারাবা জ্ঞাত পরিমাণের শর্ত ছাড়া সঠিক হয় না।”[সমাপ্ত]
উল্লেখিত শর্তাবলি পূর্ণ হলে বিনিয়োগ করা জায়েয হবে।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।