শুক্রবার 7 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 8 নভেম্বর 2024
বাংলা

আযান ছাড়া অন্য স্থানে ওসিলার দোয়া করা

প্রশ্ন

আযান ব্যতীত অন্য স্থানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য ওসিলার দোয়া করার বিধান কী? আমি সিজদাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য ওসিলার দোয়া করতাম। এমনকি সাফা-মারওয়াতে দোয়া করার সময়ও করতাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত দোয়াগুলোর বাক্যগুলোর বিন্যাসে আগপিছ করা কি জায়েয?    

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

দোয়ার মূল বিধান হচ্ছে— বৈধতা; যতক্ষণ পর্যন্ত না দোয়াতে নিষিদ্ধ কিছু থাকে; যেমন কোন গুনাহের দোয়া করা।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য ওসিলা (জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান) চেয়ে দোয়া করা; যেমন এভাবে বলা:

للَّهُمَّ آتِ مُحَمَّدًا الوَسِيلَةَ وَالفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ

(হে আল্লাহ্‌! মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দান করো বেহেশতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান ও সুমহান মর্যাদা। আর তাঁকে অধিষ্ঠিত কর শ্রেষ্ঠতম প্রশংসিত স্থানে, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম কর না।) এই ধরণের দোয়া ভাল। এর অর্থও সুন্দর। এটি হাদিসে সাব্যস্ত। তাই দোয়ার স্থানগুলোতে এ দোয়া করতে কোন আপত্তি নাই। এমনকি সেই স্থান যদি সুন্নাহতে উদ্ধৃত দোয়ার স্থান হয় সেক্ষেত্রেও। আমাদের কাছে এতে কোন আপত্তি প্রতীয়মান হচ্ছে না।

তবে যে সকল স্থানে পড়ার জন্য বিশেষ বিশেষ দোয়া সাব্যস্ত হয়েছে মুসলিমের উচিত সে সকল স্থানে সে দোয়াগুলো পড়ার চেষ্টা করা। এরপর শরিয়ত অনুমোদিত যা খুশি অন্য দোয়া করা। এ ধরণের দোয়ার মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য ওসিলা (বেহেশতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান) ও মাকামে মাহমুদ (প্রশংসিত স্থান) চেয়ে দোয়া করাও অন্তর্ভুক্ত। তবে তা সত্ত্বেও উচিত হল: আযানের পরের মত এ দোয়াটি সাধারণ দোয়ায় নিয়মিতভাবে না করা; যেমনিভাবে হাদিসে বিশেষ কোন স্থানে বিশেষ কোন দোয়া করা সাব্যস্ত হলে করা যায়।

দুই:

একজন মুসলিমের কর্তব্য হাদিসে দোয়াগুলো যেভাবে উদ্ধৃত হয়েছে দোয়াগুলোর শব্দ-বিন্যাস সেভাবে ঠিক রাখা। কেননা সেটাই হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্ণ অনুসরণ। আল্লাহ্‌তাআলা বলেন: "নিশ্চয় তোমাদের জন্য আল্লাহ্‌র রাসূলের মাঝে উত্তম আদর্শ রয়েছে; যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌কে ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহ্‌কে অধিক স্মরণ করে"।[সূরা আহযাব, আয়াত: ২১]

অন্যদিকে দোয়াকারী যদি আরবদের ভাষা সম্পর্কে সম্যক অবগত না হয়; তখন সে যদি দোয়ার শব্দগুলো এদিক সেদিক করে সেক্ষেত্রে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।

ফতোয়া ও গবেষণা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে এসেছে:

"দোয়ার অধ্যায় প্রশস্ত। তাই বান্দা তার প্রয়োজন চেয়ে তার প্রভুকে ডাকতে পারবে; এমনভাবে যাতে কোন গুনাহ নাই। পক্ষান্তরে, কুরআন-হাদিসে উদ্ধৃত দোয়াগুলোর ক্ষেত্রে মূল বিধান হল— যা বর্ণিত হয়েছে সেটার ভাষ্য ও সংখ্যাকে অতিক্রম না করা। মুসলিমের উচিত এটি রক্ষা করা ও পালন করা। তাই মুসলিম ব্যক্তি নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বাড়াবে না, ভাষ্যের মধ্যে বেশকম করবে না এবং বিকৃতি করবে না।"[আল্‌লাজনাদ দায়িমা লিল বুহুছিল ইলমিয়্যা ওয়াল ইফতা] আব্দুল্লাহ্‌বিন কুয়ুদ, আব্দুর রাজ্জাক আফিফি, আব্দুল আযিয বিন বায[ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা (২৪/২০৩-২০৪)]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ। 

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব