আলহামদু লিল্লাহ।.
সমস্তপ্রশংসা আল্লাহর জন্য।
রোযাদারেরইফতার করার ক্ষেত্রে বিধান হল- সূর্য অস্ত যেতে হবে এবং রাত শুরু হতে হবে।এর দলীল হচ্ছে- আল্লাহ তাআলার বাণী:
( وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ )
[2 البقرة : 187]
“আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত।” [২ আল-বাক্বারাহ : ১৮৭]
ইমাম তাবারী বলেছেন:আল্লাহর বাণী:
قوله : ( ثُمَّأَتِمُّواالصِّيَامَإِلَىاللَّيْلِ )
“অতঃপর তোমরা রোযাপূর্ণ কর রাত পর্যন্ত”এখানে আল্লাহ তাআলা রোযার সময়-সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।রোযার শেষ সময় নির্ধারণ করেছেন- রাতের আগমন।অন্যদিকে ইফতার, খাদ্য-পানীয়, স্ত্রী-মিলনবৈধ হওয়ার শেষ সময় ও রোযা শুরু করার সময় নির্ধারণ করেছেন- দিনের আগমন ও রাতের শেষভাগেরপ্রস্থান। এ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, রাতের বেলায় কোন রোযা নেই।অপরদিকে রোযার দিনগুলোতে দিনের বেলায় পানাহার বা স্ত্রী-মিলন নেই।” সমাপ্ত[তাফসীরেতাবারী (৩/৫৩২)]
রোযাদারের জন্যসুন্নতহলোঅবিলম্বেইফতারকরা। সাহ্ল ইবনেসাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেবর্ণিতরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন:
( لا يزال الناس بخير ما عجَّلوا الفطر ) رواه البخاري ( 1856 ) ومسلم ( 1098 )
‘‘মানুষততদিনপর্যন্তকল্যাণেথাকবেযতদিনতারাঅবিলম্বে ইফতারকরবে।’’[হাদিসটি বর্ণনাকরেছেনইমাম বুখারী (১৮৫৬) ওইমাম মুসলিম (১০৯৮)]
ইবনেআব্দুলবারররাহিমাহুল্লাহ বলেন:
“সুন্নত হলো-অবিলম্বেইফতার করা এবংবিলম্বেসেহরি খাওয়া। অবিলম্বে মানে- সূর্য অস্ত যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে অবিলম্বে ইফতার করা। সূর্য অস্ত গিয়েছে কি; যায়নি- এ ব্যাপারে সন্দিহানথেকে ইফতার করা জায়েযনয়। কারণ “নিশ্চিত জ্ঞানের ভিত্তিতে যে ফরজ আমল অনিবার্য হয়েছে, সে ফরজ আমল শেষও করতে হবে নিশ্চিত জ্ঞানের ভিত্তিতে।” সমাপ্ত[আত-তামহীদ (২১/৯৭, ৯৮)]
ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন:
“সূর্য অস্ত যাওয়া নিশ্চিত হয়েঅবিলম্বে ইফতারকরার ব্যাপারে এই হাদিসে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। হাদিসের মর্মার্থ হলো- এই উম্মতেরঅবস্থা ততদিন পর্যন্ত সুশৃঙ্খল থাকবে এবং তারা কল্যাণেথাকবে যতদিন তারা এই সুন্নতপালন করে যাবে।”সমাপ্ত [শরহু মুসলিম (৭/২০৮)]
মুয়াজ্জিনের প্রসঙ্গ: যদি লোকেরা ইফতার করার জন্য মুয়াজ্জিনের আযানের অপেক্ষায় থাকে তাহলে মুয়াজ্জিনের উচিত অবিলম্বে আযান দেয়া। কারণ মুয়াজ্জিন বিলম্বে আযান দিলে লোকেরাও বিলম্বে ইফতার করবে এবং এতে করে সুন্নত লঙ্ঘিত হবে। আর যদি মুয়াজ্জিন সামান্য কিছু মুখে দিয়ে (যেমন এক ঢোক পানি) আযান দেন যাতে আযানে বিলম্বে না হয় তাতে কোন দোষ নেই।
আর যদি মানুষ ইফতার করার জন্য মুয়াজ্জিনের আযানের অপেক্ষায় না থাকে যেমন কোন এক ব্যক্তি নিজের নামাযের জন্য আযান দিল (উদাহরণতঃ মরুভূমিতে একা হতে পারে) অথবা এমন একদল মানুষের জন্য আযান দিল যারা সবাই কাছাকাছি উপস্থিত আছে (উদাহরণতঃ মুসাফির কাফেলা) সে ক্ষেত্রে আযানের আগে ইফতার করে নিতে কোন আপত্তি নেই। কেননা আযান না দিলেও তার সঙ্গিরা সবাই তার সাথে ইফতার করে নিবে; কেউ তার আযানের অপেক্ষায় থাকবে না।
আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।