শুক্রবার 1 রবীউছ ছানী 1446 - 4 অক্টোবর 2024
বাংলা

যদি কোন নারী চল্লিশদিনের আগেই নিফাস থেকে পবিত্র হয়ে যান তাহলে তাকে গোসল করে নামায ও রোযা পালন করতে হবে

প্রশ্ন

আমার স্ত্রী প্রায় ১৫ দিন আগে শাবান মাসে সন্তান প্রসব করেছে। তার নিফাসের রক্তস্রাব যদি বন্ধ হয়ে যায় এবং এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত হয় তাহলে কি সে নামায, রোযা, উমরা, কুরআন তেলাওয়াত ও তারাবীর নামায ইত্যাদি শরয়ি দায়িত্বগুলো পালন করতে পারবে? নাকি তাকে ৪০ দিন অপেক্ষা করতে হবে; যেমনটি কেউ কেউ বলছেন?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

জমহুর আলেমের মতে, জমহুরের মধ্যে চার ইমামও রয়েছেন: নিফাসের সর্বনিম্ন সময়ের নির্দিষ্ট কোন মেয়াদ নেই। কোন নারী যখনই নিফাস থেকে পবিত্র হবে তখনই গোসল করা, নামায ও রোযা পালন করা তার উপর ওয়াজিব; এমনকি সেটা যদি সন্তান প্রসবের ৪০ দিন আগে হয় তবুও। “কেননা শরিয়তে নিফাসের সর্বনিম্ন মেয়াদ সম্পর্কে কোন কিছু উদ্ধৃত হয়নি। এ ব্যাপারে বাস্তবে যা পাওয়া যায় সেটাই ভিত্তি। বাস্তবে নিফাসের মেয়াদ কমও পাওয়া যায়, বেশিও পাওয়া যায়।”[এটি বলেছেন ইবনে কুদামা তার ‘আল-মুগনি (১/৪২৮)]

বরং কোন কোন আলেম এ অভিমতের ওপর আলেমদের ইজমা (মতৈক্য) বর্ণনা করেছেন। তিরমিযি (রহঃ) বলেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীবর্গ, তাবেয়ীগণ এবং তাঁদের পরবর্তী আলেমগণ এ মর্মে ইজমা করেছেন যে, নিফাসগ্রস্ত নারী চল্লিশদিন পর্যন্ত নামায পড়বেন না; তবে চল্লিশ দিনের আগেই যদি পবিত্রতা দেখেন তাহলে তিনি গোসল করে নামায পড়া শুরু করবেন।”[সমাপ্ত][দেখুন: আল-মাজমু (২/৫৪১)]

শাইখ বিন বায (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয় (১৫/১৯৫): যদি নিফাসগ্রস্ত নারী চল্লিশ দিনের আগেই পবিত্র হয়ে যায় তাহলে তার জন্য রোযা রাখা ও নামায আদায় করা কি জায়েয হবে?

জবাবে তিনি বলেন: হ্যাঁ; যদি তিনি পবিত্র হয়ে যান তবে তার জন্য রোযা রাখা, নামায পড়া, হজ্জ করা ও উমরা করা জায়েয হবে এবং তার স্বামীর জন্য তার সাথে সহবাস করাও বৈধ হবে। যদি কেউ ২০ দিনের দিন পবিত্র হয়ে যায় তাহলে তিনি গোসল করে নামায পড়বেন, রোযা রাখবেন এবং তার স্বামীর জন্য তিনি হালাল হবেন। উসমান বিন আবুল আস থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি এটাকে মাকরুহ মনে করতেন। তবে তার এ মাকরুহ মনে করার ব্যাখ্যা হবে তিনি এটাকে ‘মাকরুহে তানযিহি’ মনে করতেন এবং এটি এ সাহাবীর নিজস্ব ইজতিহাদ; যার পক্ষে কোন দলিল নেই।

সঠিক অভিমত হল: এতে কোন অসুবিধা নেই। যদি কেউ ৪০ দিনের আগেই পবিত্র হয় তাহলে তার এ পবিত্র সঠিক। চল্লিশ দিনের মধ্যে যদি পুনরায় স্রাব শুরু হয় তাহলে সঠিক মতানুযায়ী, চল্লিশ দিন পর্যন্ত সেটা নিফাস হিসেবে গণ্য হবে। তবে, ইতিপূর্বে পবিত্র অবস্থায় তার পালনকৃত রোযা, নামায ও হজ্জ সহিহ। যেহেতু এগুলো পবিত্র অবস্থায় আদায় করা হয়েছে। তাই এগুলো পুনরায় আদায় করার প্রয়োজন নেই।[সমাপ্ত]

স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে (৫/৪৫৮) এসেছে:

“যদি কোন নিফাসগ্রস্ত নারী চল্লিশদিন পূর্ণ হওয়ার আগেই পবিত্রতা দেখতে পান তাহলে তিনি গোসল করে নামায ও রোযা পালন শুরু করবেন এবং তার স্বামী তার সাথে সহবাস করতে পারবে।”[সমাপ্ত]

স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল (১০/১৫৫) এমন এক নারী সম্পর্কে যিনি রমযানের সাতদিন আগে সন্তান প্রসব করে পবিত্র হয়েছেন এবং রমযানের রোযা পালন করেছেন। জবাবে তাঁরা বলেন: যদি বাস্তবে এমনটি হয়ে থাকে তাহলে পবিত্র অবস্থায় তার রমযানের রোযা পালন সহিহ; তাকে রমযানের রোযার কাযা পালন করতে হবে না।[সমাপ্ত]

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব