শুক্রবার 21 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 22 নভেম্বর 2024
বাংলা

যে নারী দুইজন শিশুকে দুধ পান করান এবং রোযা রাখলে সন্তানদের স্বাস্থ্যহানির আশংকা করেন

প্রশ্ন

আমার জমজ বাচ্চা আছে। তাদের বয়স পাঁচ মাস। আমার বুকের দুধ কম হওয়ায় শুধু বুকের দুধে তাদের খাদ্য হয় না। পাশাপাশি তারা কৃত্রিম দুধও খায়। কিন্তু আমি আশংকা করছি, রোযা রাখলে আমার দুধ আরও কমে যাবে। এতে করে আমি তাদেরকে দুধ খাওয়াতে পারব না। ফলে এ অল্প বয়সেই তারা বুকের দুধ খাওয়া ছেড়ে দিবে। এমতাবস্থায়, আমার জন্যে রোযা ভাঙ্গা কি জায়েয হবে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

আলহামদুলিল্লাহ।

এক:

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাআলা মুসাফিরের উপর থেকে অর্ধেক নামায শিথিল করেছেন। এবং মুসাফির, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী নারীর উপর থেকে সাওম (রোযা) বা সিয়াম শিথিল করেছেন।”[সুনানে আবু দাউদ (২৪০৮), সুনানে তিরমিযি (৭১৫), সুনানে নাসাঈ (২২৭৫), সুনানে ইবনে মাজাহ (১৬৬৭), আলবানি ‘সহিহ আবু দাউদ’ গ্রন্থে ‘হাসান সহিহ’ বলেছেন]

যদিও বাহ্যতঃ এই হাদিসটিতে ‘গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী নারী’-র ক্ষেত্রে কোন শর্তারোপ করা হয়নি, কিন্তু হাদিসটির অর্থ শর্তযুক্ত। শর্তটি হচ্ছে- যদি তারা নিজেদের জীবন কিংবা সন্তানের জীবনের ব্যাপারে আশংকাবোধ করে।

সিন্দি কর্তৃক রচিত সুনানে ইবনে মাজাহ-এর হাশিয়াতে (১/৫১২) এসেছে: গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী নারী: অর্থাৎ তারা উভয়ে যদি গর্ভস্থিত সন্তান কিংবা দুগ্ধপোষ্য সন্তানের ব্যাপারে আশংকা করেন কিংবা তাদের নিজেদের জীবনের ব্যাপারে আশংকা করেন।[সমাপ্ত]

আল-জাস্‌সাস তাঁর ‘আহকামুল কুরআন’ গ্রন্থে (১/২৪৪) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: ‘নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাআলা মুসাফিরের উপর থেকে অর্ধেক নামায শিথিল করেছেন। এবং মুসাফির, গর্ভবতী নারী, স্তন্যদায়ী নারীর উপর থেকে সাওম (রোযা) বা সিয়াম শিথিল করেছেন’ উল্লেখ করার পর বলেন: “এটা জ্ঞাত যে, তাদের জন্য (অর্থাৎ গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী নারী) এ শিথিলায়ন তাদের জীবনের উপর আশংকা কিংবা তাদের সন্তানের জীবনের উপর আশংকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।”। তিনি অন্যত্র (১/২৫২) বলেন: “গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী নারীর ক্ষেত্রে; হয়তো রোযা তাদের নিজেদের স্বাস্থ্যহানি করবে কিংবা তাদের সন্তানের স্বাস্থ্যহানি করবে। যেটাই হোক না কেন তাদের উভয়ের জন্য রোযা না-থাকা উত্তম। রোযা রাখা তাদের জন্য নিষিদ্ধ। আর যদি তাদের স্বাস্থ্যহানি না করে কিংবা তাদের সন্তানের স্বাস্থ্যহানি না করে তাহলে তাদের উপর রোযা রাখা ফরয। রোযা না-রাখা নাজায়েয।”[সমাপ্ত]

আলেমগণ তাদের ভাষ্যগুলোতে এ শর্তটি উল্লেখ করেছেন। বরং এ শর্তের উপর আলেমগণের ঐক্যমত্য বর্ণিত হয়েছে; যেমনটি ইতিপূর্বে 66438 নং প্রশ্নোত্তরে আমরা বিস্তারিত বর্ণনা করেছি।  

এ আলোচনার প্রেক্ষিতে বলব:

যদি রোযা রাখার কারণে আপনি আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যহানির আশংকা করেন, যেমন- দুধ শুকিয়ে যাওয়া কিংবা দুধ এমন কমে যাওয়া যাতে তাদের ক্ষতি হবে সেক্ষেত্রে আপনি রোযা না-রাখতে কোন অসুবিধা নেই। অনুরূপভাবে, আপনি যদি নিজের ব্যাপারে আশংকাবোধ করেন যে, আপনি যদি রোযা রেখে দুধ খাওয়ান সেক্ষেত্রে আপনার এমন কষ্ট হবে যা এমন ক্ষেত্রে সম্ভাব্য কষ্টের অধিক কিংবা আপনার স্বাস্থ্যহানির আশংকা করেন তাহলেও আপনার রোযা না-রাখতে কোন অসুবিধা নেই।

আর যদি আপনার প্রবল ধারণা হয় যে, রোযা রাখার কারণে দুধে যে ঘাটতি হবে সেটা বাচ্চাদ্বয়ের প্রয়োজনীয় পরিমাণ দুধ পানের উপর কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না সেক্ষেত্রে রোযা না-রাখা বৈধ হবে না। বিশেষতঃ এ সামান্য ঘাটতি যদি কৃত্রিম দুধের মাধ্যমে পূরণ করা যায়।

ইমাম শাফেয়ি-র ‘আল-উম্ম’ কিতাবে (২/১১৩) এসেছে: “গর্ভবতী নারী যদি নিজ সন্তানের জীবনের উপর আশংকা করেন তাহলে রোযা থাকবেন না। অনুরূপ বিধান স্তন্যদায়ী নারীর ক্ষেত্রেও; যদি রোযা তার দুধের উপর ব্যাপক ক্ষতি করে। আর যদি ক্ষতিটা সীমিত হয় তাহলে রোযা ছাড়বেন না। রোযা সাধারণত রোগ বৃদ্ধি করে; কিন্তু এটা সীমিত বৃদ্ধি। রোযা দুধে ঘাটতি করে; কিন্তু সীমিত ঘাটতি। আর যদি রোগবৃদ্ধি ও দুধ-ঘাটতি ব্যাপকভাবে ঘটে থাকে তাহলে তারা উভয়ে রোযা রাখবেন না।”[সমাপ্ত]

দুই:

যদি কোন স্তন্যদায়ী নারী নিজ সন্তানের উপর আশংকা করে রোযা ভেঙ্গে থাকে তার উপর কী বর্তাবে এ নিয়ে আলেমগণ মতভেদ করেছেন:

‘আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা আল-কুওয়াইতিয়্যা’ গ্রন্থে (৩২/৬৯) এসেছে:

“যদি তারা উভয়ে তাদের সন্তানের উপর আশংকা করে রোযা না রাখেন সে ব্যাপারে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। শাফেয়ি মাযহাবের প্রকাশ্য বক্তব্য, হাম্বলি মাযহাব ও মুজাহিদের মতে, তাদের উভয়কে কাযা পালন করতে হবে এবং প্রত্যেক দিন একজন মিসকীন খাওয়াতে হবে। যেহেতু তারা উভয়ে আল্লাহ্‌র নিম্নোক্ত বাণীর সাধারণ হুকুমের অধীনে পড়ে: “আর যাদের জন্য সিয়াম কষ্টসাধ্য তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদিয়া দেয়া তথা একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করা।”।[সূরা বাকারা ২: ১৮৪] ইতিপূর্বে ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত এ আয়াতের তাফসির উল্লেখ করা হয়েছে।

ইবনে কুদামা বলেন: এ ধরণের তাফসির ইবনে উমর (রাঃ) থেকেও বর্ণিত হয়েছে। সাহাবীদের মাঝে তাঁদের দুইজনের সাথে ইখতিলাফকারী কেউ নেই। তাছাড়া যেহেতু শারীরিক অক্ষমতার কারণে এ রোযা না-রাখার বিষয়টি ঘটেছে। তাই বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তির হুকুমের ন্যায় কাফ্‌ফারা আদায় করা ফরয হবে।

হানাফি মাযহাবের আলেমগণ, আতা বিন আবি রাবাহ, হাসান, দাহ্‌হাক, নাখায়ি, সাঈদ বিন জুবাইর, যুহরি, রাবিআ, আওযায়ি, ছাওরি, আবু উবাইদ, আবু ছাওর এবং শাফেয়ি আলেমগণের অপর এক মতে: উভয়ের উপর ফিদিয়া ফরয হবে না; বরং তাদের ফিদিয়া দেয়া মুস্তাহাব হবে। দলিল হল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তাআলা মুসাফিরের উপর থেকে অর্ধেক নামায শিথিল করেছেন। এবং মুসাফির, গর্ভবতী নারী, স্তন্যদায়ী নারীর উপর থেকে সাওম (রোযা) বা সিয়াম শিথিল করেছেন।”

আর মালেকি মাযহাব ও লাইছ এর মতানুযায়ী (এটি শাফেয়ি মাযহাবেরও তৃতীয় একটি মত): গর্ভবতী নারী রোযা ভাঙ্গবেন; পরবর্তীতে কাযা পালন করবেন; তবে তাকে কোন ফিদিয়া দিতে হবে না। আর স্তন্যদায়ী নারীও রোযা ভাঙ্গবেন; পরবর্তীতে কাযা পালন করবেন এবং ফিদিয়া দিবেন। কেননা স্তন্যদায়ী নারী অন্য কারো মাধ্যমে তার সন্তানকে দুধ পান করাতে পারেন; যেটা গর্ভবতী নারী পারেন না। তাছাড়া গর্ভস্থিত সন্তান গর্ভবতী নারীর সাথে একীভূত। তাই গর্ভের সন্তানের জন্য আশংকা তার কোন একটি অঙ্গের জন্য আশংকার ন্যায়। তাই গর্ভবতী নারী তার নিজের মধ্যস্থিত একটি কারণের প্রেক্ষিতে রোযা ভেঙ্গেছেন; এ ক্ষেত্রে তিনি অসুস্থ ব্যক্তির মত। আর স্তন্যদায়ী নারী তার থেকে বিচ্ছিন্ন একটি কারণের প্রেক্ষিতে রোযা ভেঙ্গেছেন; এজন্য তার উপর ফিদিয়া ফরয হবে।

সলফে সালেহিনদের কেউ কেউ যেমন- ইবনে উমর (রাঃ), ইবনে আব্বাস (রাঃ), সাঈদ বিন জুবাইর (রাঃ) এর অভিমত হচ্ছে- তারা উভয়ে রোযা ভাঙ্গবেন এবং মিসকীন খাওয়াবেন। তাদেরকে কাযা রোযা পালন করতে হবে না।[সমাপ্ত]

অগ্রগণ্য অভিমত হচ্ছে- সঠিক জ্ঞান আল্লাহর কাছে- তাদেরকে শুধু কাযা রোযা পালন করতে হবে।

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়: যদি গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী নারী শক্তিশালী ও কর্মঠ হওয়া সত্ত্বেও কোন ওজর ছাড়া রোযা না রাখেন; যদিও রোযা রাখলে তাদের উপর শারীরিক কোন প্রভাব পড়বে না? জবাবে তিনি বলেন: কোন গর্ভবতী বা স্তন্যদায়ী নারীর জন্য ওজর ছাড়া রমযানের দিনের বেলা রোযা না-রাখা জায়েয হবে না। যদি তারা ওজরের কারণে রোযা না-রাখেন তাহলে কাযা পালন করা তাদের উপর ফরয। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলা বলেছেন: “আর কেউ অসুস্থ থাকলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে।”[সূরা বাকারা ২:১৮৫] এ দুই শ্রেণীর নারী অসুস্থ শ্রেণীর আওতায় পড়ে।

আর যদি তাদের ওজর হয় যে, তাদের সন্তানের উপর আশংকা; সেক্ষেত্রে কোন কোন আলেমের মতানুযায়ী তাদের উপর কাযা ফরয হওয়ার সাথে সাথে প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে দেশীয় খাদ্য যেমন- গম, চাল বা খেজুর ইত্যাদি খাদ্য দান করা ফরয হবে। আর কোন কোন আলেমের মতে, সর্বাবস্থায় তাদের উপর রোযার কাযা পালন ছাড়া আর কিছু ফরয নয়। কেননা খাবার খাওয়ানো ফরয হওয়ার ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহর দলিল নেই। মূল অবস্থা হচ্ছে: বান্দা দায়-দায়িত্ব মুক্ত থাকা; যতক্ষণ না দায়-দায়িত্বের পক্ষে কোন দলিল পাওয়া যায়। এটি ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মাযহাব এবং এটি শক্তিশালী অভিমত।”[ফাতাওয়াস সিয়াম, পৃষ্ঠা-১৬১]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) কে আরও জিজ্ঞেস করা হয় যে: যদি কোন গর্ভবতী নারী তার নিজ জীবনের বা সন্তানের জীবনের আশংকা করে রোযা না রাখেন সেক্ষেত্রে হুকুম কী?

জবাবে তিনি বলেন: এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে-

গর্ভবতী নারীর দুইটি অবস্থা হতে পারে:

১। গর্ভবতী নারী কর্মঠ ও শক্তিশালী হওয়া। (রোযা রাখার দ্বারা) তার কোন কষ্ট না হওয়া এবং তার গর্ভস্থিত সন্তানের উপর কোন প্রভাব না পড়া। এ নারীর উপর রোযা রাখা ফরয। কেননা রোযা বর্জন করার ক্ষেত্রে তার কোন ওজর নেই।

২। গর্ভবতী নারী রোযা রাখতে সক্ষম না হওয়া। গর্ভের কাঠিন্যের কারণে কিংবা শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে কিংবা অন্য কোন কারণে। এক্ষেত্রে তিনি রোযা রাখবেন না। বিশেষত: যদি তার গর্ভস্থিত সন্তানের ক্ষতি হয় সেক্ষেত্রে রোযা না রাখা তার উপর ফরযও হতে পারে। যদি তিনি রোযা না রাখেন সেক্ষেত্রে তার বিধান অন্যসব লোকের মত যারা কোন ওজরের কারণে রোযা রাখতে পারেন না। তিনি যখন ঐ ওজর থেকে মুক্ত হবেন তখন রোযার কাযা পালন করা তার উপর ফরয। অর্থাৎ প্রসব করার পর ও নিফাস থেকে পবিত্র হওয়ার পর কাযা পালন করা তার উপর ফরয। কিন্তু, কখনও কখনও এক ওজর শেষ হয়ে অন্য ওজর দেখা দেয়। যেমন- গর্ভধারণ এর ওজর শেষ হওয়ার পর দুগ্ধপান করানোর ওজর। হতে পারে স্তন্যদায়ী নারী পানাহারের মুখাপেক্ষী হবেন। বিশেষত: গ্রীষ্মের লম্বা দিনগুলোতে, তীব্র গরমের সময় স্তন্যদায়ী নারী তার সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর স্বার্থে রোযা না থাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় আমরা তাকে বলব: আপনি রোযা রাখবেন না। যখন আপনার ওজর শেষ হবে; তখন আপনার যতগুলো রোযা ভাঙ্গা পড়েছে সবগুলো রোযা কাযা করবেন।”।[ফাতাওয়াস সিয়াম, পৃষ্ঠা- ১৬২]

শাইখ বিন বায (রহঃ) বলেন:

পক্ষান্তরে, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী নারীর ব্যাপারে আনাস বিন মালিক আল-কা’নাবি কর্তৃক বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি তাদের উভয়কে রোযা না রাখার অবকাশ দিয়েছেন। তাদেরকে তিনি মুসাফিরের বিধানের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এতে করে জানা গেল যে, তারা উভয়ে মুসাফিরের মত রোযা না রেখে কাযা পালন করবেন। আলেমগণ উল্লেখ করেছেন যে, তাদের পক্ষে রোযা রাখা অসুস্থ ব্যক্তির মত কষ্টকর না হলে বা তাদের সন্তানের ক্ষতির আশংকা না থাকলে তাদের রোযা ভাঙ্গা জায়েয হবে না। আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।”

আরও জানতে দেখুন: 50005 নং প্রশ্নোত্তর।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব